চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি জেলা পরিষদ নির্বাচন। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা বজায় রাখতে বর্তমান সরকার স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে কার্যকর করতেই নির্বাচনের আয়োজন করছে। দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম জনপ্রতিনিধিদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং সদস্যগণ।
এবারের নির্বাচনে দেশের ৬১ জেলায় (পার্বত্য জেলা ব্যতীত) ১ জন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সাধারণ সদস্য এবং সংরক্ষিত নারী আসনে ৫ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন।
প্রত্যেক জেলাকে ১৫ টি ওয়ার্ডে ভাগ করে প্রত্যেক ওয়ার্ডের জন্য নির্বাচিত করা হবে ১ জন সদস্য। পাশাপাশি সংরক্ষিত নারী সদস্যের ক্ষেত্রে প্রত্যেক জেলাকে ৫টি ওয়ার্ডে ভাগ করে উল্লিখিত নিয়মে সদস্য নির্বাচিত করা হবে।
আইনানুযায়ী ২৮ ডিসেম্বরের জেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলার ৪টি পৌরসভা, ৮ টি উপজেলা এবং ৭১ টি ইউনিয়নের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এবারের নির্বাচনে জেলার ৮ উপজেলার ৯৮৬ জন নির্বাচিত প্রতিনিধি ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং উপজেলার সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের যোগ করলে এ সংখ্যা দাঁড়াবে এক হাজার জন। নির্বাচনের আগে জেলা পরিষদ আইনে সংশোধনী আনা হলেই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যানরা নির্বাচকম-লীর অন্তর্ভূক্ত হতে পারবেন।
এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জেলা পরিষদ আইন ২০০০ অনুযায়ী। জেলা পরিষদ আইন ২০০০ –এর ১৭ (১) ধারায় বলা হয়েছে , প্রতিটি জেলার অন্তর্ভূক্ত সিটি করপোরেশনের (যদি থাকে) মেয়র, কমিশনার, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, কমিশনার এবং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদেও নিয়ে নির্বাচকম-লী গঠিত হইবে।
১৭এর উপধারায় বলা হয়েছে উপধারা(১) এর অধীন নির্বাচকম-লীর সসদস্য নহেন এইরূপ কোন ব্যক্তি ভোটার তালিকাভূক্ত হইবার যোগ্য হইবেন না। সেক্ষেত্রে নির্বাচন পর্যন্ত বরখাস্থাদেশ বহাল থাকলে কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র সরওয়ার কামাল এবং উখিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান সরওয়ার জাহান চৌধুরী তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন না।
মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ সময় ৩০ নভেম্বর। এরপর ২ ও ৩ ডিসেম্বর এ দু’দিন মনোনয়নপত্র বাছাই কাজ চলবে। ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সুযোগ দেয়া হবে। বি.এন.পি জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে ইতোমধ্যেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।
ফলে দেশের অন্যান্য জেলার মতো কক্সবাজার জেলাতেও এবারের নির্বাচনে সংগঠনটির মনোনীত কোন ব্যক্তি অংশগ্রহণ করতে দেখা যাবে না। ফলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং নির্দলীয় প্রার্থীদের মধ্যেই হবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা।
ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে জেলার এক ডজনের অধিক নেতা কেন্দ্রে দৌঁড় ঝাপ শুরু করেছেন। যে কোন প্রকারে মনোনয়ন পেলেই নির্বাচিত হওয়া যাবে। এই আশাতে আপাতত দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তিকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন তাঁরা। চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও
জেলা আওয়ামী লীগের মনোনয়নের দাবিদারদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান প্রশাসক মোস্তাক আহমদ চৌধুরী ও তাঁর সহ-ধর্মীনি কানিজ ফাতেমা আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম চৌধুরী, নব-গঠিত জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে বাদ পড়া বিশিষ্ট পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. আনসারুল করিম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল হক মুকুল।
ইতোমধ্যে মনোনয়ন প্রাপ্তির আশায় উল্লিখিত রাজনৈতিক নেতারা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ বরাবর জীবন-বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন।
ইতিপূর্বে গণমাধ্যমে কক্সবাজার পৌরসভার একাধিকবার নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আবছারের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীতার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু গতকাল নিজের ফেস্বুক পেজে বিষয়টি স্পষ্ট করে প্রার্থী না হওয়ার বিষয়টি তিনি নিজেই পরিষ্কার করে দিয়েছেন।
অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফার নাম প্রার্থীর তালিকায় এলেও তিনি শুক্রবার পর্যন্ত কেন্দ্রের কাছে নিজের জীবন-বৃত্তান্ত জমা দেননি।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।