২৮ নভেম্বর, ২০২৪ | ১৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

উচ্ছৃঙ্খল রোহিঙ্গাদের রুখতে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন

কক্সবাজার সময় ডেস্কঃ কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ উচ্ছৃঙ্খল হয়ে উঠছে। ঘটছে হত্যাসহ নানা অপরাধমূলক ঘটনা। এসব রুখতে এবার কঠোর অবস্থান নিয়েছে প্রশাসন। এছাড়া অবৈধ মোবাইল ফোন ও সিম বিক্রি বন্ধে মাঠে নামানো হয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালতকেও।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, গত ২১ অক্টোবর টেকনাফের নয়াপাড়া ক্যাম্পে কবির আহম্মদ নামে পুলিশের এক উপ-পরিদর্শককে (এসআই) পিটিয়ে আহত করে রোহিঙ্গারা। ৩০ অক্টোবর ডাকাতির প্রস্তুতির সময় উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্প সংলগ্ন বাগান থেকে দেশীয় অস্ত্রসহ পাঁচ রোহিঙ্গাকে আটক করে র্যাব। ২৭ অক্টোবর রামুর খুনিয়াপালংয়ে আব্দুল জব্বার নামে এক বাংলাদেশি যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে এক রোহিঙ্গা। একই দিন বালুখালী ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের হামলায় চার নলকূপ শ্রমিক আহত হন। এদিন দেশীয় দুই বন্দুকসহ দুই রোহিঙ্গাকে আটক করে পুলিশ। ২৮ অক্টোবর রাতে টেকনাফের হ্নীলায় এক বাড়ি থেকে ছয়টি মোবাইল চুরি করে পালিয়ে যাবার সময় জাবেদ নামে এক রোহিঙ্গা যুবকে আটক করা হয়।
সূত্র আরও জানায়, চলতি মাসে অস্ত্রসহ ১৫ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে। সর্বশেষ গত সপ্তাহে অবৈধভাবে মোবাইল ও সিম বিক্রির অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে পাঁচ রোহিঙ্গাকে আটক করেন। পরে তাদের প্রত্যেকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করায় পাঁচ বিদেশিসহ ২৬ জনকে আটক করা হয়।
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের (আরআরআরসি) হিসাব মতে, গত ২৪ আগস্টের পর থেকে এপর্যন্ত বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ছয় লাখ ২৬ হাজার রোহিঙ্গা। তবে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) ন্যাশনাল কমিউনিকেশন অফিসার শিরিন আকতার জানান, ২৫ আগস্ট থেকে গত ৭ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ছয় লাখ ২১ হাজার। ২৪ আগস্টের আগেও অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে, এই সংখ্যাটা প্রায় পাঁচ লাখের কাছাকাছি। অর্থাৎ বর্তমানে ক্যাম্পসহ দেশের নানান জায়গায় প্রায় সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়া হলেও রোহিঙ্গাদের মধ্যে অনেকে নানান অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আফরুজুল হক টুটুল বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন এখন হার্ড লাইনে (কঠোর অবস্থান) রয়েছে। জন-নিরাপত্তার স্বার্থে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে নিয়মিতই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে পড়া রুখতে এপর্যন্ত উখিয়া, টেকনাফ ও রামুর ১১টি স্থানে পুলিশ চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। ইতোমধ্যে কক্সবাজার থেকে আটক হওয়া ৩২ হাজার ৮১৮ জন ও অন্যান্য জেলা থেকে আটক হওয়া আরও ৭০৯ জন রোহিঙ্গাকে ক্যাম্পে আনা হয়েছে।’ ক্যাম্পগুলোতে পুলিশ, র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
কক্সবাজার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে প্রশাসন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও আনসার সদস্যদের সহায়তায় নিয়মিত চারটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৩৬৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এপিবিএনসহ প্রায় এক হাজার পুলিশ সদস্য, ২২০ জন ব্যাটালিয়ান আনসার এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মকর্তা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদবির এক হাজার সাতশ’ সদস্য পর্যায়ক্রমে ত্রাণ বিতরণের কাজে সহযোগিতা করছেন।’

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।