নিজস্ব প্রতিনিধি:
রাজধানীর প্রাচীন খ্যাতনামা বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাঁড়াতে সহযোগিতা স্বরূপ অনুদান দিয়েছে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইস লিমিটেড (ওপিএল)। প্রতি রমজানে কক্সবাজারের প্রশাসনিক প্রধান ও বিশিষ্টজনদের সম্মানে হোটেল চেয়ারম্যানের করা ইফতার পার্টির এবারের আয়োজন বন্ধ রেখে সমূদয় টাকার দ্বিগুণ অগ্নি দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য দেয়া হয়েছে। বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সহযোগিতা সংগ্রহ করা ‘বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন’র স্বেচ্ছাসেবীদের হাতে বুধবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে হোটেল চেয়ারম্যানের অফিস কক্ষে চেকটি হস্তান্তর করেছেন ওশান প্যারাডাইসের পরিচালক আবদুল কাদের মিশু।
তিনি বলেন, বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। এর মাঝেও দেশকে সুন্দর মতো এগিয়ে নিতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। মানবসৃষ্ট দূর্যোগে প্রতিপক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ নিয়ে দেয়া যায়। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের মতো প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তরা সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব। বঙ্গবাজারে হাজারো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মজীবী লাখো পরিবারের রিজিক চলমান ছিল। এক অগ্নিকাণ্ড সব স্তব্ধ করে দিয়েছে। আমাদের উচিত মানবিক দিক বিবেচনা করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের পাশে থাকা। সেই চিন্তা থেকেই ওপিএল চেয়ারম্যান লায়ন এম এন করিমের পরামর্শে আমরা চলতি রমজানের ইফতার পার্টি আয়োজন বন্ধ রেখে সেখানে ব্যয় হওয়া টাকার ডাবল অংকের চেক বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দিয়েছি।
কাউকে দান বা সহযোগিতার টাকা গোপন রাখা-ই উত্তম, তাই টাকার অংকটা প্রচার না করতে অনুরোধ করেন ওপিএল পরিচালক।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন’র প্রকল্প সমন্বয়ক মোহাম্মদ মোবারক বলেন, বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আমরা সারাদেশ থেকেই অনুদান আহবান করেছি। সমুদ্র শহর কক্সবাজার থেকে সর্বপ্রথম ওশান প্যারাডাইস বড় একটি অংক অনুদান দিয়েছে। আমাদের কামনা সবাই নিজ অবস্থান থেকে অনুদান নিয়ে এগিয়ে আসুক।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, ওপিএলের উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। ব্যবসায়ীর দুঃখ আরেক পেশাদার ব্যবসায়ী বুঝে। ওপিএল চেয়ারম্যান ও পরিচালক প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী, তাই সাধ্যমতো তারা বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমাদের সবার উচিত স্ব স্ব অবস্থান হতে সকল দূর্যোগে সরকারের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতায় হাত বাড়ানো।
প্রসঙ্গত; গত ৪ এপ্রিল (মঙ্গলবার) ভোর ৬টার দিকে বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণের কথা জানান ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক। আগুন নেভাতে সকাল থেকে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট। এরপর সেখানে নির্বাপণ কাজে যোগ দেন সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যসহ র্যাব, বিজিবি ও ওয়াসার সদস্যরা। অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির খবর পাওয়া না গেলেও মার্কেটের অধিকাংশ দোকানের মালামাল পুড়ে গেছে। ঈদ ঘিরে ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি অনুদানকে যেন ক্ষতিগ্রস্তরা পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করে ঘুরে দাঁড়াতে পারেন, সে দিকটাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখে সকলকে নিজ অবস্থান থেকে হাত বাড়াতে অনুরোধ করেন ওপিএল পরিচালক আবদুল কাদের মিশু।
ক্ষতিগ্রস্ত বঙ্গবাজার ব্যবসায়ীদের জন্য অনুদানের চেক হস্তান্তরকালে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবী মোবারক, তারেক, ওপিএলের হিসাব বিভাগ প্রধান মোহাম্মদ আলমগীর, মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মাহবুব আলমসহ বিভিন্ন বিভাগের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।