কক্সবাজার অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’। লন্ড-ভন্ড হয়ে গেছে মানুষের ঘর-বাড়ী। উপকূলের মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে হতশা। ক্ষয় ক্ষতির পরিমান এখনও জানা যায়নি। মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে এ ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার অতিক্রম করে। এদিন ভোর ৫টা থেকে ধীরে ধীরে বাতাসের গতি বাড়তে থাকে। পরে সকাল ৬টার দিকে বাতাসের তীব্রতায় কিছু গাছপালা ভেঙে পড়ে। সকাল ৬টার দিকে টেকনাফে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ১১০ কিলোমিটার একং উখিয়ায় ছিল ১০০ এর উপরে। একই সময়ে কক্সবাজার সদরে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ৭৫ কিলোমিটার।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ একে এম নাজমুল হক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ভোর থেকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে। এ কারণে তীব্র গতিতে বয়ে যাচ্ছে ঝড়ো হাওয়া। সকাল ৬টার দিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র অবস্থান ছিল টেকনাফের সেন্টমার্টিন থেকে দক্ষিণে ১৩০ কিলোমিটার এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে। এটি আরও ঘনিভূত হয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর হয়ে উত্তর-পশ্চিমে অগ্রসর হয়।
এদিকে, কক্সবাজার সীমান্ত এলাকা টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। বাতাসের তীব্রতায় উপড়ে গেছে বহু গাছপালা এবং অধিকাংশ টিনের ছালা ঘর। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গবাদি পশু ও পানের বরজ।
সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দ্বীপের অধিকাংশ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করলেও তাদের ঘরবাড়ি উপড়ে গেছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ শতাংশ ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। বর্তমানে ব্যাপক ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। আজ দুপুর ১১টায় ঘূর্ণিঝড় মোরা বাংলাদেশ অতিক্রম করতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জেলার উপকূলীয় এলাকার লক্ষাধিক মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে জেলার ৫৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে অন্তত ৫ লাখেরও বেশি মানুষকে আশ্রয় দেওয়া যাবে। গঠন করা হয়েছে ৮৮টি মেডিকেল টিম। প্রস্তুত রাখা হয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচীর আওতায় থাকা ৪১৪টি ইউনিটের ৬ হাজার ১০জন স্বেচ্ছাসেবক এবং রেড ক্রিসেন্টের ১৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কর্মী। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা লোকজনের নিরাপত্তার পাশাপাশি নেওয়া হয়েছে খাদ্য সরবরাহেরও ব্যবস্থা।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।