কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও ইউনিয়ন থেকে সরকারী বরাদ্ধকৃত বিপুল সংখ্যক বস্তা ১০টাকা দামের চাল উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়নের ৪,৫, ও ৬ নং ওয়ার্ড কালির ছড়া এলাকার সোহেল উদ্দিন নামক চালের ডিলারে এ ঘটনা ঘটে।
উধাও হয়ে যাওয়া দুইশতাধিক বস্তা চাল থেকে
এলাকাবাসীর প্রতিবাদ ও ইউপি চেয়ারম্যানের চাপেরমুখে একশ বস্তা কাছাকাছি চাল পুনঃ ডিলারে ফিরিয়ে আনেন। তবে অবশিষ্ট চালের কোন সন্ধান না থাকায় ডিলার ও এলাকাবসীর মাঝে অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে।
জানাযায় বিগত ৪ নভেম্বর সরকারী বরাদ্ধকৃত ১০ টাকা দামের চাল বড় ট্রাক যোগে এক গাড়ি চাল কক্সবাজার সদরের খাদ্যগুদাম থেকে কালিরছড়া ডিলারে আসে। কিন্তু দুদিন পর অর্থাৎ ৬ নভেম্বর গভীর রাতে একটি মালবাহী গাড়িতে করে আনুমানিক ২ শতাধিক বস্তা চাল অন্যত্রে বিক্রি করে দেন ডিলার সোহেল উদ্দিন। পরদিন সকালে এনিয়ে এলাকাবাসীরা উত্তেজিত হয়ে উভয় পক্ষের সংঘর্ষের আশংকা দেখা দেয়।
অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে বিকেলে কালিরছরা খাদ্যগুদামে সংবাদ কর্মীরা গেলে গুদামটি দ্রুত বন্ধ করে দেন সহকারী আব্দুর রশিদ। বিষয়টি জানতে চালের ডিলার সোহেল উদ্দিনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সে ব্যস্ত আছে বলে জানায় এবং পরবর্তীতে মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এব্যপারে স্থানীয় ৫নং ওয়ার্ড কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি বয়োবৃদ্ধ কামাল উদ্দিন জানান ‘গত শুক্রবারে যেদিন চাউলের ট্রাকটি আসে তখন গুদামে ২১৫ বস্তা চাল ছিল আমি নিজে গুনে দেখেছি কিন্তু কাউকে চাল না দিয়েও আজ (সোমবার) গুদামে ৩০-৪০ বস্তা চাল দেখা গেছে মাত্র।’
এছাড়াও ওই ওয়ার্ডগুলোতে গত সেপ্টেম্বর মাসেও কোন প্রাকার ১০ টাকা দামের চাল বিতরণ না করায় ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের জনসাধারণ হতাশা প্রকাশ করেন। সেপ্টেম্বর মাসে চাল না দেওয়ার ব্যপারে ৬ নং ওয়ার্ড মেম্বার কামাল হোছাইন বলেন ‘ চাল না পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট উপরস্থ মহলকে মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছিল কিন্তু এতে কোন ফল হয়নি।’
কালিরছড়া চালের ডিলার থেকে ১০টাকা দামের চাল চুরি বিষয়ে ঈদগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান ‘বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি এবং এটি সত্যতা যাচাইয়ের ব্যবস্থা চলছে। ঘটনা সত্য হলে অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে পরদিন আজ মঙ্গলবার ডিলারে রয়ে যাওয়া অবশিষ্ট ৩০-৪০ বস্তা চাল থেকে ৫ নং ওয়ার্ডে ১০ টাকার চাল বিতরণ করেন। এতেও প্রতি তিরিশ কেজির ক্ষেত্রে মাত্র ২৫ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ওয়ার্ডের ১০টাকা চালের কার্ডধারী তৈয়বা বেগম ও ছালেহা বেগম জানান প্রতি ৩০ কেজি চালে আমরা ৫ কেজি করে চাল কম পেয়েছি। চাল কম পাওয়ার অভিযোগটি কালিরছরা ডিলারটিতে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন।
এদিকে চালের ডিলার সোহেল উদ্দিন গভীর রাতে দুইশতাধিক বস্তা চাল চুরি বিষয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করলে ডিলার ও কালিরছড়া এলাকাবাসীর সাথে মারমুখী অবস্থা দেখা দেয়। পরে আজ ৮ নভেম্বর মঙ্গলবার চতুর্মুখী চাপে পড়ে গভির রাতে চুরি করা চাল থেকে অর্ধাংশ বস্তা চাল পুনঃ ডিলারের চালের গুদামে ফিরিয়ে আনেন বিতর্কিত ডিলার সোহেল উদ্দিন। তবে অবশিষ্ট চালের বস্তার এখনো কোন খবর না থাকায় এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এনিয়ে উভয়ের মধ্যে বড় ধরনের অঘটনের সম্ভাবনা রয়েছে। এমতাবস্থায় চাল চুরি বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত ডিলার সোহেল উদ্দিনের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক তড়িৎ গতিতে কোন ব্যবস্থা নেওয়া না হলে যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করা হচ্ছে।
###
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।