মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের উত্তেজনাটা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। গুরুত্বের খাতিরেই এই নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বজনীন হয়ে ওঠে। এবারের নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম ছিল না।
প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের নিয়ে সেই শুরু থেকেই আলোচনা-সমালোচনা, জল্পনা-কল্পনা নিয়ে তাই মার্কিনদের পাশাপাশি মেতে ছিল সারা বিশ্ব। কে হচ্ছে আমেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট? এই প্রশ্ন ছিল সবার মুখে মুখে।
তবে সব জল্পনা-কল্পনা শেষ করে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকেই বেছে নিলেন মার্কিনিরা। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হলেন তিনি।
তবে ট্রাম্পের এই জয় অনেকটা অপ্রত্যাশিত বলেই দাবি করছেন অনেকেই। নির্বাচনের আগে নারীদের নিয়ে বিভিন্ন আপত্তিকর মন্তব্য, অভিবাসীদের নিয়ে বিতর্কিত আলোচনাসহ বিভিন্ন কারণেই জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের থেকে বেশ পিছিয়ে ছিলেন তিনি। এ ছাড়া তিনটি নির্বাচনী বিতর্কেও এগিয়ে ছিলেন হিলারি।
তবে সব জরিপকে ভুল প্রমাণ করেই হোয়াইট হাউসে যাচ্ছেন ট্রাম্প। ছিলেন আবাসন ব্যবসায়ী, হলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
একজন ব্যবসায়ী থেকে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হয়ে ওঠার গল্পটা বেশ দীর্ঘ।
১৯৪৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে জন্মগ্রহণ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছোটবেলা থেকে সব বিষয়ে অত্যুৎসাহী ছিলেন তিনি। ১৯৬৮ সালে পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হারটন স্কুল থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন ট্রাম্প।
পরে ১৯৭১ সালে দায়িত্ব নেন বাবার আবাসন ব্যবসার। একের পর এক গড়ে তোলেন আকাশচুম্বী ভবন। হয়ে ওঠেন যুক্তরাষ্ট্রের রিয়েল স্টেট মোগল। ২০১৬ সালে ফোর্বস পত্রিকা ট্রাম্পকে বিশ্বের ৩২৪তম ধনী ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করে।
তবে শুধু ব্যবসা-বাণিজ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না ট্রাম্পের মেধা। প্রায় এক দশক ধরে তিনি মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতার আয়োজক ছিলেন। বিভিন্ন ইংরেজি ছবি ও ধারাবাহিকেও করেছেন অভিনয়। এ ছাড়া অ্যাপ্রেন্টিস নামের একটি রিয়েলিটি শোর উপস্থাপকও ছিলেন তিনি।
২০১৫ সালের জুন মাসে নিজেকে নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন ট্রাম্প। এর পরই শুরু হয় তাঁর সমর্থকদের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। তবে প্রচারের মাঠে মোটেও সুবিধা করে উঠতে পারেননি তিনি। নারী অবমাননা, অভিবাসী পরিকল্পনা, মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলাসহ অসংখ্য অভিযোগে তাঁর জনপ্রিয়তায় ব্যাপক ধস নামে। বরাবরই তাঁর বিপক্ষে ছিল বিভিন্ন জরিপ।
কিন্তু সব শেষে আবাসন ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ট্রাম্পই শেষ পর্যন্ত গেলেন হোয়াইট হাউসে। প্রমাণ করলেন কারো সহযোগিতা ছাড়াই তিনি এগিয়ে যেতে পারেন।
৫৩৮টি ইলেক্টোরাল কলেজের মধ্যে ২৮৮টি গেছে ট্রাম্পের পক্ষে। প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি পেয়েছেন ২১৮টি।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।