উখিয়ার বালুখালী কাস্টমস (উখিয়ার ঘাট) এলাকায় হাইওয়ে পুলিশের হাতে আটক প্রায় ৮কোটি টাকা মূল্যের আড়াই লক্ষাধিক পিস ইয়াবার মালিক টেকনাফের হ্নীলার শক্তিশালী একটি সিন্ডিকেটের বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। ইয়াবাসহ আটক দুই ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে জেল হাযতে প্রেরন করা হয়েছে বলে উখিয়া থানা সূত্র জানিয়েছে। ঘটনার আসল রহস্য বের করতে গোয়েন্দারা ইতোমধ্যে এবিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
সূত্রগুলোর মতে, কোন গাড়ীর ড্রাইভার-হেলপার এতগুলো ইয়াবার মালিক হতে পারে না। তবে অভিযানকালে তাদেরকে পাওয়া গেছে বলে তারাই মামলার আসামী হয়েছে। ফলে ঘটনার আসল হোতারা রয়ে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এভাবে নানা কৌশলে বড় বড় ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পার পেয়ে যাচ্ছে আর চুনোপুটি পাচারকারীরা ধরা পড়ছে।
পুলিশের মতে, শনিবার ভোররাত ৩টার দিকে হাইওয়ে থানা পুলিশের একটি দল ঢাকাগামী একটি খালী ট্রাকে তল্লাশি চালিয়ে ৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা মূল্যের ২ লাখ ৫৫ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে। এ সময় গাড়ীর চালক ও হেলপারকেও আটক করা হয়। আটক চালক মোহাম্মদ মিন্টু আলী (২৭) যশোর জেলার শার্শা উপজেলার আব্দুর রশিদের ছেলে এবং হেলপার দেলোয়ার হোসেন (২০) একই জেলা ও উপজেলার কালিয়ানি এলাকার মশিউর রহমানের ছেলে। এ ঘটনায় ইয়াবা বহনকারী ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলা শেষে আসামীদের গতকাল রবিবার সকালে কক্সবাজার জেল হাযতে প্রেরন করেছে উখিয়া থানা পুলিশ।
হাইওয়ে পুলিশের একটি সূত্র জানান, উত্তর বঙ্গের সংঘবদ্ধ একটি মাদক পাচারকারী চক্র টেকনাফের হ্নীলার কয়েকটি সিন্ডিকেটের সাথে আতাত করে ইতিপূর্বেও অনুরূপ ভাবে ইয়াবার বড় বড় চালান পাচার করে আসছিল। উক্ত চক্রের পেছনে সোর্স মারফত শনিবার রাতভর হাইওয়ে পুলিশ সড়কের বিভিন্ন স্থানে উৎপেতে অবস্থান করে। অবশেষে শনিবার ভোর রাত সাড়ে ৩ টার দিকে ইয়াবার চালান বহনকারী খালী ট্রাকটি উখিয়ার ঘাট কাষ্টম চেকপোষ্ট অতিক্রম কালে হাইওয়ে পুলিশের ব্যারিকেট আটকা পড়ে। আটক দুই পাচারকারী টেকনাফ থেকে একই কায়দায় ইয়াবা গুলো উত্তর বঙ্গে পাচারের উদ্যেশে নিয়ে যাচ্ছিল।
তবে আসল আসামী বা ইয়াবার মালিকরা বরাবরের মতোই ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে বলে অভিমত সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীর।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আটক ইয়াবা ও ট্রাকের মালিক টেকনাফের হ্নীলার একটি ইয়াবা সিন্ডিকেটের। ওই সিন্ডিকেটের সদস্যদের বেশিরভাগই কক্সবাজার শহরে থাকে এবং বিলাসবহুল জীবন যাপন করে। আরেক দল সদস্য থাকে চট্টগ্রামের মইজ্জারটেকে। এছাড়া ঢাকা ও যশোরেও রয়েছে উক্ত সিন্ডিকেটের সদস্যরা। তাদের সাথে রয়েছে আরো সহযোগী। ওসব সহযোগী বা বহনকারীর সহযোগিতায় এসব ইয়াবা ব্যবসায়ীরা দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত ছাড়াও সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পর্যন্ত পাচার করে। এরমধ্যে রয়েছে পূর্ব লেদার এলাকার হেলাল এবং রঙ্গিখালীর নুর আহমদ ও সরওয়ার, খারাংখালী এলাকার মহিউদ্দিন সিন্ডিকেট। নুর আহমদ মূলত পার্টি ঠিক করে এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে। এই সিন্ডিকেটের রয়েছে কাভার্ড ভ্যানসহ অন্তত ১৫টি দামী গাড়ী, যেগুলো মূলত ইয়াবা বহন কাজে ব্যবহৃত হয়। গোয়েন্দারা ইতোমধ্যে এবিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে বলে জানা গেছে। আটককৃতদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার আসল হোতারা বের হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
মামার বাদী হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ রাজেশ বড়–য়া বলেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় মামলা হয়েছে। যার মামলা নাম্বার ২৮/১৭। আসামীদের জেল হাযতে প্রেরন করা হয়েছে। আসল রহস্য বের করার জন্য আসামীদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।