নিজস্ব প্রতিবেদক: মিয়ানমার থেকে নির্যাতন-নিপীড়ন, যুবক-শিশুদের হত্যা, যুবতি নারীদের ধর্ষন, হত্যা, ঘুম, খুন, বাড়ী ঘরে আগুণ, জ্বালাও, পুড়ার মুখে জীবনের ঝুকি নিয়ে খালী হাতে বাংলাদেশ পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নিকট থেকে বনভুমির জায়গায় বস্তিঘর নির্মাণ করে দেওয়ার কথা বলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে লাখ টাকা মালিক হয়েছেন শতাধিত লোকজন। এসবের নেপথ্যে রয়েছেন স্ব স্ব এলাকার জনপ্রতিনিধিরা।
সরজমিন উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী,থাইংখালী জামতলি, বাঘঘোনা, তাজনিমারখোলা, হাকিমপাড়া ও পালংখালী শফিউল্লাহ কাটা ঘুরে বনভূমির জায়গায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশকারী বাস্তুহারা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার কথা বলে প্রতি জনের নিকট থেকে হাতে ১হাজার টাকা করে বনভূমির জায়গা বিক্রিতে নেমে পড়েছে এক প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। স্ব স্ব রোহিঙ্গা বস্তি ভিত্তিক যুবক ছেলে দিয়ে টাকা উত্তোলন করছে কতিপয় জনপ্রতিনিধিরা। ভয়ে,আতংকে এসব ব্যক্তিতের নাম বলছেনা রোহিঙ্গারা।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে পালংখালী শফিউল্লাহ কাটায় আশ্রয় নেওয়া এক রোহিঙ্গা এ প্রতিবেদককে জানান, সে ১৫দিন পূর্বে হোয়াইক্যংয়ের লম্বাবিল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে এসে ঘুমধুম ইউনিয়নের পাহাড় পাড়ায় আশ্রয় নিয়েছিলাম। কিন্তু গত সোমবার প্রশাসনের লোকজন সেখান থেকে উচ্ছেদ করে দিলে পরিবার পরিজন নিয়ে এখানে চলে আসি। আসার পর জায়গা না পেয়ে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির নিকট থেকে ৫হাত জায়গা ৫হাজার টাকা কিনে নিয়ে তাবু তৈরী করেছি। ওই জনপ্রতিনিধি ইতিপূর্বে বনবিভাগের জায়গা বিক্রির অভিযোগে মামলার আসামী হয়েছিল। একই কথা হাকিমপাড়া এলাকায় বসবাসরত রোহিঙ্গা দম্পতির তারাও ৭দিন পুর্বে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে এক নিকট্মীয়ের ঝুপড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে বস্তি নির্মাণ করতে চাইলে নুরুল বশর নামের এক ব্যক্তি এসে টাকা দাবী করে বসে। পরে তাকে ৩হাজার দিয়ে তারপর বস্তি নির্মাণ করি।
এধরনের অহরহর অভিযোগ বিভিন্ন রোহিঙ্গা বস্তির আশ্রিত রোহিঙ্গাদের। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, পালংখালী ইউনিয়নের হাকিমপাড়া ও বাঘঘোনায় রোহিঙ্গাদের নিকট থেকে টাকা নিয়ে বনভূমি বিক্রি করেছে ওই এলাকার বাবুল, জালাল, আব্দুল গফুর,রুহুল আমিন, আব্দুল গফুর(২), আব্দুল কুদ্দুস, এজাহার মিয়া, বাদশা মিয়া, আব্দুল জলিল, আকতার মিয়া, হাফেজ এহাজার, ছুরুত আলম।
থাইংখালী তাজনিমারখোলা এলাকার কতিপয় এক জনপ্রতিনিধি নেতৃত্বে পুরো নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে ওই রোহিঙ্গা বস্তি।
এদিকে বালুখালী বস্তিতে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিকট থেকে প্রতি মাসে চাঁদা আদায় করছে বালুখালী এলাকার সাবেক এক জনপ্রতিনিধির নেতৃত্বে একটি মহল। এদের রয়েছেন-বালুখালী এলাকার ছৈয়দ নুর, মাহামুদুল হক, গোলাম কাদের, আনোয়ার ফয়সাল, নুরুল হক, জিয়াউল হক বাপ্পী,আলমগীর হোসেন।
কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৬জন আহত হয়েছে। তৎমধ্যে ডাঃ মুজিব, পারভেজ, জয়নাল আবেদীন। অথচ জয়নাল এনজিও সংস্থা এমএসএফ এ কর্মরত আছেন। এছাড়াও আন্ডার গ্রাউন্ডে থেকে অনেক প্রভাবশালী কলকাঠি নাড়ছে। এই অপকর্মে লিপ্ত হয়ে অসহায় রোহিঙ্গাদের কাজ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে শতাধিক লোকজন লাখ প্রতি আবার অনেকে কোটিপ্রতি হয়েছেন বলে জনমূখে শুনা গেছে।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা রয়েছে রোহিঙ্গাদের নিকট থেকে বস্তি নির্মাণের কথা বলে টাকা আদায় করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া জন্যে। ইতিপূর্বে এ ধরনের ঘটনায় মামলা রুজু করে একাধিক লোকজন আটক করা হয়েছে। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সাজা প্রদান করে বর্তমানে অনেককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।