“মানথ্লি” শব্দটি মটর জগতের জন্য বেশ পরিচিত। বাংলাদেশের সমস্ত অবৈধ গাড়ি পার্কিং এর সাথে এই শব্দটি ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে।মরিচ্যা বাজারও এই শব্দটির অত্যাচারে শিকার।
আজকে বাড়ি ফিরছিলাম,একটা টমটম এসে গায়ে ধাক্কা দিল।হালকা আঘাত পেলাম।ড্রাইবার ভাইকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
“ভাই কি হয়েছে! ” উনি সুন্দরভাবে উত্তর দিলেন”ভাই ব্রেকের সমস্যা”!কিছু বলিনি,হেসে উড়াই দিয়ে চলে গেছি।”আহারে,আমার গায়ে ধাক্কা দিয়েই ব্রেক ধরল!
শুধু আজকে নই,প্রায়শই সিএনজি -টমটম- মিনিটম গুলো গায়ে ধাক্কা দিয়েই ব্রেক করতে দেখেছি।হেঁসে উড়াই দিয়ে চলে যায়।কারণ আমরা পরিচিত মুখ।ড্রাইভারদের গায়ে হাত তুলতে পারিনা।লোকে বলবে।মনে কষ্ট পেয়েছি।প্রচুর কষ্ট। আমার মত হাজারো কষ্ট নিয়ে ঘুরছে,এই রকম শত শত মানুষকে আমি দেখেছি।অনেকে ভেঙ্গে চুড়ে শয্যাশায়ী হয়ে আছে।কিন্তু মহাজাগতিক কোন ঈশারায় কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছেনা।
বাজারের বিশাল রাস্তা।কিন্তু মানুষ পারাপারের জন্য একচিলতে জায়গা নেই।শুধু জ্যাম আর জ্যাম।কিন্তু কেনো……..?
স্থানীয় সচেতন অনেক যুবক পুরোমাস জুড়ে এসব অবৈধ সিএনজি-টমটম পার্কিং নিয়ে ফেইসবুকে লেখালেখি করেছেন।অনেকে সলিউশন সংক্রান্ত লেখালেখিও করেছেন।মিজানুর রহমান মিজান,সাইফুল ইসলাম,ব্যাংকার আমিনুল ইসলাম,ডাঃএনাম উল্লাহ সিকদার,এ এইচ তারেক রনি,তরুন সাংবাদিক কনক বড়ুয়া শ্রাবণ,নিখুত সংবাদ কর্মী মুসলিম উদ্দিন,তানিম রহমান কেনাম,মুসলিম উদ্দিন,মোহাম্মদ রহীম সহ অনেকে মাসব্যাপী এই যানজট নিরসনে লেখালেখি করেছেন।কিন্তু কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি।
নড়বেইবা কেনো! বিশাল ইনকামের রাস্তা তো বন্ধ করা যাবেনা।মরিচ্যা বাজার আটটি পার্কি জোন আছে,”কোটবাজার,পাতাবাড়ি,কক্সবাজার,দারিয়ারদীঘি,খুনিয়াপালং,পাগলিরবিল,
গোয়ালিয়া পালং,বউবাজার”প্রতিদিন প্রত্যেকজোন থেকে সংগঠনের লাইনম্যান পাঁচশ টাকা করে মোট চারহাজার টাকা চাঁদা দেয়।প্রতিমাসে এই চাঁদা এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা হয়। সংগঠনে মোট সিএনজি পাচশ এর উপরে,প্রতি সিএনজি থেকে তিনশ করে মাসিকী নেয় সংগঠন। প্রতিমাসে সিএনজি থেকে আসে দেড় লক্ষ টাকা।টমটম থেকে নেয় দুশো করে।একহাজারের উপরে গাড়ি, মাসে আসে দুই লক্ষ টাকা।সদস্যদের কাছে চাঁদা একশ করে। সদস্যদের কাছ থেকে মাসে আসে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা।তাহলে সংগঠনের টোটাল মাসিক ইনকাম দাড়ায় ছয় লাখ বিশ হাজার টাকা।প্রতিবছরের ইনকাম চুয়াত্তর লাখ চল্লিশ হাজার টাকা।ক্যান ইউ ইমেজিং, হাউ মাচ’ মানি? তাহলে তারা রাজপথ ছাড়বে কেনো?
