পর্যটন নগরী কক্সবাজারে রাখাইন সম্প্রদায়ের নতুন অব্দ ১৩৭৬ নববর্ষ উদ্যাপনের সকল প্রস্তুুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। শহরের ঐতিহ্যবাহি আদিবাসী রাখাইন পল্লিতে শুক্রবার (১৭এপ্রিল) বিকাল ৪টা ১ মিনিট ১৫ সেকেন্ড থেকে মহাধুমধামে পালিত হচ্ছে তিন দিনব্যাপী এই ‘সাংগ্রাং’ উৎসব।
শহরের টেকপাড়া, রাখাইনপল্লি, বৌদ্ধমন্দির সড়ক, বড়বাজার, মহেশখালী, টেকনাফ, চকরিয়া, পেকুয়া, হারবাং, রামু, চৌফলদন্ডী, নাইক্ষ্যংছড়ি, বাইশারীসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে মঞ্চ তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
সাজানো মঞ্চে ঐতিহ্যবাহী পোশাকে তরুণ-তরুণীরা মেতে উঠবেন উৎসবে। তাঁরা একে অপরকে মঙ্গলজল ছিটিয়ে স্বাগত জানান নতুন বছরকে। দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা মঞ্চ ঘুরে রাখাইনদের বর্ষবরণ ও বিদায়ের এই জলকেলি উৎসব উপভোগ করেন।
রাখাইন বুড্ডিস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি উ মং ছেন হা জানান, গত বছরের মতো এবারও শহরের ১২টি এবং টেকনাফ, উখিয়া, মহেশখালী, রামু, চৌফলদন্ডী, চকরিয়া, হারবাংসহ জেলার বিভিন্ন স্থানের অন্তত ৪০টি মঞ্চে জলকেলি উৎসব চলবে।
জলকেলি ছাড়াও উৎসবের প্রথম দিন সড়কে শোভাযাত্রা এবং সমাপনী দিনে বৌদ্ধবিহারে গিয়ে সমবেত প্রার্থনার মাধ্যমে রাখাইনরা সবার মঙ্গল কামনা করবেন।
শহরের বাজার ঘাটার ফেমাস টেইলার্স এর স্বত্বাধিকারী খাইংমং জানান, রাখাইনদের নববর্ষের মূল লক্ষ্য হচ্ছে অতীতের সব ব্যাথা-বেদনা গ্লানী ভুলে গিয়ে ভ্রাতৃত্ববোধের মাধ্যমে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়া।
রাখাইন তরুণী মালা বলেন, সারা বছর ‘আমরা এই উৎসবের জন্য অপেক্ষায় থাকি। ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সেজে জল ছিটিয়ে পুরোনো বছরের সব গ্লানি ভুলে নতুন বছরকে বরণ করে নিই। সবার জন্য সুন্দর ও মঙ্গলময় জীবন কামনা করি। শিশু-কিশোরেরা ঢাকঢোল পিটিয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে।’
কক্সবাজার সিটি কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাথিং অং জানান, রাখাইন অব্দের ১৩৭৫ সালকে বিদায় এবং নতুন ১৩৭৬ বছরকে বরণ করে নিতেই মূলত এই ‘সাংগ্রাং’ পোয়ে উৎসব।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার শ্যামল কান্তি নাথ জানান, রাখাইনদের এ জলকেলি উৎসবকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় র্যাব ও বিজিবি সদস্যরাও টহলে থাকবেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।