কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওতে ওয়েল লাইফ ফেয়ার এসোসিয়েশন নামের একটি ভূঁয়া এনজিও জমজমাট সুদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে গরীব জনগোষ্ঠির লোকজনের মাঝে মাথায় হাত দেওয়ার উপক্রম শুরু হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, দারিদ্র বিমোচনের নামে একচেটিয়া চড়া সুদের ব্যবসা করা। এরা ক্ষুদ্র ঋণ দানের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির ভাগ্য উন্নয়নের কথা বলে ও ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে এখনো ঈদগাঁওসহ কয়েকটি ইউনিয়নে অর্ধশত জনগোষ্ঠি তাদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। এ এনজিও নামধারী ভূঁয়া সংস্থার কারনে এনজিও ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে অনেকেই অসহায় হয়ে পথের ভিখারী হয়েছে।
এক তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে সদরের ইসলামাবাদ ইউছুপেরখীল গ্রামের জনৈক আমানুল হক ও সাইদুল করিম নামের ২ ব্যক্তি গত বছরের দিকে ৫০ জন মত গ্রাহক নিয়ে এ এনজিও সংস্থাটি চালু করে। তখন তাদের নিজস্ব কার্যালয় হিসাবে তরকারী বাজারস্থ সুফিয়া মার্কেটের ২য় তলায় অন্যের একটি অফিসে কার্যক্রম চালায়। পরবর্তীতে এ অফিসটি ছেড়ে দেয়। আরো জানা যায়, তারা এ এনজিওর নামে ভিআইপি স্টিকার ও বিভিন্ন স্থানে লাগিয়েছে। ইসলামাবাদ ইউছুপেরখীল গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩ ব্যক্তি জানান, এ এনজিওটি দরিদ্র মানুষের সেবার অন্তরালে অবাধে সুদের ব্যবসা করে চলছে। কর্মকর্তারা এ এনজিও’র টাকায় বিলাসবহুল জীবন যাপন করছে বলে জানা গেছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, এ এনজিওটি যেভাবে ঋণ আদায় করে তা সভ্য সমাজে একান্তই অমানবিক।
সূত্র জানায় এ এনজিওটি শত শত মানুষকে ঋণ দিচ্ছে। এরা প্রথমে পাড়া-মহল্লায় সমিতি গঠনের মত ৪/৫ জনে গ্রুপ করা হয়। গ্রুপ সদস্য হতে ভর্তি বাবদ নানা টাকা আদায় করে নিচ্ছে। যে কোন পরিমাণে ঋণ দেওয়া হলে পরবর্তী সপ্তাহ থেকেই সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক কিস্তি হিসাবে টাকা আদায় করা হয়। ঋণের টাকা আদায়ের জন্য এমন কোন পন্থা নেই তারা অবলম্বন করে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২জন ঋণ গ্রহীতা জানান, এক সপ্তাহ কিস্তি দিতে দেরি হলে তাদের উপর নেমে আসে অন্যায়-অত্যাচারসহ নানা রকম নির্যাতন। আর্জেন্ট ঋণের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে ভিটেবাড়ি পর্যন্ত বন্ধক দিতে হয়। মাসে মাসে টাকা দিয়েও শেষ করতে পারে না তাদের ঋণ। বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে অনেক পরিবার। এ ওয়েল লাইফ ফেয়ার এসোসিয়েশনের নামে ভুঁয়া এনজিও’র বিরুদ্ধে যথাযথ তদারকি ও পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন সচেতন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে উক্ত এনজিও’র এমডি (পরিচালক) আমানুল হকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিজেকে আমানুল হক নয় বলে দাবী করে তার নাম শামসুল আলম, গ্রামের বাড়ী চকরিয়া বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এর ১০ মিনিট পরে সাইদুল করিম নামে এক ব্যক্তি নিজেকে শেয়ার হোল্ডার পরিচয় দিয়ে এ প্রতিবেদককে অশালীন কথাবার্তা বলে। কক্সবাজার সমাজ সেবা অধিদপ্তরের পরিচালক ও সদর উপজেলা সমবায় অফিসার মোঃ ছলিম উল্লাহ’র সাথে যোগাযোগ করা হলে ওয়েল লাইফ ফেয়ার এসোসিয়েশন নামে কোন এনজিও বা সংগঠনের রেজিষ্ট্রেশন নাই বলে জানান।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।