রাসেল চৌধুরী
বর্তমান সময়ে আমরা কি সাংবাদিকতা করি? সোজাসাপ্টা জবাব, করিনা! যা করি তা গা বাঁচিয়ে পত্রিকা অফিসে হাজিরা দিই।কারেন্ট নিউজ করি। কে পানিতে পড়লো, কে গাড়ীতে মরলো বা কে কাকে মারলো। পানিতে ও গাড়ীতে পড়ার নিউজ গুলোঠিকঠাক মতো করলেও মারামারির নিউজ গুলো করার সময় দলমত, জাত গোষ্ঠী বিবেচনা করি!
এছাড়া বিভিন্ন সংগঠনের সভা, সেমিনার সেম্পুজিয়ামের খবর, কোন রেষ্টুরেন্ট কেমন আলোচপ–চনা– পিয়াজু বানালো, জিলাপি কেমন হলো বা হালিমের স্বাদ কেমন ইত্যাদি ইত্যাদি প্রচার করি! আর নেতা, পুলিশ আমলাদের গুণকীর্তন করি। এসবছাড়া কি রিপোর্ট করার মতো আর কোন নিউজ নেই? অবশ্যই আছে।
চারিদিকে ভূরি ভূরি নিউজ। লুটপাটের মহাউৎসব। ছিনতাইয়ের উৎস। দখল বাণিজ্য। মাদক বাণিজ্য। জুয়া বাণিজ্য। দাদনবাণিজ্য। কিশোর গ্যাং। ফেইক অভিযান আর ফেইক প্রেসনোটের ছড়াছড়ি।
আমরা বিভিন্ন বাহিনীর পাঠানো প্রেসনোট ছাপি কিন্তু এই খবরের পেছনের খবর ছাপতে পারি না!
কারণ আমাদের হাত–পা বাধা!!
হইতো অনেকে দ্বিমত করবেন, নিউজ করলে সমস্যা কি? সমস্যা অনেক? অতীত অভিজ্ঞতা তাই বলে। দেশের সার্বিকপরিস্থিতিও তাই বলে।
কেউ যদি বলেন সমস্যা নেই তাহলে কক্সবাজারে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সিনিয়র আমলা, জুনিয়রআমলা, চোরের সর্দার নেতাদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অনুসন্ধানী রিপোর্ট করবো, আপনারা কি(পাঠক) আমাদের(সাংবাদিক) পাশে দাঁড়াবেন? আমাদের নিরাপত্তা দেবেন? আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে লিখব, কোমরে রশি বেধে নিয়ে যাবে, আপনারা কি আটকাবেন?
মাথামোটা মেধাশূন্য নেতাদের হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি নিয়ে লিখব, পেঠুয়া বাহিনী এসে হামলা করবে, আপনারা কি রক্ষাকরবেন? দুর্নীতিবাজ আমলাদের চুরি ধরিয়ে দেব, পেছনে সুবিধাভোগীদের লেলিয়ে দেবেন, তখন কি পাশে এসে দাঁড়াবেন? দাঁড়াবেন না।
উল্টো তখন বলবেন, ছেলেটা বেশী বাড়াবাড়ি করে! পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে না! এসময়ে ঝুকি নেওয়ার দরকার কি? এবার বুঝুকমজা? পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে ভাল করেছে, অমুক ভাইয়ের সমর্থকরা মেরেছে, তাও ভাল করেছে।
এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে সাংবাদিকরা সাংবাদিকতা করবে কিভাবে? তাই আমরা এখন আর সাংবাদিকতা করি না, বসে বসেআঙ্গুল চুষি!
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।