কক্সবাজার সদর উপজেলার বৃহত্তর এলাকার জনসাধারণের বেচাকেনার একমাত্র কেন্দ্রস্থল ঈদগাঁও বাজার। অসহ্য যানজট, স্টেশন থেকে বাজার পর্যন্ত রিক্সা চালক কর্তৃক মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া আদায়, বাজারে চলাচল সড়কে যত্রতত্র স্থানে তরিতরকারির দোকান ইত্যাদি বাজারের নিত্যদিনের চিত্র। প্রশাসনিক কোন ব্যাবস্থা না থাকায় বানিজ্যিক এলাকা ঈদগাঁও বাজারের ডিসি সড়কে যানজটে দিন দিন অতিষ্ট হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ। তৎমধ্যে স্টেশন থেকে বাজার পর্যন্ত অল্প দূরত্বে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে রিক্সা চালকরা। একটু বৃষ্টি বা কাদা হলেই সাধারণ মুল্যের চেয়ে তিনগুন বেড়ে যায় ভাড়া। বাজারের প্রধান সড়কে প্রায়শঃ মালবাহী গাড়ী প্রবেশ করাতে উভয় পাশে অর্ধ শতাধিক রিক্সা, মোটর সাইকেল, সিএনজি, টমটমসহ পথযাত্রী আধ ঘন্টাব্যাপী আটকা পড়তে দেখা যায়। প্রতিদিনই একই যন্ত্রণা উপভোগ করতে হচ্ছে বাজারের ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীসহ চলাচলকারীদের। এতে বাজারের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে যথাযথ কর্তৃপরে দৃষ্টি কামনা করেন তারা।
সূত্রে জানা যায়, ঈদগাঁও বাজারে যথাযথ তদারকি ও প্রশাসনিক নজরদারীর অভাবে দীর্ঘ সময় ধরে ফুটপাট দখল ও যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংয়ে দূর্বিসহ হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন। ঈদগাঁও বাজারের পরিধি সময়ের সাথে সাথে হু হু করে বাড়ছে, পণ্য পরিবহন, ব্যবসায়ী কার্যক্রম, ক্রেতা-বিক্রেতা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। ক্রমবর্ধমান চাহিদাকে যোগানের সমন্বয় করতে বেড়ে যাচ্ছে অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা ও অব্যবস্থাপনা সহ নানা প্রকার সামাজিক অসংগতি। এক্ষেত্রে বাজারের পার্শ্ববর্তী জনপ্রতিনিধিদের সুদৃষ্টিও কামনা করেছেন।
বাজার এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, জনদূর্ভোগে নাকাল সাধারণ ভোক্তা, ক্রেতা-বিক্রেতা ও ব্যবসায়ী হতাশ । বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ঈদগাঁও বাজারের প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে প্রধান উপসড়কসমূহ, সংযোগ সড়ক অলিগলি সবখানেই ফুটপাত দখল করে রেখেছে বড় বড় দোকানের সানশেড, পণ্যপসরা, ভাসমান হকার, মৌসূমী ফল বিক্রেতা, কবিরাজী ঔষুধ বিক্রেতা, নির্মাণ সামগ্রী বিক্রয় প্রতিষ্ঠান রড সিমেন্ট ও হার্ডওয়ার সামগ্রী। ফুটপাত দৃশ্যমান থাকলেও ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই। পাশাপাশি ডিসি সড়ক জুড়েই মৌসুমী ব্যবসায় ছেয়ে গেছে। ফলে বাজারমুখি ক্রেতা-বিক্রেতা, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীসহ সাধারণ জনগণের দূর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। পথচারী ফুটপাতের পরিবর্তে ব্যবহার করছে গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মধ্যভাগ। যে কারণে যান চলাচল যেমন বিঘিœত হচ্ছে তেমনি ঘটছে মারাত্মক দূর্ঘটনাও। অব্যবস্থাপনার একই চিত্র ঈদগাঁও বাজারের সবখানেই। এছাড়া সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক (টমটম), যাত্রীবাহীজীপ ও রিক্সার জন্য কোথাও কোন পার্কিং না থাকায় যত্রতত্র পার্কিংয়ের ফলে বাড়ছে জনদূর্ভোগ। এছাড়াও পণ্যপরিবহন ও পণ্যখালাসের জন্য কোন সুনির্দিষ্ট নিয়ম কানুন ও সময়সূচী না থাকার কারণে পণ্যবাহী বড় বড় ট্রাক, কাভার্ড ভ্যন, বাজারে ঢুকে পুরো রাস্তায় দখল করে। পণ্যখালাস করে এ সকল যানবাহন স্থান ত্যাগ না করা পর্যন্ত দীর্ঘসময় ধরে সৃষ্টি হয় যানজট। সব বিষয়ে পথচারীরা দুষলেন বাজার কমিটিকে।
সূত্রমতে, আশংকাজনক হারে বেড়েই চলছে টমটম, অটোরিক্সা, সিএনজি, প্রতিনিয়ত রাস্তায় নামছে। দেখা যায় বেশিরভাগ অটোরিক্সা ও টমটম চালক ১৩ বছরের কমবয়সী শিশু। স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব যানবাহন চলাচল করলেও নেই কোন নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা। এছাড়া ঈদগাহ কলেজ গেইট থেকে শুরু করে বাসষ্টেশন পর্যন্ত আরাকান সড়কের উভয় পাশে ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে একাধিক গাড়ী মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান। পায়ে চলাচলের কোন পথ নেই বললে চলে। ঈদগাঁও বাজার এবং তৎসংশিষ্ট এলাকার পরিবহণ ব্যবস্থা যানজট নিরসন ও পথচারী পারাপার নির্বিঘ্নে করতে অচিরেই বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান এলাকাবাসী।
পথচারীর মতে, ঈদগাঁও বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটি যদি এসব বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে ভূমিকা রাখে তাহলে জেলার ঐতিহ্যবাহী এ বাজারটি প্রতি মুহুর্তে আলো ফিরে আসত। অন্যদিকে সচেতন মহলের মতে, জনপ্রতিনিধিরা সুনজর দেয় তাহলে বাজারটির অব্যবস্থাপনা, বিশৃঙ্খলা ও এলোমেলো অবস্থা অচিরেই দূর হবে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।