বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, আওয়ামী লীগের কোনো নীতি নেই, আদর্শ নেই। এরা শুধু লুটপাট করতে জানে। আমরা দেশের মানুষকে বলতে চাই, এই আওয়ামী লীগ থেকে সাবধান হন, এ দেশেকে বাঁচান। সবাই এক হন, ঐক্যবদ্ধ হন। প্রয়োজনে রাজপথে অবস্থান নিতে হবে। রাজপথে অবস্থান নেওয়ার সময় আসবে ঈদের পর। গতকাল রোববারে এক ইফতার অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন এই কথা বলেন। রাঙ্গুনিয়ায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরের ওপর ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র ক্যাডারদের হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এর সুষ্ঠু বিচার দাবিও করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
সরকারের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ঘটনায় আওয়ামী লীগ তাদের দায়িত্ব পালন করেনি। এই দুর্যোগে বিএনপি বড় দল হিসেবে মহাসচিবের নেতৃত্বে একটা টিম গেছে, তারা দেখবে, তাদের সাহায্য করবে। ওখানে রাস্তাঘাট খারাপ ছিল। আমাদের লোকরাই ঠিক করে দিয়েছে, যাতে আমাদের নেতারা সেখানে যেতে পারেন। কিন্তু সেখানে যেই মাত্র বিএনপি গেছে, সেজন্য আওয়ামী বিএনপির নেতার ওপর আক্রমণ করেছে তা আপনারা দেখেছেন। এই অবস্থায় বিএনপি যেখানে নিরাপদ নয়, সেখানে অন্য মানুষদের কী করে নিরাপদ থাকবে। যখন তখন মানুষের ওপর হামলা হচ্ছে, কাউকে গ্রেপ্তার করা হয় না।
আওয়ামী লীগের অপশাসন ও বাজেটের সাধারণ মানুষের ওপর বাড়তি করারোপের প্রসঙ্গ টেনে খালেদা জিয়া বলেন, আমরা খেতে পারি না, দেশের মানুষ খেতে পারবে না, শুধু ট্যাক্স দিতে হবে, ভ্যাট দিতে হবে, অমুক দিতে হবে, আওয়ামী লীগের মার খেতে হবে, মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলখানায় বন্দি থাকতে হবে। না হলে এই গুম-খুনের শিকার হতে হবে। এগুলো মানুষ চায় না। জনগণকে বলব, এ থেকে নিজেরা বাঁচতে চান, নিজেদের পরিবারের স্বজনদের বাঁচাতে চান এবং দেশটাকে বাঁচাতে চান, তাহলে আসুন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সব দল এবং জনগণ ঐক্যবদ্ধ হন। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি দেব। সেই কর্মসূচি দিয়ে ক্ষমতা থেকে বিদায় করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করব।
আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, এ দেশে নির্বাচন হবে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে নয়, আওয়ামী লীগ ক্ষমতার বাইরে থেকে। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। আমি দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বলতে চাই, হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচন দিলে ওই নির্বাচনে কেউ অংশগ্রহণ করবে না। ওই নির্বাচন দেশ হতে দেওয়া হবে না।
জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান টিআইএম ফজলে রাব্বি চৌধুরী, মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দারসহ জোট নেতাদের নিয়ে ইফতার করেন খালেদা জিয়া। ইফতারে ২০ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম, ইসলামী ঐক্যজোটের অ্যাডভোকেট এম এ রকীব, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, জাগপার অধ্যাপিকা রেহানা প্রধান, এনডিপির খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, পিপলস লীগের গরীব নেওয়াজ, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, ডিএলের সাইফুদ্দিন মনি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা শেখ মজিবুর রহমান, খেলাফতে ইসলামী মাওলানা আহমেদ আলী কাশেমী, বিজেপির আবদুল মতিন সউদ, কল্যাণ পার্টির শাহিদুর রহমান তামান্না প্রমুখ।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।