এত টাকা ইনকামের রাস্তা কেউ ছাড়ে!হালকা কিছু মান্থলি হাইওয়ে পুলিশকে দিয়ে তারা দেদারছে পার্কিং করছে।যানজট বাড়াচ্ছে!জনদূর্ভোগ করছে!কিন্তু আমাদের করার কিছু নেই প্রশাসন নীরব।
চট্টগ্রামে কিংবা ঢাকা শহরের গিয়ে দেখেন,রাস্তার উপরে কিংবা রাস্তার দু পাশে গাড়ি দুই মিনিটের জন্য পার্কিং করা যায় কিনা?? পারবেনা।কিন্তু এটা মরিচ্যা বাজার বলে পারছে।এখানে আইনের প্রয়োগ নেই তাই।
দ্বিতীয় যে কথাটি বলব।অবৈধ ফুটপাত।
গরীব মানুষ রাস্তার দু পাশে বসে, হালকা ফ্রুট বিক্রি করুক সমস্যা নেই,তারা পেট চালাক আমরা সবাই চাই।কিন্তু বড় বড় টঙ্গী বসিয়ে পেছনের দোকান গুলো আড়াল করে দিয়ে তো আর ফুটপাত দখল করা যাবেনা।
একটা দোকানে ব্যবসা করতে সেলামি দিতে হয় দশলাখের কাছাকাছি এবং পুজি দিতে হয় আরও বিশ লাখের মত।প্রতিমাসে মাসিক ভাড়া দিতে হয় প্রায় দশহাজার টাকার মত।অথচ এই দোকানকে আড়াল করে দিয়ে ফুটপাতে টঙ্গি বসিয়ে গরু মাংস বিক্রি করা কোন ধরনের আহম্মকি আমার বুঝে আসেনা।ব্যবসায়ীরা এই ফুটপাতের জন্য মালামাল লোড আনলোড করতে পারেনা।গাড়ির জ্যাম বেধে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা।কি জন দূর্ভোগ বলে শেষ করা যাবেনা।
আর এতটাকা ইনবেস্ট করে ব্যবসায়ীরা আছে চরম অত্যাচারে।মরিচ্যা বাজারের শুধু মাত্র মধ্যে স্টেশনের এই নাজেহাল অবস্থার জন্য আসলে দায়ী কে?
কোটবাজার- উখিয়া বাজার কোন বাজারে গরু গোস্ত রাস্তার দু পাশে বিক্রি করা হয়?
যদি কোন বাজারেই না হয়ে থাকে তাহলে মরিচ্যা বাজার সরকারি অনুদানে মডেল বাজার তৈরি করার পরও কেন রাস্তার দু পাশে গরুর মাংস বিক্রি করে পরিবেশ নষ্ট করছে? কে দেবে উত্তর? কার কাছে পাবে ব্যবসায়ীরা উত্তম বিচার?
আসলে আমাদের ব্যক্তিত্বের দূর্বলতা আছে।দূর্বলতা আছে আমাদের মানসিকতারও আর কিছুটা প্রশাসনের।
আমি ক্ষুদ্র মানব।আমার লেখায় কিচ্ছু হবেনা।নড়বেনা কোন অফিসের দরজাও।কারণ আমি কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নই।নই কোন ফোকাস পারসন।স্থানীয় প্রভাবশালীও নই।আমি খুনসুটে মানুষ।সামাজিক অসংগতি একটি রোগ।এটি একটি সামাজিক ব্যাধি।আমরা তার প্রতিকার চাই।
“ডাঃ কামরান উদ্দিন”
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।