কক্সবাজারের উখিয়ার রতœাপালং ইউনিয়নের চাকবৈঠা গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার বাসিন্দা রোহিঙ্গা ডাকাত ফিরোজের অত্যচার-নির্যাতন, খুন-খারাবী, জবর দখল, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই সহ নানা রকম অপরাধ মূলক কর্মকান্ডের কারণে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। সরকারী বন ভূমির উপকার ভোগীদের প¬টের জায়গা দখল করার পর নির্বিচারে সামাজিক বনায়নের গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে ফিরোজ বাহিনীর সন্ত্রাসীরা। রোহিঙ্গা ডাকাত ফিরোজের বড় স্ত্রীর একটি মামলায় দীর্ঘ দিন কারা হাজতে থাকলে এলাকার লোকজন কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে। সম্প্রতি জামিনে এসে আবারো ডজন মামলার পলাতক আসামী ডাকাত ফিরোজ চাকবৈঠা গ্রামের একটি বন বিভাগের পাহাড়ে প্রায় ২ একর জায়গা দখল করে সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে আস্তানা গেড়েছে।
জানা গেছে, চাকবৈঠা গ্রামের মিয়ানমারের বংশদোত ছৈয়দ আকবর মিয়ানমারের একটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান (ওয়াকাট্টা) থাকা অবস্থায় মিয়ানমার সামরিক সরকার নির্যাতনের ধোয়া তুলে পালিয়ে এসে রতœাপালং ইউনিয়নের চাকবৈঠা গ্রামে স্বপরিবারে আশ্রয় নেয়। এই ছৈয়দ আকবরের ছেলে দুর্ধষ ডাকাত ও ১২ মামলার পলাতক আসামী ফিরোজ ২০ সদস্য বিশিষ্ট সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে সশস্ত্র অবস্থায় দিন রাত ওই পাহাড়ে আস্তানায় অপরাধ কর্মকান্ড ঘটিয়ে নিরাপদে আশ্রয় নেয়। রোহিঙ্গা ডাকাত ফিরোজের অন্যতম সহযোগি একই গ্রামের ছব্বির আহমদের ছেলে ইসমাঈল, মোঃ হোছন সহ ২০ সদস্য বিশিষ্ট এ ডাকাত বাহিনী রাত শুরু হওয়ার পর থেকেই উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বড় লোক কিংবা প্রবাসীদের টার্গেট করে ২ গ্র“পে বিভক্ত হয়ে চুরি, ডাকাতি, খুন, অপহরণ, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ সংঘটিত করে আসলেও অস্ত্রধারী ডাকাত বাহিনীর বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে চায় না। পুলিশ সহ অন্যান্য আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর গ্রেপ্তার এড়াতে ডাকাত সর্দার ফিরোজ আত্মগোপনে থাকলেও প্রতিনিয়ত তার বাহিনীর সদস্যরা কোথাও না কোথাও চুরি-ডাকাতি সংঘটিত করছে।
সম্প্রতি চাকবৈঠা গ্রামের (অজ্ঞাত কারণে নাম প্রকাশ করা হলো না) এক ব্যাক্তির ৪০ বছরের ভোগদখলীয় পিএফ ল্যান্ড জোর পূর্বক অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে দখল করে নিলেও জমির মালিক অসহায়ের মত দাঁিড়য়ে থেকে তা প্রত্যক্ষ করছিল। এছাড়া কিছুদিন পূর্বে ডাকাত ফিরোজের দখল করা বন ভূমিতে ২ যুবককে ধরে এনে মেরে ফেলার পর সেখানেই ২টি গর্তের মধ্যে লাশ পুতে রাখা হয়। পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে রহস্যজনক কারণে কোথায় থেকে এ লাশ গুলো এসেছে তা নিয়ে লোকজনের মাঝে নানা কানা ঘুষা ও কান কথা চলে আসছে। এলাকাবাসীর ধারণা, রোহিঙ্গা ডাকাত ফিরোজ বাহিনীর প্রধান ফিরোজ যুবকদ্বয়কে অপহরণ করে মুক্তিপন না পেয়ে তাদেরকে হত্যা করে বন বিভাগের গর্তের মধ্যে লাশ ফেলে দিয়ে মাটি দেওয়া হয়। এ নিয়ে এলাকার অনেকেরই মাঝে নানা কৌতুহলও দেখা দিয়েছে।
চাকবৈঠা গ্রামের ছৈয়দ আলমের ছেলে নুরুল বশর, আব্দুস শুক্কুরের ছেলে বেলাল উদ্দিন, ছব্বির আহমদের ছেলে মনজুর আলম, শাহ আলম সহ একাধিক গ্রামবাসী অভিযোগ করে জানান, চাকবৈঠা সীমান্তের ত্রাস, ডজন মামলার পলাতক আসামী, শীর্ষ ডাকাত চোরাচালানী ফিরোজ ২০ সদস্যের সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে ইয়াবা, মানবপাচার সহ সরকারী বিরোধী আন্দোলনে নাশকতায় জড়িত এ বাহিনীর অত্যচার-নির্যাতনে এলাকার নিরীহ প্রায় ১৫ হাজার গ্রামবাসী অতিষ্ট ও শংকিত। তার কারণে এলাকার বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড মাথা ছাড়া দিয়ে উঠছে। তা ছাড়া আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি সহ নানা কারণে তার অবাধ চলাফেরার ফলে এলাকার লোকজন আতংকে দিন কাটাচ্ছে। তারা উর্ধ্বতন পুলিশ প্রশাসনের নিকট ফিরোজ বাহিনীর অপরাধ কর্মকান্ড যথাযথ তদন্ত ও অনুসন্ধান পূর্বক গ্রেপ্তার করে এলাকাবাসীকে স্বস্তি দিবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
রতœাপালং ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের চাকবৈঠা গ্রামের ইউপি মেম্বার আইয়ুবুল ইসলাম বলেন, পুলিশি ধরা ছোয়ার বাইরে থাকায় ডাকাত সর্দার ফিরোজের কারণে এলাকার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি অবনতি দেখা দিয়েছে। আইন শৃংখলা রক্ষার স্বার্থে পুলিশ প্রশাসনের দ্রুত ফিরোজ বাহিনীর প্রধান ফিরোজকে গ্রেপ্তার করা উচিৎ বলে তিনি মনে করেন। উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জহিরুল ইসলাম খান বলেন, ইতিপূর্বে তাকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হলেও জামিনে বেরিয়ে এসে আবারো অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। তাকে ধরতে থানা পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালানো হবে বলেও তিনি জানান।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।