শফিক আজাদ,(উখিয়ার বালুখালী থেকে ফিরে): সম্প্রতি মিয়ানমার সেনা ও বিজিপি’র নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গারা নিজ জন্মভূমি ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয় উখিয়ার বিভিন্ন স্থানে। তাবু করে ছড়িয়ে ছিঠিয়ে আশ্রয় নিলেও চরম অভাব অনটন, মানবিক বিপর্যয় দেখা দেয় রোহিঙ্গা ঝুপড়িতে।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় উখিয়ার বালুখালী তেলিপাড়া খালে একটি লাশ ভাসতে দেখে খালের পাড়ে তাবু করে বসবাসরত রোহিঙ্গা মিয়ানমারের মংডু সিকদারপাড়া বাসিন্দা আব্দু ছত্তারের ছেলে নুর মোহাম্মদ (৫০)। সে বলেন, ওই অজ্ঞাত লাশটির বয়স আনুমানিক পয়ষট্টির কাছাকাছি। পাহাড়ী ঢলের পানিতে আমরা লাশটি ভেসে যেতে দেখে বাঁশ দিয়ে ধরে খালের পাড়ে নিয়ে আসি। পরে কাপনের কাপড় জোগাড় করতে না পারার ভয়ে লাশটি পুনরায় পানিতে ভেসে দিই। একই কথা শতশত প্রত্যক্ষদর্শী রোহিঙ্গাদের। তবে লাশটির কোন পরিচয় বা অভিভাবক খোঁজে পাওয়া যায়নি।
গত ৩ দিনের বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢলে উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, কাস্টমস, থাইংখালী ঢালারমূখ, থাইংখালী তাজনিমারখোলা, হাকিমপাড়া, বাঘঘোনা এবং পালংখালীর শফিউল্লাহ কাটায় অন্তত ১০হাজার রোহিঙ্গা তাবু পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে অর্ধলক্ষাধিক রোহিঙ্গা ঘরবাড়ী ছেড়ে খোলা আকাশের নিচে বন,জঙ্গল,পাহাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এসব পরিবার গুলোতে দেখা দিয়েছে খাদ্য, ঔষুধ, পানি এবং বাসস্থান সংকট। যার ফলে মানবিক বিপর্যয়ের সম্মূখীন হয়ে পড়েছে রোহিঙ্গারা।
উল্লেখ্য যে গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারে সহিংসতায় এই পর্যন্ত ১২জন সে দেশের নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য ও ৩হাজারের অধিক রোহিঙ্গা নারী,পুরুষ,শিশু মারা গেছে। এতে জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে ৪ লাখ ৯হাজার রোহিঙ্গা। তবে এই সংখ্যা মানতে নারাজ স্থানীয় উখিয়াবাসী। তাদের তথ্যমতে এই পর্যন্ত উখিয়ায় প্রায় ৫লক্ষাধিক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে উখিয়ার বিভিন্ন স্থানে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।