মসজিদ মুসলমানদের জন্য একটি প্রার্থনার জায়গার পাশাপাশি অনেক সময় সামাজিক কেন্দ্র হিসেবেও গড়ে উঠেছে বিভিন্ন সমাজে।
মসজিদে শুধু নামাজ পড়া ছাড়াও, বিভিন্ন সময় মসজিদ-ভিত্তিক নানা সামাজিক এবং দাতব্য কর্মকাণ্ড চোখে পড়ে।
পৃথিবীজুড়ে ইসলামের নামে যে উগ্রবাদী তৈরি হয়েছে সেটিকে মোকাবেলার জন্য একটি বড় কৌশল হিসেবে মসজিদকে যথাযথ ব্যবহার করার উপর অনেকে গুরুত্ব দেন।
ইসলাম ধর্মের সাথে জঙ্গিবাদকে যুক্ত করার মাধ্যমে এনিয়ে পৃথিবীজুড়ে যে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে সেটিকে মসজিদ-ভিত্তিক ফটোগ্রাফি দিয়ে দূর করতে চান বাংলাদেশের চিত্রশিল্পী এবং সাংবাদিক শহিদুল আলম।
তিনি মনে করেন মসজিদ-ভিত্তিক কার্যক্রমগুলো ছবির সাহায্যে তুলে ধরতে পারলে ইসলাম নিয়ে অন্য ধর্মের অনেকের মাঝে যে নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে সেটি সহজেই দূর হতে পারে।
এজন্য মি: আলম ঢাকার একটি মসজিদে চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন। এ চিত্র প্রদর্শনীর শিরোনাম ‘অপরকে আলিঙ্গন করা’।
মি: আলম বলেন, “সার্বিকভাবে আমরা দু’টো দিকে আক্রান্ত। একটা হচ্ছে, আন্তর্জাতিকভাবে ইসলাম বিদ্বেষ। যেটার ভিত্তিতে সারা পৃথিবীতে আগ্রাসন চলছে এবং সে আগ্রাসনটা একতরফা আমি মনে করি। ”
আরেকটি হচ্ছে জঙ্গিবাদ, যেটার সম্মুখীন হচ্ছে বাংলাদেশ। এ দু’টোর ক্ষেত্রেই ইসলামকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। যারা ইসলাম বিদ্বেষী তারাও ইসলামকে ব্যবহার করছে এবং অন্যদিকে যারা জঙ্গি তৎপরতার সাথে জড়িত তারাও ইসলামকে ব্যবহার করছে।
“রসুলুল্লাহ নিজেই কিন্তু একেবারে ভিন্নভাবে মসজিদকে ব্যবহার করেছেন। তার সময় মসজিদ সামাজিক কেন্দ্র ছিল। সেখানে তিনি তার সরকার পরিচালনা করতেন। সেটা বিনোদন কেন্দ্র ছিল, সেটা হাসপাতাল ছিল, সেখানে তিনি নারীদের থাকার ব্যবস্থা করেছেন,” বলছিলেন মি: আলম।
তিনি মনে করেন, দেড় হাজার বছর আগে মসজিদের যে ব্যবহার ছিল সেখান থেকে এখন মসজিদের ব্যবহার অনেকটাই সরে গেছে। এখন শুধু নামাজের সময় ছাড়া অন্য সময়ে মসজিদের কোন ব্যবহার থাকে না। সেজন্য প্রদর্শনীর বিষয় এবং স্থান হিসেবে মসজিদকে বেছে নিয়েছেন শহিদুল আলম।
এজন্য মি: আলম বেছে নেন ঢাকার আশকোনা এলাকায় বাইত-উর-রউফ মসজিদকে। এ মসজিদের নির্মাণশৈলীর দক্ষতার জন্য ২০১৬ সালে স্থপতিকে আগাখান স্থাপত্য পুরষ্কার দেয়া হয়।
মি: আলম বলেন, এ মসজিদের অবয়ব ইসলামের নবী মোহাম্মদের সময়কার স্থাপত্যের সাথে কিছুটা মিল রয়েছে।
তাছাড়া এ মসজিদের ভেতরে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করার জন্য মসজিদের পরিচালনা কমিটি, ইমাম এবং মুসল্লিরা সহযোগিতা করেছেন বলে মি: আলম উল্লেখ করেন।
মি: আলম বলেন, ” আমি তাদের বলেছিলাম যে প্রদর্শনীতে সবাই আসবে। এখানে নারী-পুরুষ আসবে, এখানে মুসলমান-অমুসলমান আসবে। ” এ প্রদর্শনীতে ত্রিশটি ছবি রয়েছে। সবগুলো ছবি মসজিদ কেন্দ্রিক।
মসজিদ-ভিত্তিক এ ধরণের প্রদর্শনীর আয়োজন করার জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে অনুরোধ পেয়েছেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।