এম,এস রানা,(উখিয়া): মিয়ানমার সরকারের চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাকে মানবিক সাহায্য হিসেবে দেয়া বিভিন্ন ত্রানের সামগ্রীর জমজমাট বাজার চলছে উখিয়ার সর্বত্র। ত্রান বাজারের ঠেলায় মাথায় হাত উঠেছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।
বলতে গেলে নামমাত্র দাম দিয়ে ত্রান ক্রয় করে শত শত নারী পুরুষ এখন ত্রান বিক্রির ধান্ধায় হুমড়ি খেয়ে পড়ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে।
উখিয়ার বাজার সুমহে হাত বাড়ালেই মিলছে দেশ বিদেশের বিভিন্ন সংগঠনের দেয়া মানবিক সাহায্য ত্রানের মালামাল।
সাহায্য দাতারা বাজার থেকে উচ্চ মুল্যে ক্রয় করে রোহিঙ্গাদের দান করলেও তা বাজারে ফিরে আসছে পানির দরে। পুরুষের পেন্ট, লুঙ্গী সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাপড়, মহিলা ও শিশুদের নানান বস্ত্রদি, শিশু খাদ্য, ঔষধ,চাল,ডাল, তেল, চিনি, লবন, চিড়া, মাদুর, মশারি, সাবান, শ্যাম্পু, পিয়াজ, রান্না আলু, রান্নার জন্য দেয়া হান্ডি পাতিল, থালা বাসন, শীত নিবারনে কম্বল, শাল, তাবু বস্তু, রান্নার সামগ্রী, সহ রোহিঙ্গাদের দেয়া নানা প্রয়োজনীয় জিনিস বিনা বাঁধায় বিক্রি হচ্ছে হাট বাজারে।
স্বভাবিক ভাবে বাজারে ৫০ কেজি ওজনের চালের বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২২শত টাকা, রোহিঙ্গারা তা বিক্রি করছে ১ হাজার থেকে ১২ শত টাকায়, মসুর ডাল বাজারে ১১০ টাকায় বিক্রি হলেও তা এখানে মিলছে মাত্র ৪০/৪৫ টাকায়, ৫০০ গ্রাম দুধ মাত্র ১২০ /১৩০ টাকায পাওয়া যচ্ছে। এ ছাড়াও মশারী ১০০ টাকায়, সয়াবিন তেল ১ লিটার ৫০/৫৫ টাকা, ২ লিটার ১০০/১১০ টাকা, গোসলের বিভিন্ন সাবান ৭ থেকে ১০ টাকা
২থেকে ৪ হাজার টাকা দামের বড় তাবুর পলেথিন মাত্র ১ হাজার টাকায়, পেয়াজ ৩০ টাকায, চিড়ার ও আলুর ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছেনা। এ দিকে নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল কম দামে বাজারে পাওয়া যাওয়াতে সাধারণ ক্রেতাগন এখন ত্রানের মাল ঝোকে পড়ছে। যার ফলে স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীদের ব্যাবসা থমকে গেছে। অধিকাংস ব্যবসায়ী এখন দোকানে বসে অলস সময় কাটাচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে নিয়োজিত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ কে ফাঁকি দিয়ে কিছু অসাধু সেন্ডিকেটের সদস্যরা এসব ত্রানের পন্য সংগ্রহ করে তা বাজারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিচ্ছে। গত কিছুদিন পুর্বে উখিয়া থানার পুলিশ অবৈধ ত্রান বাজারে অভিযান চালিয়ে সেন্ডিকেটের একজনকে আটক করার পর প্রকাশ্যে ত্রানের মালামাল ফসরা সাজিয়ে বিক্রি কমে আসলেও থেমে নেই মৌসুমী ত্রানের মাল বিক্রেতারা। এখন অনেকে পুরাতন ব্যবসা ছেড়ে অধিক মুনাফার আশায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাতায়ত বাড়িয়ে দিয়েছে। এ ব্যবসা জড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় গেরেস্তের অনেক বৌ-ঝি। প্রতিদিন সন্ধা নামার সাথে সাথে বাজার গুলোতে ত্রানের মালামাল বিকিকিনির ধুম পড়ে যায়। আবার অনেক নারী পুরুষকে পাড়ায় মহল্লায় ফেরি করে এসব পন্য বিক্রি করতে দেখা যায়। কোটবাজারে অনেক ব্যবসায়ী ক্ষোভের সাথে জানান, একেতো রোহিঙ্গাদের কারনে জন জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে, তার মাঝে তাদের দেয়া মানবিক সাহায্যের ত্রান বিনা বাঁধায় বাজার বিক্রি হওয়াতে ব্যবসা প্রতিষ্টান বন্ধ করার উপক্রম হয়েছে। এলাকার অনেকেই ধারনা করে বলেন রোহিঙ্গাদের কে প্রয়োজনের অধিক ত্রান সামগ্রী বিতরন করায় তারা অতিরিক্ত ত্রান পানির দরে বিক্রি করে যাচ্ছে।
কথায় আছে কারো পৌষ মাস, আবার কারো সর্বনাশ। অবৈধ ভাবে ত্রানের পন্য এনে বিক্রি করে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হলেও, দোকানে বেচা বিক্রি না থাকায় ব্যবসার সর্বনাশ ঘটেছে অধিকাংশ ব্যবসায়ীর।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।