কক্সবাজারের টেকনাফ থানা এলাকায় পুলিশের অভিযানের পর একাধিক মাদক ব্যবসায়ীর বাড়ি স্থানীয় জনগণ ভেঙে দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মাদক ও মাদক ব্যবসায়ীদের প্রতি ঘৃণা থেকে স্থানীয় জনগণ এ কাজ করেছে বলে দাবি কক্সবাজার জেলা পুলিশের।
মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) রাতে কক্সবাজারের কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীর আলিশান বাড়ি ভাঙার খবর পাওয়া যায়।
কক্সবাজার জেলার পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার রাত ১০টা ৩৩ মিনিটে ফেসবুকে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ ব্যাপারে তথ্য প্রকাশ করেছেন এসপি মাসুদ হোসেন।
তিনি জানান, গত তিন দিনে মাদকবিরোধী ব্যাপক অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদকসসহ অনেক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযান চলাকালে স্থানীয় জনগণ ব্যাপক উৎসাহ প্রদান করেছে।
ফেসবুকে তিনি আরও লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে ইয়াবা ট্যাবলেটের অন্যতম প্রবেশদ্বার হলো কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানা। দেশের সবচেয়ে বড় এবং কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীদের বসবাস এই টেকনাফ থানায়। ব্যাপক পুলিশি অভিযানের মুখে অনেক মাদক ব্যবসায়ী গা-ঢাকা দিয়েছে। তবে আশার কথা হলো স্থানীয় জনতা জেগে উঠেছে। তারা এই অপবাদ থেকে মুক্তি পেতে চায়। গত তিন দিন যাবৎ ব্যাপক অভিযান চালিয়ে পুলিশ অনেক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে। স্থানীয় জনতা অভিযানকালে পুলিশকে ব্যাপক উৎসাহ প্রদান করেছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে স্থান ত্যাগ করার পর স্থানীয় জনতা মাদক ব্যবসায়ীদের আলিশান বাড়ি ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে।’
এদিকে স্থানীয় পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে আমাদের টেকনাফ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সম্প্রতি সময়ে দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযানের কারণে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকার পর ফের নিজ নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছিল টেকনাফের ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়দের কাছে এসব তথ্য পেয়ে আবারও অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। ফলে টেকনাফের শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বাড়িতে হানা দেওয়া শুরু হয়েছে। গত দুই দিনে টেকনাফের জিয়াউর রহমান, আবদুর রহমান, নুরু হক ভূট্টুর ও ইউপি সদস্য মোহাম্মদ এনামুল হকের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। তবে এসময় তারা বাড়িতে ছিল না। এরা সবাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী।
এ ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস বলেন, ‘আইন মেনে ইয়াবা বন্ধ করতে পুলিশ এখন হার্ড-লাইনে রয়েছে। ইতোমধ্যে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের রাজপ্রসাদের মতো বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। এর মধ্যে শীর্ষ জিয়াউর রহমানের বাড়ি থেকে ইয়াবাসহ তিন নারীকে আটক করা হয়েছে।’
ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বাড়ি ভাঙার ঘটানার ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, ‘ইয়াবা গডফাদারদের নির্মূলে যা করণীয়, তা করতে প্রস্তুত পুলিশ। ইয়াবার সঙ্গেই জড়িত কেউ রেহাই পাবে না। তবে অভিযানে পুলিশ কর্তৃক কারও বাড়ি ভাঙার প্রশ্নই আসে না। তবে এ খবর আমিও শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
সূত্র:- বাংলাট্রিবিউন
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।