কক্সবাজারসময় ডেস্কঃ কক্সবাজার শহরের বাজারঘাটা-বাস টার্মিনাল পর্যন্ত শুধু একটি বার যোগাযোগমন্ত্রীকে ঘুরিয়ে আনা গেলেই তিনি বুঝতে পারবেন পর্যটন শহরের মানুষ যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে কেমন আছেন’। অনেকটা ক্ষোভের সুরে এ অনুযোগ জানালেন নারী উদ্যোক্তা ফাতেমা ইসলাম লাকী।
‘পর্যটন শহরের রাস্তাঘাটের এমন বেহাল দশা অতীতে আর চোখে পড়েনি। অথচ যোগাযোগ মন্ত্রী আসছেন তাই এখন রাতারাতি সড়কের ওপর প্রলেপ লাগানো হচ্ছে। বিষয়টি দুঃখজনক।’
জানা গেছে, কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কটি বিশেষ করে লালদীঘির পাড় থেকে লিংক রোড পর্যন্ত দীর্ঘদিন ধরে বেহাল দশার কারণে জনসাধারণের দুর্ভোগের শেষ নেই। শুধু মহাসড়ক নয়, পৌর শহরের ভেতরের উপ-সড়কগুলোর দৃশ্য আরও ভয়াবহ। যোগাযোগমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে গত কয়েকদিন ধরে ভঙ্গুর এ সড়ক সংস্কার করা হচ্ছে। কিন্তু ঘণ্টা পার হতে না হতেই সংস্কার করা সড়ক আগের চেহারায় ফিরে যাচ্ছে।
জানা গেছে,দীর্ঘদিন ধরে শহরের প্রধান সড়কটির হলিডের মোড় বাস টার্মিনাল হয়ে আবার হলিডের মোড় পর্যন্ত রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ছিল সড়ক জনপথ বিভাগের। ২০১৮ সালে যা কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) কাছে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে কউক এই সড়কের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করছে। চলতি বছরেই দ্বিতীয়বারের মতো সংস্কার কাজ পরিচালনা করছে কউক। এরমধ্যে বাস টার্মিনাল থেকে হলিডে মোড় পর্যন্ত বাস টার্মিনালস্থ ফিলিং স্টেশনের সামনের অংশ, বিজিবি ক্যাম্প, সাবমেরিন ক্যাবল স্টেশন, সিটি কলেজ গেইট, আলীর জাঁহাল, টিএমসি, রুমালিয়ারছড়া হাশেমিয়া মাদ্রাসা, টেকনিক্যাল স্কুল (ভোকেশনাল), তারাবনিয়ার ছড়া, কালুর দোকান, টেকপাড়া বায়তুল ইজ্জত জামে মসজিদ, বার্মিজ মার্কেট, ফায়ার সার্ভিস, লালদিঘির পূর্ব পাড় থেকে থানা রোড, ঝাউতলা সংলগ্ন প্রধান সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে পর্যটকসহ হাজার হাজার জণসাধারণকে চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে আমরা শহরের প্রধান সড়ক সংস্কারের দায়িত্ব কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) কাছে হস্তান্তর করেছি। বর্তমানে কউক সড়ক সংস্কারের কাজ পরিচালনা করে।
স্থানীয়রা জানান, সংস্কার কাজ বার বার নিম্নমানের হওয়ায় এবং দীর্ঘদিন সড়কটি সংস্কারের অভাবে এ বেহাল দশা। সড়কটি দেখলে মনে হয় এ দেশে কোন সরকার নেই।
শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, গতকাল শুক্রবারও কউকের উদ্যোগে সড়কটির সংস্কার কাজ চলছে। শুধুমাত্র সড়কের বড় বড় গর্তগুলোই ইট আর পাহাড়ি মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। এ জন্য সড়কের বিভিন্ন স্থানে রাখা হয়েছে নিম্নমানের ইট। নিম্নমানের এসব ইট ব্যবহার করেই করা হচ্ছে সড়ক সংস্কার। পাশাপাশি রোলার কোস্টারও ব্যবহার করা হচ্ছে। কয়েকদিনে বার্মিজ মার্কেট, কালুর দোকান, রুমালিয়ারছড়া এবং আলী জাঁহাল ও সাবমেরিন কেবল স্টেশন সংলগ্ন সড়কের অংশ সংস্কার করা হয়।
তবে স্থানীয়রা বলছেন, তড়িঘড়ি করে সংস্কার করার কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই যে সংস্কার কাজের অস্তিত্বই বিলুপ্ত হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কউক সদস্য (প্রকৌশল) লে. কর্নেল আনোয়ার উল ইসলাম বলেন, আমাদের বাজেট কম, তাই কোনোমতে সড়ক সচল রাখার চেষ্টা করছি। বিটুমিন দিয়ে করতে পারলে ভালো হতো। তবে সড়ক সংস্কারের এক নম্বর ইট ব্যবহার করা হচ্ছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।