২৮ নভেম্বর, ২০২৪ | ১৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  যারা ক্লাসে ৭০% উপস্থিত থাকবে না তাদের পরিক্ষায় অংশগ্রহন করতে দেওয়া হবে না- শাহাজাহান চৌধুরী   ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান

কক্সবাজারে ‘লকডাউন’ বাড়ল ৩০ জুন পর্যন্ত, তবে ঘোষণা আসেনি

আনছার হোসেন, কক্সবাজার ভিশন ডটকম:

কক্সবাজার পৌর এলাকায় টানা ১৫ দিন ধরে চলা ‘কঠোর লকডাউন’ আগামি ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান এই সংক্রান্ত চিঠি দস্তখত করে জেলা প্রশাসনের উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছেন। তবে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন এখনও পর্যন্ত আনুষ্টানিক ভাবে লকডাউন বাড়ানোর ঘোষণা দেয়নি।

এ ব্যাপারে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মাসুদুর রহমান মোল্লা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার ও সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমানের সাথে কথা বলেছে কক্সবাজার ভিশন ডটকম।

সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান কক্সবাজার ভিশন ডটকমকে জানিয়েছেন, কক্সবাজার পৌরসভা এলাকায় চলমান ‘কঠোর লকডাউন’ আগামি ২০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য জেলা প্রশাসনকে আনুষ্টানিক ভাবে চিঠি দেয়া হয়েছে।

আজ শনিবার (২০ জুন) বিকেল ৪টা ২২ মিনিটে সিভিল সার্জন ডা. মাহবুব কক্সবাজার ভিশন ডটকমকে বলেন, লকডাউন ৩০ পর্যন্ত কার্যকর করতে একটি দস্তখত করে জেলা প্রশাসনে পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসন এই লকডাউন কার্যকর করবে।

তিনি বলেন, এতক্ষণে ওই চিঠি জেলা প্রশাসনে পৌঁছানোর কথা।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মাসুদুর রহমান মোল্লা কক্সবাজার ভিশন ডটকমকে জানান, লকডাউনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে সিভিল সার্জন। সিভিল সার্জন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর করবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন থেকে লকডাউন সংক্রান্ত কোন চিঠি এখনও ইস্যু হয়নি। অন্য কোন অনলাইনে জেলা প্রশাসনের কোন চিঠি প্রচার হয়ে থাকলে তা সঠিক নয়। মূলতঃ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সারাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের জন্য একটি চিঠি ইস্যু হয়েছে। সেই চিঠিটির অনুবলে সিভিল সার্জন অফিসকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। ওটি কক্সবাজার পৌরসভার লকডাউন সংক্রান্ত কোন চিঠি নয়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার বিকেল ৪টা ১৭ মিনিটে কক্সবাজার ভিশন ডটকমকে জানান, এখন পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানোর কোন নির্দেশনা তিনি পাননি।

তিনি বলেন, সিভিল সার্জন লকডাউন বাড়ানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। তার সিদ্ধান্তই জেলা প্রশাসন বাস্তবায়ন করবে।

প্রসঙ্গত, আজ শনিবার (২০ জুন) রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে কক্সবাজার পৌর এলাকায় টানা ১৫ দিনের ‘কঠোর লকডাউনে’র মেয়াদ শেষ হচ্ছে। কক্সবাজার পৌর এলাকায় জেলার অন্যান্য এলাকার চেয়ে বেশি সংখ্যায় করোনাক্রান্ত রোগী হওয়াতে ১২টি ওয়ার্ডকেই ‘রেড জোন’ করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট শুক্রবার ৬ জুন দিনগত রাত ১২টা থেকে টানা ১৫ দিন লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন।

লকডাউনের ওই সময়ে জেলা প্রশাসনের দেয়া সমস্ত নির্দেশনা মানতে বলা হয়েছিল।

জেলা প্রশাসকের ওই নির্দেশিকা মতে, লকডাউন বেশি কড়াকড়ি করা হয়। পৌরসভার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। মূলত নিজ নিজ ওয়ার্ডেই তারা করোনাভাইরাস রোধে কাজ করছেন। তাদের সহযোগিতা করছে প্রশাসন। পৌর এলাকাজুড়ে জেলা প্রশাসনের বিধি নিষেধ আরোপ করার এই সময়ে কেউ আদেশ অমান্য করলে আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় বলেও জানিয়েছিলেন জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ কামাল হোসেন।

ওই সময় জেলা প্রশাসন ৭টি নির্দেশনা জারি করেছিল।

জেলা প্রশাসকের দেয়া সেই ৭ নির্দেশনা
ক. সব ধরণের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক গণজমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল। সকল জনসাধারণ আবশ্যিকভাবে নিজ নিজ আবাসস্থলে অবস্থান করবেন।

খ. সব ধরণের ব্যক্তিগত ও গণপরিবহণ বন্ধ থাকবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বহনকরী হালকা ও ভারী যানবাহন রাত ৮টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত চলাচল করতে পারবে। কোভিড-১৯ মোকাবেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি গাড়ি চলাচলে জেলা প্রশাসকের অনুমতি গ্রহণ করতে হবে। এম্বুলেন্স, রোগী পরিবহণ, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যত্তিবর্গের (অনডিউটি) পরিবহণ, কোভিড-১৯ মোকাবেলা ও জরুরী সেবা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের গাড়ি এর আওতার বাইরে থাকবে।

গ. সব ধরণের দোকান, মার্কেট, বাজার, হাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। কেবলমাত্র রবিবার ও বৃহস্পতিবার কাঁচা বাজার ও মুদি দোকান স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। ওষুধের দোকান এর আওতার বাইরে থাকবে।

ঘ. কেবলমাত্র কোভিড-১৯ মোকাবেলা ও জরুরী সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সীমিত আকারে খোলা থাকবে। কেবলমাত্র রবিবার ও বৃহস্পতিবার ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ খোলা থাকবে। সব হাসপাতাল, চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও কোভিড-১৯ মোকাবেলায় পরিচালিত ব্যাংকিং সেবা প্রদান এর আওতার বাইরে থাকবে।

ঙ. জরুরি সংবাদ সংগ্রহের জন্য নির্বাচিত সংবাদকর্মীদের রেড জোনে কাজ করার নিমিত্ত কক্সবাজার প্রেস ক্লাব কর্তৃক প্রদত্ত ছবিযুক্ত বিশেষ পরিচিতিপত্র দৃশ্যমান অবস্থায় গলায় ঝুলানো থাকা সাপেক্ষে এবং কোভিড-১৯ মোকাবেলায় রেড জোনে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবীদের উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কক্সবাজার সদর কর্তৃক প্রদত্ত ছবিযুক্ত বিশেষ পরিচিতিপত্র দৃশ্যমান অবস্থায় গলায় ঝুলানো থাকা সাপেক্ষে কাজ করার অনুমতি দেয়া হবে।

চ. সব ধরণের গণপরিবহন টার্মিনাল রেড জোনের বাইরে স্থানান্তর করতে হবে।

ছ. প্রকাশ্য স্থানে বা গণজমায়েত করে কোন প্রকার ত্রাণ, খাদ্য সামগ্রী বা অন্য কোন পণ্য বিতরণ করা যাবে না।

এতদ উদ্দেশ্যে গঠিত ওয়ার্ড কমিটিসমূহ নির্দেশনাবলী কঠোরভাবে বাস্তবায়নে দায়িত্বপালন করবে। কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে জনস্বার্থে এ নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।