উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি গ্রামে জালিয়া পালং ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নান্নুর বাড়ীতে রাম চা,কিরিচ ও লাটিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়েছে এলাকার বহুল আলোচিত নাইন স্টার গ্রুপের সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় ১ জন নিহত ও ৪ জন আহত হয়েছে।
জানা গেছে,গত ৩০ মার্চ সোনাইছড়ি মাঠে ক্রিকেট খেলা নিয়ে সাবেক ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি নুরুল আবছার নান্নুর সাথে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক সোনাইছড়ি গ্রামের শিবিবের একটি পরিচিত গ্রুপ নাইন স্টার গ্রুপের কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়। উখিয়া থানায় এজাহার দায়ের করে উভয় পক্ষ। অজ্ঞাত কারনে নান্নুর মামলাটি রেকর্ড করা হয়নি। রেকর্ড করা হয় নাইন স্টার গ্রুপের মামলাটি।
এদিকে মামলা রেকর্ড না হলেও শুত্রুবার স্থানীয় জনগন লক্ষ্য করলো একটি ভিন্ন চিত্র। মামলা করার পর উল্টো আসামীদের বাড়িতেই হামলা করলো নাইন স্টার গ্রুপের সন্ত্রাসীরা। এদিন বিকাল ৫ টার দিকে সন্ত্রাসীরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি নুরুল আবছার নান্নুর বাড়িতে ধারালো রাম চা,কিরিচ ও লাটিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। সাইফুদ্দিন ও শাহীন সরওয়ারের নেতৃত্বে ২০ /৩০ জনের সন্ত্রাসী দল নান্নু,নান্নুর ভাইকে খুঁজতে থাকতে। ঘরের ভেতর গিয়ে ভাংচুর চালায় এবং মারধর করে নান্নুর বড়ভাই আহামদ শরীফ (৩০) কে ধরে নিয়ে যায়। এসময় বাধা দিতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের লাটির আঘাতে গুরুতর আহত হন নান্নুর পিতা আলী হোসেন ও মা নুর নাহার। এলাকাবাসী নান্নুর মা নুর নাহার (৫০) কে অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করে। পরে সন্ত্রাসীরা নান্নুর ভাই আহামদ শরীফকে ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির হাতে সোপর্দ করে। এ ঘটনার পর দ্বিতীয় দফায় আবারো হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এক ঘন্টা পর সন্ধ্যা ৬ টার দিকে চালানো এ হামলায় আহত হয় ৩ জন। এবার সন্ত্রাসীরা নান্নুর সহযোগি বলে হামলা চালায় বাবার কবর জেয়ারত করে ফেরার পথে স্থানীয় সোনাইছড়ি গ্রামের মৃত বজল আহামদের ৩ সন্তানের উপর।
সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত সানা উল্লাহ জানান,শিবিরের চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক পরিচিত নাইন স্টার গ্রুপের অধিকাংশ কর্মী সোনাইছড়ি এলাকার। উক্ত গ্রুপের সাইফুদ্দিন ও শাহীন সরোয়ারের নেতৃত্বে ২০/৩০ জনের গ্রুপটি আমাদের নান্নুর সহযোগি বলে চা,কিরিচ ও লাটিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত করেছে। আমি, আমার দু,ভাই মোহাম্মদ উল্লাহ (৩৬) ও কক্সবাজার জেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী হোছাইন (৫০) কে তারা উপর্যপুরী হামলা চালিয়েছে। আমার দু,ভাইকে গুরুতর আহত অবস্থায় উখিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে মোহাম্মদ উল্লাহর পায়ের রগ কেটে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়,মোহাম্মদ উল্লাহর অবস্থা আশংকাজনক।
এদিকে বর্বরোচিত এই হামলার ঘটনার ব্যাপার জালিয়াপালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট রাশেল বলেন,নান্নুর বসতবাড়িতে হামলার ঘটনা দুঃখজনক,পুলিশের সামনেই এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ বাধা দিলে মৃত্যু ও আহতের ঘটনা এড়ানো যেত। আমি এ ঘটনার নিন্দা জানাই ও দোষীদের শাস্তি দাবী করছি।
এ বিষয়ে উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মুজিবুল হক আজাদ বলেন,এ জঘন্য সন্ত্রাসী হামলা ইতিপূর্বের একটি ঘটনার জের। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধান চেয়েছিলাম, আমি শুত্রুবার বেলা ৩ টায় ব্যাপারটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছিলাম। কিন্ত তারা আমার কথা শুনেননি,স্ট্যাটাস দেওয়ার দুইঘন্টা পর পরিকল্পিতভাবে শিবিরের নাইন স্টার গ্রুপ নান্নুর বাড়িতে হামলা চালায় এবং নান্নুর বড়ভাইকে যখন মারধর করছিল তখন মা বাধা দিতে গেলে সন্ত্রাসীরা মাকে আঘাত করে। পরিবর্তিতে নান্নুর মা মারা যায়। আমরা উখিয়া উপজেলা যুবলীগ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ও এ হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার দাবী করছি।
এ হামলার বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মকবুল হোসেন মিথুন বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এ ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি এবং হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতারপূর্বক শাস্তি দাবী করছি।
এ বিষয়ে জানতে ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিদ্বার্থ সাহার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,আমরা আসামী গ্রেফতার করার জন্য ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম,ঘটনাস্থল থেকে চলে আসার পর নান্নুর বাড়িতে হামলা করেছে বাদী পক্ষ, এরকম শুনেছি । এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। পরে শুনলাম আসামী নান্নুর মা মারা গেছে। ব্যাপারটি আমি উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
সূত্র- উখিয়ানিউজ
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।