বিশেষ প্রতিবেদক: ১৪ দলের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, মানবতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে মিয়ানমার। নারী-শিশুসহ সব বয়সীদের নির্বিচারে খুন করে চালানো হচ্ছে গণহত্যা। জ্বালিয়ে দিচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। আধুনিক সভ্যতায় তা কখনো সমর্থন যোগ্য নয়। তাই মানবিক দিক বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছেন। শুধু আশ্রয় নয়, সীমাবদ্ধতার মধ্যেও চিকিৎসাসহ সব ধরণের পর্যাপ্ত সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে রোহিঙ্গাদের। এর ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রাখতে রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের আওতায় আনা হচ্ছে।
শনিবার কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণ শেষে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ১৪ দলের মুখপাত্র নাসিম।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, একটা ক্ষুদ্র জনবহুল ১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশ লাখ লাখ মানুষকে দীর্ঘদিন সহযোগিতা দিতে পারবে না। তাই মিয়ানমারের নাগরিক এসব রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরিয়ে নিতে হবে। তাদের উপর চলমান পাশবিকতা আজ বিশ্ববাসী জানে। এসব বিষয় জাতিসংঘের চলমান অধিবেশনে উত্তাপন করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আসুন সবাই মিলে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনের মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বিশ্ব জনমত গড়ে তুলি।
১৪ দলের এতদিন পরে আসার কারণ সম্পর্কে প্রশ্নকরা হলে নাসিম বলেন, আমরা প্রচারণার চেয়ে কাজকেই গুরুত্ব দিয়েছি বেশী। তাই শুরু থেকেই সরকারের সাথে লিয়াজু করে কাজ করেছে ১৪ দলীয় নেতৃবৃন্দ। তাই প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের আগমণ এবং ত্রাণ বিতরণে সার্বক্ষনিক সমন্বয় সাধন করা হয়েছে। সব কিছু গোছালো করতে পারায় এখন সরেজমিন এসেছি আমরা।
অধিক সংখ্যক নারী-শিশু আসাই রোগ-বালাইয়ের কথা চিন্তা করে নেয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, আপাতত এক লাখ ২০ হাজার জনগোষ্টিকে হাম ও রোবেলা এবং ৪০ হাজার পোলিও টিকা, ৩৮ হাজার ভিটামিন-এ ক্যাপ্সুল খাওয়ানোর কার্যক্রম চলছে। এছাড়াও নানা ধরণের রোগ নিয়ন্ত্রণে স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবা নিয়মিত চলমান রয়েছে।
অপরদিকে, সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন-একটি মহল রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা চালাচ্ছে। এসব চক্রান্ত কখনোই মঙ্গলজনক নয়। তাই তিনি এ চেষ্টা পরিহার করতে মহল বিশেষের প্রতি আহবান জানান।
এছাড়া গত ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা সমস্যা সৃষ্টির পর থেকে চরতি সময় পর্যন্ত এখানকার পরিস্থিতি গণমাধ্যমে তুলে ধরে বিশ্ববাসীকে রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কে নিয়মিত তথ্য দেয়ায় সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকে সাধুবাদ জানান তথ্যমন্ত্রী।
মিয়ানমারে চলমান নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতি জ্ঞাপন ও ত্রাণ বিতরণের লক্ষ্যে শনিবার দুপুরে কক্সবাজার আসেন ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। মূখপাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি’র নেতৃত্বে তাঁর সাথে আসেন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন (বি.টি.এফ) এর চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম-২ ফটিকছড়ি আসনের সাংসদ সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, সাম্যবাদি দলের দিলীপ বড়–য়া, চট্টগ্রামের সাংসদ মাঈনুদ্দীন খান বাদল, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি, পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননসহ ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
বেলা ১টার দিকে তারা কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করলে সেখানে তাদের অভ্যর্থনা জানান জেলা জেলা ১৪ দলীয় নেতৃবৃন্দ। এরপর নেতাকর্মীদের সাথে বৈঠক শেষে কুতুপালংয়ে যান তারা। সেখানে আইওএম’র ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে সরিক হয়ে ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে তারা কক্সবাজারের বিকেল তিনটার দিকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ত্যাগ করেন।
এসময় জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, সাবেক সাংসদ ও জেলা প্ররিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, সদর আসনের সাংসদ সাইমুম সরোয়ার কমল, উখিয়া-টেকনাফের সাংসদ আবদুর রহমান বদি, মহেশখালী-কুতুবদিয়ার সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক, জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন, পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন, জেলা জাসদ সভাপতি নঈমূল হক চৌধুরী টুটুল, জেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি রেজাউল করিম, রাজা শাহ আলম, শফিকুর রহমান কোম্পানী, উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক রাসেল চৌধুরী, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) জেলা সভাপতি ও জেলা সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. পুঁ চ নু, সাধারণ সম্পাদক ডা, মাহবুবুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. আবদুস সালামসহ ১৪ দলের জেলা নেতৃবৃন্দ।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।