কক্সবাজার টেকনাফের সবচেয়ে ব্যস্থতম বাণিজ্যিক বাজারের তালিকা করতে হলে প্রথমে সুনামের সাথে বলতে হবে মরিচ্যা বাজরের কথা। কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের লিংকরোড হতে ২৪ কি.মি. দূরে অবস্থিত এ বাজার। মিষ্টিপান এবং তাজা সবজির জন্য প্রসিদ্ধ এ বাজার। এখন কেমন জানি গরুর ভাগাড়, গরুর ভাগাড় লাগে। সমান্য বৃষ্টিতে জলজট হয়ে পথচারির চলাচলে ব্যাঘাত গটে, হাটার কোন জায়গা থাকে না। বৃষ্টির অপরিষ্কার পানি আবর্জনা সহ ঢুকে পড়ে বড় দোকান গুলোতে। প্রধান সড়কের দুপাশে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠেছে অনেক গুলি টঙ্গি দোকান। বিগত দু’বছর আগেও এ মরিচ্যা বাজারের দশা এই রকম বেহাল ছিল না। তথ্য সূত্রে জানা যায়, ২০০০ সালের পরে সাবেক চেয়ারম্যান এড. মোস্তাফা কামাল চৌধুরী “স্বপ্নের মরিচ্যা বাজার” গড়ার উদ্যোশ্যে প্রধান সড়কের দুপাশে পানি নিষ্কাশনের জন্য পাকা ড্রেইন করে দেয়। এবং ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য প্রতিটি বৈদ্যতিক খুটির নিছে ডাস্টবিন বসিয়ে দেয়। পরের কাহিনিটুকু মরিচ্যার স্থানীয় বাসিন্দাদের সবার জানা। প্যারালাইসিস আক্রান্ত হয়ে মোস্তফা কামাল সাহেবকে ছেড়ে দিতে হয় পরিষদের চেয়ার। উনার সাথে সাথে আক্রান্ত হন, উনার করে দেয়া উন্নয়ন গুলোও। রাতা-রাতি উধাও হয়ে যায় আবর্জনা ফেলার ডাস্টবিন। ভরাট করে ফেলা হয় পানি নিষ্কাশনের জন্য খনন করা ড্রেইন। ড্রেইনের উপর একে একে গড়ে উঠে টঙ্গি দোকান। পরে সাবেক চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মিন্টু সাহেবের সময় আংশিক সংস্কার করা হয় পানি নিষ্কাশনের ড্রেইনের। এর পর আর কোন সংস্কার হয়নি। বর্তমান অবস্থা এমন হয়েছে যে, অনেক জায়গায় হারিয়েগেছে ড্রেইনের চিন্হও (হাফেজ নূরী সুপার মার্কেটের সামনে, মেসার্স তমিজ মার্কেটের সামনে, বাজারের পশ্চিম লাইনে পুরো অংশ জুড়ে এমনকি ইউনিয়ন পরিষদের সামনেসহ) উপর্যপরি এই ড্রেইনের উপর গড়ে উঠেছে ব্যাঙ্গের ছাতার মত অবৈধ টঙ্গি দোকান গুলো। পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় সমান্য বৃষ্টিতে জলজট সহ নানান জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। বেশ কদিন আগে মরিচ্যা বাজার এক উন্নয়ন সভায় বর্তমান চেয়ারম্যান জনাব অধ্যক্ষ শাহ আলম পানি নিষ্কাশনের ড্রেইন সংস্কার করার ব্যাপারে এবং ড্রেইনের উপর গড়ে উঠা অবৈধ টঙ্গি দোকান গুলো তুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত কোন দৃষ্টিগোচর হয়নি। সামনের গড়ে উঠা টঙ্গি দোকান গুলোর জন্য পেছনে থাকা বড় দোকান গুলোর ব্যবসা মন্দ হচ্ছে বলে জানিয়েছে অনেক ব্যবসায়ী। মরিচ্যা বাজারের কাজী মার্কেটের টিনের দোকান ব্যবসায়ী আবদুল হাকিম জানান, দোকানের সামনে পানির ড্রেইন ভরাট করে তার উপর গড়ে উঠা টঙ্গি দোকানের জন্য গাড়িতে টিন লোড-আনলোড করতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। প্রধান সড়কের উপরে গাড়ি পার্কিং করে মাল লোড-আনলোড করতে হচ্ছে এতে আমাদের ব্যবসা সহ পথচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই দুর্ভোগের ব্যাপারে বাজার পরিচালনা কমিটির কাউকে জাননো হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি আফসোস করে বলেন, “কাকে বলব ভাই! মরিচ্যা বাজারেতো কোন পরিচালনা পর্ষদেই নেই। চেয়ারম্যান সাহেবই সব”। কত চেয়ারম্যান এল আর গেল আমাদের কথা কেউ কানে তুলল বলে মনে হলো না।
এই রকম চাপাকষ্ট দেখা যায় বাজারের অধিকাংশ ব্যবসায়ীদের মধ্যে। হলদিয়া পালং ইউপি এক নং ওয়ার্ডের মেম্বার জনাব মনজুর আলম মনজু কাছ থেকে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই পানি নিষ্কাশনের ড্রেইন পূনরায় সংস্কার করা হবে। ড্রেইনের উপর গড়ে উঠা সবকটি দোকান তুলে দেওয়া হবে। আমরা আবারো ড্রিমিএম (স্বপ্নের মরিচ্যা) গড়ে তুলব।
এই ব্যাপারে ৩নং হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জনাব অধ্যক্ষ শাহ আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনিও আশ্বাস দিয়ে বলেন, আমরা অতিসত্তর পানি নিষ্কাশনের ড্রেইন সংস্কার করতে যাচ্ছি। এবং ড্রেইনের উপর গড়ে উঠা অবৈধ টঙ্গি দোকান গুলোর বিরূদ্ধে যথাযত ব্যবস্থা নিব। বাজারকে আবর্জনা মুক্ত রাখার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে। ব্যবসায়দের ব্যবসার সুবিধার্তে প্রধান সড়কের দুপাশে ড্রেইন ভরাট করে উঠা টঙ্গি দোকান গুলো তুলে দিয়ে ব্যবসা করার মত একটি সুন্দর পরিবেশ অতিদ্রূত করা হবে। এবং মরিচ্যা বাজারের সৌন্দর্য পরিবেশ পূনরায় ফিরিয়ে আনা হবে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।