কক্সবাজারের উখিয়ার শীর্ষ মানব পাচারকারী দালাল রোহিঙ্গা বেলাল দীর্ঘদিন ধরে জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ভূয়া ও জাল পাসপোর্ট বানিয়ে মধ্য প্রাচ্য সহ সাগরের চোরাই পথে মালয়েশিয়ায় মানব পাচার করে আসলেও সংশি¬ষ্ট আইন শৃংখলা বাহিনীর তালিকায় তার নাম নেই। স্থানীয় সচেতন লোকজন পুলিশের তৈরিকৃত তালিকায় উখিয়ার সিকদার বিল গ্রামে স্বপরিবারে বসবাসরত রোহিঙ্গা বেলাল ওরফে হাফেজ বেলালের নাম অর্ন্তভূক্তি করে তাকে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান। সিকদার বিল গ্রামের একাধিক ব্যক্তি মানব পাচারকারী রোহিঙ্গা বেলালের খপ্পরে পড়ে সাগরে ট্রলার ডুবে অনেকেরই সলিল সমাধি হয়েছে। আর এতে এলাকার বহু পরিবার হারিয়েছেন মা, বাবা, ভাই, শিশু সহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন। শুধু তাই নয় বসত ভিটা জায়গা জমি সহায় সম্বল হারিয়ে এখন প্রায় নিঃস্ব হওয়ার পথে অনেক পরিবার।
রোহিঙ্গা মানব পাচারকারী বেলালের প্রতারণার শিকার সিকদার বিলের জয়নাল আবেদীন জানান, দেশের গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নজরদারী এড়িয়ে দীর্ঘ ১ যুগ ধরে মিয়ানমার থেকে লোকজন নিয়ে এসে তার সিকদার বিলের অস্থায়ী বাড়িতে মওজুদ করে যারা মধ্য প্রাচ্যে বৈধ পথে বিদেশ যেতে চায় তাদেরকে ভূঁয়া জন্ম নিবন্ধন, জাতীয় পরিচয় পত্র, জাতীয়তা সনদ, জাল পাসপোর্ট বানিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে গলাকাটা ভিসা দিয়ে অসংখ্য মিয়ানমার নাগরিককে বাংলাদেশী সাজিয়ে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। এসব জাল পাসপোর্ট ও গলাকাটা ভিসা নিয়ে যারা মধ্য প্রাচ্যে গমণ করেছে সেখানে গিয়েও তাদেরকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে পুণরায় বৈধ ভিসার কাগজ পত্র সংগ্রহ করতে হয় বলে ভূক্তভোগী একাধিক পরিবারের অভিযোগ। সম্প্রতি সাগর পথে মালয়েশিয়া যাওয়াকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা মানব পাচারকারী বেলাল বছর দেড়ক আগে মালয়েশিয়ায় চোরাই পথে মানব পাচারের দিকে ঝুঁকে পড়ে। এ সুবাদে মালেশিয়ায় শক্তিশালী একটি দালাল সিন্ডিকেটের সাথে রয়েছে তার গভীর সখ্যতা। এছাড়া থাইল্যান্ড উপকূলে মানব পাচারের চিহ্নিত ঘাঁটি গুলোতে থাকা দালালের সাথে রোহিঙ্গা বেলালের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ হয় বলেও জানা গেছে। ইতিমধ্যে রোহিঙ্গা বেলাল কমপক্ষে সাগর পথে সহস্রাধিক লোক মালয়েশিয়ায় পাচার করে দিয়েছে। প্রশাসন যন্ত্রের চোখ ফাঁকি দিয়ে মানব পাচারকারী রোহিঙ্গা বেলাল লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে সে এখন কোটিপতি। সম্প্রতি দেশব্যাপী মানব পাচারকারীদের ধরতে রাষ্ট্রীয় প্রশাসন যন্ত্রের সাড়াশি অভিযান শুরু হলেও রোহিঙ্গা মানব পাচারকারী বেলাল রহস্য জনক কারণে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাকে আটক করছেনা। ইতিপূর্বে চট্টগ্রাম বাকলিয়া থানার নতুন ব্রীজ এলাকা থেকে বাকলিয়া থানা পুলিশ মানব পাচারের অভিযোগে তাকে গত ১ মাস পূর্বে আটক করে। বাকলিয়া থানার কতিপয় অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের মোটা টাকা দিয়ে কোনমতে থানা থেকে এ সময় ছাড়া পেয়ে যায়।
উখিয়া সহকারী পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে পুলিশ অবশ্যই ব্যবস্থা নিবে। এছাড়া মানব পাচারে যারা জড়িত তারদেরকে গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।