মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
কক্সবাজার জেলায় ২৯মে পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ১৪ জন। জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৬১৮ জন। যারমধ্যে ২৭ জন রোহিঙ্গা শরনার্থীও রয়েছে। জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়েছেন ১৪২জন। একইসময় স্যাম্পল টেস্ট করা হয়েছে ৬৩৪৩ জনের।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন শুক্রবার ২৯মে দিবাগত রাতে তাঁর নিজস্ব ফেসবুক আইডি’তে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে কক্সবাজার জেলার করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত জেলা প্রশাসনের এক পরিসংখ্যানে এতথ্য উল্লেখ করেছেন। তবে চকরিয়া উপজেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতুবরণ করা রোগীর সংখ্যা ১জন উল্লেখ করা হলেও মূলত চকরিয়া উপজেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪জন। সে অনুযায়ী কক্সবাজার জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা রোগীর সংখ্যা মোট ১৪ জন।
চকরিয়া উপজেলায় যে ৪জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন তারা হলো-
(১) চকরিয়া পৌরসভার কাজীর পাড়া এলাকার নুরুল হোসেন (৬৫)। তিনি বৃহস্পতিবার ২৯মে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট খৃষ্টান মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুবরণ করেন। তিনি করোনা পজেটিভ থেকে পরে নেগেটিভ রিপোর্ট আসলেও তিনি নিজ কোয়ারান্টাইনে থাকাবস্থায় গত ২৭মে গুরতর অসুস্থ হয়ে যায়। পরে তাকে চট্টগ্রাম নেওয়া হলেও সেখানে কোন আইসিইউ সুবিধা না পেয়ে কক্সবাজার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট খৃষ্টান মেমোরিয়াল হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়েছিলো। (২) গত ২৫মে মাওলানা সিরাজ উল্লাহ নামক চকরিয়া পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের হাল কাকরার বাসিন্দা ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর কর্মচারী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান। (৩) চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা শহীদ হোসাইন চৌধুরী চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে মারা যান।
(৪) কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে বৃহস্পতিবার ২৯মে সকাল ৮টার দিকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা চকরিয়া পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের মৃত বদিউল আলমের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৭০) মারা যান। একইদিন সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর মরহুমার নামাজে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। রাত সাড়ে ৭টার দিকে অর্থাৎ মৃত্যুর ১১ঘন্টারও বেশী সময় পর মৃত আনোয়ারা বেগম এর স্যাম্পল টেস্ট রিপোর্ট কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাব থেকে ‘পজেটিভ’ পাওয়া যায়।
এছাড়া জেলা প্রশাসনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কক্সবাজার সদর উপজেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছেন ৯জন এবং রামু উপজেলায় মৃত্যুবরণ করেছেন ১জন। এনিয়ে কক্সবাজার জেলায় করোনা রোগী মৃত্যুবরণ করেছে সর্বমোট ১৪জন।
এদিকে, কক্সবাজার সদর উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৩০ জন ও সুস্থ হয়েছেন ২২ জন। রামু উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৪জন ও সুস্থ হয়েছেন ২জন। চকরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৫৬জন ও সুস্থ হয়েছেন ৭০জন। পেকুয়া উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮জন ও সুস্থ হয়েছেন ২১জন। মহেশখালী উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩১জন ও সুস্থ হয়েছেন ১২জন। কুতুবদিয়া উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ২জন, সেখানে কেউ সুস্থ হননি। টেকনাফ উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ২১জন ও সুস্থ হয়েছেন ৮জন। উখিয়া উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৯জন ও সুস্থ হয়েছেন ৭জন। রোহিঙ্গা শরনার্থী আক্রান্ত হয়েছেন ২৭জন।
প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গা শরনার্থী আগে ২৯জন করোনা আক্রান্ত বলা হলেও সেটি মূলত ২৬ জন বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত আরআরআরসি (উপসচিব) সামছু দ্দৌজা। সে অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার ২৯মে আক্রান্ত হওয়া একজন রোহিঙ্গা শরনার্থী সহ মোট রোহিঙ্গা শরনার্থী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ২৭জন। এছাড়া গত ২এপ্রিল থেকে ২৯ মে পর্যন্ত স্যাম্পল টেস্ট করা হয়েছে মোট ৬৩৪৩ জনের।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।