২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল। ধারণ ক্ষমতার তুলনায় অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হচ্ছে প্রতিদিন। একদিকে যেমন রোগী বাড়ছে অন্যদিকে সেবার মান কমছে বলে অভিযোগ রোগীর স্বজনদের। নিয়ম আনুসারে ৫৩ জন চিকিৎসক থাকলেও যেন রোগী আছে ডাক্তার নেই। হাসপাতালের ওয়ার্ডের বাহিরেও বারন্দায় অতিরিক্ত রোগী সেখানে যেন আরেকটি হাসপাতাল। অতচ সরকার রোগীর সেবার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করে সঠিক সেবা না পাওয়ার একটি করুণ চিত্র কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল। অপর দিকে বিশাল এই রোগী সামাল দিতেও বেকাদায় রয়েছে কর্তৃপক্ষ। কক্সবাজার মেডিকেল হল পুরোপুরি চালু হলে কিছুটা রোগী ছাপ কমবে ও সেবার মানও বাড়তে পারে এমনটি আশা প্রকাশ করছেন এলাকার সচেতন মহল।
১৫জুন দুপুরে সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, পুরে হাসপাতাল জুড়ে রোগীদের ভীড়। এমনকি ওয়ার্ডের বাহিরেও অনেক রোগী ফ্লোরে শুয়ে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। তবে সেবিকারা এইসব রোগীদের সিকিৎসা দিতে দেখা গেলেও দেখা মিলেনি ডাক্তারের। দেখা মিলেছে কিছু সংখ্যক ইর্ন্টান্টি ডাক্তারের। বিশেষ করে মহিলা ওয়ার্ডের ভেতরে রোগী এত বেশি সেখানে জায়গার সংকুল না হয়ে ওয়ার্ডের সামনে অনেক মহিলা রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। দৈনিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে বরাদ্দ শয্যা সংখ্যা ৩০ জনের। রোগী ভর্তি রয়েছে ৭৮ জন অতিরিক্ত ৪৮ জন রোগী, সেখারে রোহিঙ্গা রোগী ৬ জন। এছাড়া মহিলা ও শিশু সার্জারি ওয়ার্ড শয্যা সংখ্যা ৪০টি রোগী ভর্তি হয়েছে ৬৯ জন। অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হয়েছে ২৯ জন। পুরুষ সার্জারী ওয়ার্ড শয্যা সংখ্যা ৩০ জন। অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হয়েছে ৪২ জন। পুরুষ ওয়ার্ড শয্যা সংখ্যা ৩৫ জন। অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হয়েছে ১৭ জন। শিশু ওয়ার্ড শয্যা সংখ্যা ৪০ জন। অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হয়েছে ২১ জন। ডায়রিয়া ও সংক্রামক ব্যাধি ওয়ার্ড শয্যা সংখ্যা ২০ জন। অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হয়েছে ১৮ জন। প্রসূতি ওয়ার্ড শয্যা সংখ্যা ৪০ জন। অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হয়েছে ৩৬ জন। এই বিভাগে গত ৬ মাসে রোগী সেবা পেয়েছে ৫৫৪ জন।
শহরের কলাতলী এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ এহেছান জানান গতকাল প্রসূতি বিভাগে এক রোগীকে ভর্তি করেছি। এই পর্যন্ত ভাল চিকিৎসা পাচ্ছি না। বিশেষ করে ডাক্তার রোগী দেখতে কম আসে। নার্সদের দিয়ে কিকিৎসা সেবা চালিয়ে দিতে চাই তারা। মন চাইলে এখানে রোগীদের দেখতে ডাক্তার আসেন না হয় আসেনা। তারা দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলা করে।
একইভাবে কক্সবাজার সদর পিএমখালীর বাসিন্দা সাংবাদিক এম বেদারুল আলম গতকাল জরুরী বিভাগে চিকিৎসা নিতে এসে চরমভাবে অবহেলার শিকার হয়েছে বলে জানান তিনি। এদিকে শুক্ররবার জরুরী বিভাগে সত্যম সরকার নামে এক কিকিৎসকের দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও দায়িত্বপালন করতে দেখা গেছে স্মৃতি সরকার নামে এক ইর্ন্টানি ডাক্তারকে। তিনি জানান তার সাথে আরো তিন ইন্টার্নি ডাক্তার রয়েছে তারা এখন বাহিরে রয়েছে। নানা রোগ নিয়ে প্রতিদিন কয়েক শাতধিক রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। একই ভাবে বর্হি বিভাগে অতিরিক্ত রোগীর ছাপ। প্রায় এখানে সেবার মান নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছে রোগীরা। বছরের পর বছর পাল্টায় না এই চিত্র। আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার শাহিন আবদু রহমান চৌধুরী জানান ৫৩ জন ডাক্তার রয়েছে রোষ্টার অনুযারি তারা দায়িত্ব পালন করছে।
জেলা সদর হাসপাতালের নতুন তত্ত্ববধায়ক বিএমএ কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি ডাক্তার পুচনু যোগদান করার পর এই হাসপাতালের চিত্র বদলাবে এমনটি আশা করেছিল এলাকাবাসী তবে যে টুকু আশা করেছিল তা হয়নি বলে দাবী অনেকের।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।