কক্সবাজার-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং সম্পদ গোপনের অভিযোগ এনে চার্জশিটের সুপারিশ করা হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে ৬ কোটি টাকার সম্পদ গোপন এবং ৪ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদের অভিযোগ এনে চার্জশিট দাখিলের জন্য কমিশনের সুপারিশ চাওয়া হয়েছে।
সোমবার (০৬ এপ্রিল) বিকেলে দুদকের উপ-পরিচালক ও তদন্ত দলের প্রধান মঞ্জুর মোর্শেদ প্রতিবেদনটি কমিশনে দাখিল করেন।
প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়ে সন্ধ্যায় দুদকের পদস্থ একজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করে বলেন, দুদকের তদন্ত টিম সরেজমিন কক্সবাজারসহ সংশ্লিষ্ট জায়গা পরিদর্শন করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। যাছাই-বাছাই করে কমিশন এ প্রতিবেদনের আলোকে ব্যবস্থা নেবে।
এদিকে প্রতিবেদনে বদির অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদ গোপনের পাশাপাশি তার ভাই আবদুস শাকুরের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ এনে পৃথকভাবে অনুসন্ধানের জন্য সুপারিশ চাওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, অবৈধ সম্পদের অভিযোগে গত বছরের ২১ আগষ্ট আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় মামলা দায়ের করে দুদক। দুদকের মামলায় প্রায় তিন সপ্তাহ কারাভোগ করেছেন সরকার দলীয় এ সংসদ সদস্য।
এজাহারে বলা হয়েছে, বদির নামে ১০ কোটি ৮৬ লাখ ৮১ হাজার ৬৬৯ টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে। সম্পদ বিবরণীতে তিনি ওই পরিমাণ সম্পদ গোপন করেছিলেন। এ ছাড়া অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের বৈধতা দেখানোর জন্য কম মূল্যের সম্পদকে এক কোটি ৯৮ লাখ তিন হাজার ৩৭৫ টাকা বেশি উল্লেখ করা হয়েছে।
নির্বাচনী হলফনামার তথ্য অনুযায়ী মহাজোট সরকারের পাঁচ বছরে বদির আয় বেড়েছে ৩৫১ গুণ। ওই পাঁচ বছরে তিনি আয় করেছেন ৩৬ কোটি ৯৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪০ টাকা। বার্ষিক আয় সাত কোটি ৩৯ লাখ ৩৯ হাজার ৮০৮ টাকা এবং বার্ষিক ব্যয় দুই কোটি ৮১ লাখ ২৯ হাজার ৯২৮ টাকা।
অনুসন্ধানকালে নির্বাচনী হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা গছে, বিগত মহাজোট সরকারের আমলে তার সম্পদ বাড়তে থাকে অস্বাভাবিকভাবে।
এ মামলায় বদি গত ১২ অক্টোবর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর ১৬ অক্টোবর ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ ও মহানগর দায়রা জজ আদালতে তার জামিন আবেদন খারিজ হলে ওই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন বদি।
গত ২৭ অক্টোবর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের করা মামলায় বদিকে ছয় মাসের জামিন দেন। এটাকে চ্যালেঞ্জ করে আপিল করে দুদক। ২৯ অক্টোবর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত এ জামিন বহাল রাখেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।