বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌসভার সম্মেলনে কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ৫ টি অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই ৫ টি অনুরোধ হল, সকল প্রকার অবৈধ দখলকারিরা যে নিজ উদ্যোগে দখল সরিয়ে নেন, ফুটপাত দখল করে দোকান বা বাজার বসানো এবং যত্রতত্র পার্কিং স্টেশন বন্ধ করা, পৌরসভার পানি সরবরাহে লাইনে অবৈধ মটর সংযোগ স্থাপন বিচ্ছিন করতে নেয়া, কোন প্রকার লাইন্সেন ছাড়া শহরে চলাচলকারি ইজিবাইক (টমটম) এবং ব্যাটারি চালিত রিক্সা চলাচল না করা এবং যেখানে সেখানে ময়লা না রেখে নির্ধারিত স্থানে রাখা।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, কক্সবাজার পৌর পরিষদ জেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে বর্ষার আগেই কক্সবাজার শহরের নালা-নর্দমা ও পৌরসভার জায়গা অবৈধভাবে দখল করে স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। একই সঙ্গে ফুটপাত দখল করে দোকান বা বাজার বসানো এবং যত্রতত্র পার্কিং স্টেশন বন্ধ করে তীব্র যানজট ও ভোগান্তি তৈরি হচ্ছে। তা উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন তীব্র গরম। পৌরসভায় পানির সংকট তৈরি হচ্ছে। অথচ পৌরসভার সরবরাহ করা পানি সংকট হওয়ার কথা না। দেখা গেছে পৌরসভার পানি সরবরাহে লাইনে অবৈধ মটর সংযোগ স্থাপন অতিরিক্ত পানি জমিয়ে নিচ্ছে একটি মহল। তা বিচ্ছিন করা জরুরি হয়ে উঠেছে। এছাড়া কক্সবাজার পৌরসভার সাড়ে ৩ হাজার ইজিবাইক (টমটম) চলাচলের অনুমতি প্রদান করলে শহরের ১১ হাজার ইজিবাইক (টমটম) এবং কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই কয়েক হাজার ব্যাটারি চালিত রিক্সা চলছে। এতে যানজটের মাত্রা বেড়েছে। এসব অবৈধ যান চলাচল করতে দেয়া হবে না। পরিচ্ছন্ন শহর করতে যেখানে সেখানে ময়লা না রেখে নির্ধারিত স্থানে রাখা জরুরি।
কক্সবাজার পৌর পরিষদের সিদ্ধান্ত মতে, ঈদের আগে থেকে ঈদ পরবর্তি মাইকিং করে প্রচারণা চালানো হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, আমরা পৌরবাসির কাছে অনুরোধ জানিয়ে প্রচারণা চালিয়েছি। আমরা বলেছি, ২৫ এপ্রিলের মধ্যে সকল প্রকার অবৈধ দখলকারিরা যে নিজ উদ্যোগে দখল সরিয়ে নেবেন। এমন কি অবৈধ দখলকারি তালিকাভূক্ত কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগ করে সরিয়ে নিতে বলেছি। আমাদের আহবানে একজন বিশিষ্টজন, প্রবীণ সাংবাদিক নিজ দায়িত্বে কাজটি করেছেন। আমরা তাকে স্বাগত জানাই। কিন্তু অন্য কেউ আমাদের অনুরোধ রক্ষা করেনি। এটা দুঃখজনক। অথচ এই দখলদারের মধ্যে আরও বিশিষ্ট কোন ব্যক্তি রয়েছে। যারা সমাজে বা প্রশাসনের নানা অনুষ্ঠানে নানা নীতি ব্যাক পাঠ করেন। এটা আমাদের শেষ অনুরোধ দয়া করে নিজ উদ্যোগে সরে যান। কয়েকদিনের মধ্যে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হবে। কোন প্রকার অবৈধ দখল রাখা যাবে না।
মেয়র মাহাবুবুর রহমান বলেন, একবার ফুটপাত দখল করে দোকান বা বাজার বসানো এবং যত্রতত্র পার্কিং স্টেশন উচ্ছেদ করে বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু তা আবারও বসেছে। এরা যেন আর কোনভাবে না বসেন। বসলে উচ্ছেদ মালামাল জব্দ সহ আইনের প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কক্সবাজার পৌরসভার পানির লাইন পৌরবাসির সম্পদ। কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি তাদের ভবনের জন্য পৌরসভার পানি সরবরাহে লাইনে অবৈধ মটর সংযোগ স্থাপন করেছে। এতে পানি সংকট তৈরি হচ্ছে। এটা মেনে নেয়া যায় না। আমরা অনুরোধ করেছিলাম এই অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন করে নিতে। কিন্তু তা মানা হয়নি। আমরা অভিযান নামবো। আর কোন প্রকার লাইন্সেন ছাড়া শহরে চলাচলকারি ইজিবাইক (টমটম) এবং ব্যাটারি চালিত রিক্সা চলাচল করতে দেয়া হবে না।
তিনি পৌরবাসির কাছে যেখানে সেখানে ময়লা না রেখে নির্ধারিত স্থানে রাখার অনুরোধ জানান। বলেন, এই শহর সকলের। এটার সৌন্দর্য রক্ষা সকলের দায়িত্ব।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মেয়র বলেন, পৌরসভার নির্ধারিত পার্কিং স্টেশন, বাজার রয়েছে। যা ইজারা প্রদান করা হয়। এর বাইরে কোন টোল আদায় করা হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে অনুরোধ জানিয়েছি। আপনারা তথ্য দেন। আইনগক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মেয়র কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাটস্থ বাঁকখালী নদীতে জেটি নিমার্ণ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়ে বলেন, জেলা প্রশাসক কয়েকদিনের মধ্যেই ওখানে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করবেন বলে জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্যানেল মেয়র সালাউদ্দিন সেতু, প্যানেল মেয়র ইয়াছমিন আক্তার, কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিন কবির, কাউন্সিলর রাজবিহারী দাশ, কাউন্সিলর শাহেনা আক্তার পাখি, কাউন্সিলর জাহেদা আক্তার, কাউন্সিলর এম এ মনজুর, কাউন্সিলর সাহাব উদ্দিন সিকদার, কাউন্সিলর ওসমান সরওয়ার টিপু, কাউন্সিলর এহেসান উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।