কক্সবাজারের চকরিয়ার খুটাখালী কিশলয় আদর্শ শিক্ষা নিকেতনে ‘শনির দশা ভর করেছে’। চৌধুরী তৈয়বের হাতে গড়া স্কুলটি শিক্ষক – কর্মচারী গ্রুপিংয়ে ক্লাম্ত হয়ে পড়ছে। আর এতে বলির পাঠা বানাতে গ্রুুপিংয়ে ব্যস্ত চক্রটি বেছে নিয়েছে প্রায় এক যুগের অফিস সহকারী এস এম সলিমকে। শুধু তাই নয়- কথিত শিক্ষক নাজেহালের ধোয়া তুলে রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী চক্রটি প্রতিপক্ষ বিনাশ করতে স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঠে নামিয়েছে। আর এতে স্কুলের শ্রেণী পাঠদান কার্যক্রম পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে।
জানা যায়, ৮০ দশকে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী খুটাখালী কিশলয় শিক্ষা নিকেতন-এক সময় শুধু কক্সবাজার জেলা নয়, এর সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিল পুরো বাংলাদেশে। স্কুলটির সাবেক অসংখ্য মেধাবী ছাত্র দেশ গঠনে ভূমিকা রাখছে। কিন্তু চৌধুরী মুহাম্মদ তৈয়ব স্কুল ছাড়ার পর স্কুলটি তার ভালো ইমেজ হারাতে বসে। জেকে বসে শিক্ষক গ্রুপিং। আর এতে পানি ছিটায় রাজনৈতিক পরিচয়ে মনোনীত স্কুল পরিচালনা কমিটির অসাধু কর্তারা। চলে আসা অসংখ্য ঘটনার সর্বশেষ সংযোজন গত ১০ সেপ্টেম্বর। ওইদিন দুপুরের খাবার খেতে গিয়ে অতীত ঘটনার রেশ টেনে স্কুলের ডাইনিংয়ে হাতা-হাতিতে জড়িয়ে পড়ে ওরা ২ জন। একজন স্কুলটির সহকারী শিক্ষক নাছির উদ্দিন, অপরজন অফিস সহকারী এস এম সলিম। দু’জনই খুটাখালীর লোকাল ছেলে। তবে ঘটনার পর শিক্ষক ও রাজনৈতিক পরিচয়ে সলিমের উপর দাপট দেখাতে থাকে শিক্ষক নাছির। তিনি প্রধান শিক্ষককে দিয়ে সলিমকে এক সপ্তাহ স্কুলে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। এতে অতি ক্ষিপ্ত নাছির অফিস সহকারী সলিমকে শিক্ষা দিতে থানা, কোর্ট সবখানে অভিযোগ দিয়ে বসেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অফিস সহকারী সলিম জানান, আমি কিশলয়ের অফিস সহকারী। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে আমাকে আমার কাজটি করতে দিচ্ছেন না বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাছিরসহ আরও ক’জন। তাদের দূর্নীতি-অনিয়মের প্রতিবাদ করায় আমার উপর নাছির স্যার আমাকে খাবার টেবিলে শারীরিক ভাবে নাজেহাল করেছেন। ঘটনা দেখে ফেলায় হোস্টেল সুপার পীষুষকে টার্গেট করেছে। এছাড়া ক’জন স্যারদের নিয়ে গড়া চক্রটি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নামাচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে নাছির স্যারের আনীত অভিযোগ মিথ্যা। ঘটনার সত্য- মিথ্যা যাচাই করলে চক্রটির বিরুদ্ধে অনেক অনিয়ম, দূর্নীতি বেরিয়ে আসবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কিশলয়ের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, বিষয়টি এখন আমার হাতে নেই। স্কুলের সভাপতি ইউএনও বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন।
যোগাযোগ করা হলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফখরুল ইসলাম জানান, শিক্ষক নাছিরের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৩ অক্টোবর তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিশলয়ের একজন সাবেক শিক্ষক জানান, ইউএনও গঠিত তদন্ত কমিটির দু’জনই ইতোমধ্যে অফিস সহকারী সলিমের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এতে করে ভুক্তভোগী সলিম ন্যায় বিচার বঞ্চিত হবে বলে আশংকা রয়েছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।