কথায় আছে রাজনীতিতে ত্যাগ আর পরিশ্রম কখনো বেঈমানী করে না। ঠিক তারই উজ্জ্বল প্রমান পাওয়া গেছে রামুর কচ্ছপিয়ায়। সম্প্রতি কথিত কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে নানা আলোচনা সমালোচনা। সবচেয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। গত রোববার ফেসবুকে বর্তমান যুবলীগ সভাপতি নজরুল ইসলামকে পুনরায় সভাপতি ও ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের সভাপতি এম সেলিমকে সাধারণ সম্পাদক করার খবর ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি যখন বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের অংশ গ্রহণে শোভাযাত্রা বের করা হয়-তখন আওয়ামী শিবিরে চরম হতাশা নেমে আসে। তাঁরা কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি বিএনপি-জামায়াত অধ্যুষিত কচ্ছপিয়া ইউনিয়নে বিগত সংসদ, উপজেলা ও ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারি কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন সিকদার সোহেলের বহিষ্কারাদেশ। তবে কিছু বিএনপি জামায়াত নেতাকর্মীর পাশাপাশি সেলিম শিবিরে চলছিল উল্লাস।
কিন্তু সোমবার গণমাধ্যমকর্মী হাফিজুল ইসলাম চৌধুরীর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন মুহুর্তেই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ’সহ সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে নেমে আসে শান্তির পরশ এবং অন্য পক্ষে অন্ধকার। কক্সবাজার জেলা যুবলীগের দপ্তর ও রামু উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নীতিশ বড়ুয়ার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল ‘কচ্ছপিয়া যুবলীগে সম্পাদক পদে সোহেল সিকদার’ই বহাল’। এই প্রতিবেদনটি গণমাধ্যমকর্মী হাফিজুল ইসলাম চৌধুরীর ফেসবুকে প্রচার হওয়ার পর বৃষ্টির মত লাইক ও মন্তব্য পড়তে থাকে। পাশাপাশি অসংখ্য শেয়ারও হয়। তাঁর ফেসবুক ও অনলাইন পোর্টাল থেকে খবরটি পড়ে বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয় মিষ্টি বিতরণ। তবে এখনো এম.সেলিমের নেতৃত্বে যুবলীগের দলীয় গঠনতন্ত্র বিরোধী অপপ্রচার চলছে এলাকায়।
এদিকে গণমাধ্যমকর্মী হাফিজুল ইসলাম চৌধুরীর ফেসবুকে প্রচারিত ‘কচ্ছপিয়া যুবলীগে সম্পাদক পদে সোহেল সিকদার’ই বহাল’ শিরোনামের প্রতিবেদনটিতে সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমলের একান্ত সচিব মিজানুর রহমান মন্তব্যে লিখিছেন ‘ত্যাগ আর রাজপথ কখনো বেঈমানী করেনা’। সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমলের ব্যক্তিগত সচিব মো.আবু বক্কর লিখেছেন ‘ঘরের ছেলে ঘরে, প্রিয় নেতাদের ভালবাসায় কর্মীরা, আজীবন প্রস্তুত আপনাদেরন সঠিক নির্দেশনা পালন করতে। প্রিয় অভিভাবকদের ধন্যবাদ-প্রিয় হাফিজকেও’।
উপজেলা ছাত্রলীগের অন্যতম নেতা সাদ্দাম হোসেন লিখেছেন, ‘আমরা সব সময় সংগঠনের ত্যাগি, পরিশ্রমী এবং তৃণমূলের পরিক্ষিত মুজিব সৈনিকদের পক্ষেই ঐক্যবদ্ধ’। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ফাহিম ইকবাল খাইরু লিখেছেন, ‘ত্যাগি কর্মীদের হারালে, আগামী নির্বাচনে আমাদের পরাজয় নেমে আসবে। কচ্ছপিয়া যুবলীগে সোহেল সিকদারের বিকল্প নেই’।
মনছুর আলী নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘কালের বিবর্তনে বিএনপি জামাতের মূল টার্গেট এখন যুবলীগ। তাঁরা মনে করে যুবলীগকে গায়েল করতে পারলে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে গায়েল করা যাবে। তাই তৃণমূলে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে’।
কচ্ছপিয়ার ছাত্রলীগ নেতা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নুরুল আবছার লিখেছেন, ‘কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের নেতৃত্বে সোহেল সিকদারের বিকল্প কাউকে চিন্তা করা যুবলীগকে পঙ্গু করার শামিল!’। গর্জনিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বেলাল উদ্দিন সাহেদ লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ রামু উপজেলা যুবলীগের সবাইকে’। কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন সিকদার লিখেছেন, ‘আমার চোঁখে জল’।
সোহেল সিকদার সমর্থক গোষ্ঠী স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আমারা অথিত বলতে কিছু বুঝিনা। কারণ, যা গেছে তা তো গেছেই। আবার ভবিষ্যৎ বলতেও কিছু মানিনা। কারণ, প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে সকাল-ই দেখি। অর্থাৎ সকাল দেখা মানে বর্তমান। সুতরাং আমরা বর্তমান-ই বুঝি। সোহেল সিকদার এর নামের আগে অথিত নামের ‘সাবেক’ শব্দটি যাতে দেখতে বা শুনতে না হয়। অর্থাৎ,”সাবেক যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন সোহেল”এই রকম যাতে দেখতে না হয়। সোহেল সিকদার কে আমরা ২৪ ঘন্টায় ২৬ঘন্টা, মাসে ৩৩দিন, বছরে ১৩মাস, প্রতিটি ক্ষনেই-ই চায় চায় তাঁর যোগ্য পদে।
গর্জনিয়ার ছাত্রলীগ নেতা ইকবাল হোসাইন স্বাধীন লিখেছেন, ‘কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের হাজার হাজার কর্মী গড়ার কারিগর, কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের ত্যাগি, পরিশ্রমী, সাহসী, বিপ্লবী সাধারন সম্পাদক, যিনি যুবলীগকে সুসংগঠিত করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন-প্রিয় নেতা সোহেল সিকদার’।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন সিকদার সোহেল বলেন, ‘রামু-কক্সবাজার আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রিয়াজ উল আলম ও সাধারণ সম্পাদক নীতিশ বড়–য়ার হাত ধরে কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ এগিয়ে যাবে। দলের নীতি ও গঠনতন্ত্রের বাইরে আমি রাজনীতি করি না।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।