একই দিন শুধুমাত্র তাকে একক আসামি দেখিয়ে থানায় একটি শ্লীলতাহানির মামলা রেকর্ড করা হয়। এ মামলায় বাদী বানানো হয়েছে সাংবাদিক শাহজাহানের পরিবারের পক্ষে ২০১৪ সালে দায়ের করা একটি মামলার আসামির মেয়েকে। এ তথ্য প্রচার হওয়ার পর পুরো জেলায় সাংবাদিক মহলের মাঝে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
সাংবাদিক শাহজাহান চৌধুরী জানান, মানব ও ইয়াবা পাচারে পুলিশের সম্পৃক্ততা বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকার তথ্য নিয়ে দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনসহ বিভিন্ন দৈনিকে তথ্য বহুল সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এসব সংবাদে তালিকা ও স্থানীয় সূত্রের বরাতে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তরার বিষয়ে চকরিয়া থানা পুলিশেল ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধরসহ আরো অনেক পুলিশ কর্মকর্তার নাম আসে। এসব সংবাদ দেখে ক্ষুব্ধ হন ওসি প্রভাষ।
তিনি আরো জানান, এরপর থেকে ওসি তাকে নানা ভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। ২০১৪ সালে তাদের পরিবারের উপর সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে একটি মামলা করেন তিনি (চকরিয়া থানার মামলা নং-৫৩, জিআর ৬৪৯, তাং-২২/১২/২০১৪ইং)। মামলার আসামিরা হলেন মনজুর আলম, নরুল আজিম, গুলজার বেগম, নুরুল কবির ও সাইফুল ইসলাম।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহম্মদ তদন্তাধীন এ মামলাটি নয়-ছয় করাসহ তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কঠিনভাবে আটকে দেবেন বলেন হুমকি দিয়ে আসছিলেন ওসি। আর এরই জের ধরে তার মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি গুলজারের মেয়েকে বাদি বানিয়ে ৩০ জুন একটি শ্লীলতাহানির মামলা থানায় নথিভুক্ত করা হয়। এ মামলায় তিনিই একমাত্র আসামি। গত ২৮ জুন সকাল ৯টায় ঐ নারীকে চকরিয়ায় শ্লীলতাহানির কথা বলা হলেও তিনি (সাংবাদিক শাহজাহান) পেশাগত কারণে পরিবারসহ কক্সবাজার অবস্থান করেন বলে উল্লেখ করেন।
সাংবাদিক শাহজাহান আরো জানান, ওসি প্রভাষ এ মামলা করেও সন্তুষ্ট হতে পারেনি। হিংসা চরিতার্থ করতে তার ব্যক্তিগত বাবুর্চি নাজেম উদ্দিনকে বাদি বানিয়ে ৩০ জুন চকরিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি নালিশি মামলা দায়ের করেন। মামলায় দাবী করায় হয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করে স্যারের (ওসির) সম্মানহানি করা হয়েছে। এ মামলায় তিনি ছাড়াও স্থানীয় দৈনিক সাগর দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কেফায়েত উল্লাহ শফিসহ আরো এক সাংবাদিককে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য চকরিয়া প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিনকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
ওসি`র এ ধরণের কর্মকাণ্ড প্রচার পাওয়ার পর জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
কক্সবাজার রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি রাসেল চৌধুরী এ ব্যাপারে বলেন, একজন আইন সেবা দানকারী সংস্থার কর্মকর্তা হয়ে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার অপকৌশল মোটেও দায়িত্বশীল আচরণ নয়। সাংবাদিক ও পুলিশের মাঝে স্বার্থগত দ্বন্দ্ব নেই। অভিযোগ কিংবা রাষ্ট্রিয় নথি পেলে যেকোনো সংবাদকর্মী রিপোর্ট করতে পারে এবং এটিই তার (সাংবাদিকের) কাজ। সংবাদে তথ্যগত ভুল থাকলে সেটার জবাবদিহিতা চাওয়ার বিধান রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, দ্বায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যদি কোনো সাংবাদিক অন্যায়ের শিকার হয় তাহলে সাংবাদিক সমাজও বসে থাকবে না। অবিলম্বে মামলাগুলো প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
চকরিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ করে মার্জিতভাবে কুশল বিনিময় করেন। কিন্তু পরক্ষণেই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার বিষয় নিয়ে কথা তুলতেই পরে কথা বলবেন বলে কলটি হোল্ড করেন।
–
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।