২৭ নভেম্বর, ২০২৪ | ১২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

কুতুপালংয়ের ইয়াবা ডন জিয়াবুলের অপকর্মের শেষ কোথায়? গ্রেফতারে পুলিশের সাড়াঁশী অভিযান

কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরের ইয়াবা ডন বার্মাইয়া জিয়াবুলের ইয়াবা ব্যবসা ছাড়াও রয়েছে বহুমুখী অপকর্ম। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক হলেও সে পারেনা এমন কোন কাজ নেই। সমপ্রতি সময়ে জিয়াবুলের ইয়াবার চালালে পুলিশ ভাগ বসালেও ইয়াবার চালান পাচার থেমে নেই। তার ইয়াবার চালান সহ এক বহনকারী ঘুমধুম পুলিশের হাতে আটক হলেও বাদ পড়েনি মামলা থেকে। মামলা রুজু হওয়ার পর -পরই আত্মগোপনে চলে যায় সে। কুতুপালংয়ের প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেটের ছত্রছায়ায় জিয়াবুল দিন -দিন বেপরোয়া আচরণ করছে। ঘুমধুম পুলিশ হন্য হয়ে খুঁজছে তাকে। ইয়াবা জিয়াবুল কে গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলে জানান,মামলার বাদী ঘুমধুম তদন্ত কেন্দ্র পুলিশের এএসআই জমিরুল ইসলাম। তিনি জানান,

জিয়াবুল কুতুপালং বাজারে যে বাসায় ভাড়া থাকে, সে বাসা সহ একাধিক স্থানে অভিযান চালিয়েছে গ্রেফতারে। দীর্ঘদিন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে ইয়াবা ব্যবসা করলেও অবশেষে ভাগ বসায় নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম তদন্ত কেন্দ্র পুলিশ। গত সোমবার দিবাগত রাত ৯ টায় মিয়ানমারের রাইম্যাখালী থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবার চালান নিয়ে তুমব্রু সীমান্ত পাড়ি দিয়ে রাতের পাহাড়ি পথ বেয়ে   কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে আসছিল নুরুল ইসলাম নামক মিয়ানমারের এক যুবক। ঘুমধুম তদন্ত কেন্দ্র পুলিশের একটি দল গোপন সুত্রে খবর পেয়ে ঘুমধুম রাবার বাগান সংলগ্ন উৎপেতে থেকে ইয়াবার চালান বহনকারীকে আটক করে। ইয়াবাসহ আটক মিয়ানমারের তুমব্রু এলাকার নাগরিক নুরুল ইসলামের দেহ তল্লাশি চালিয়ে ১০০০ পিচ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। ওই সময় আটক নুরুল ইসলাম সীকারোক্তিতে বলেন ইয়াবা গুলো কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবির ও বাজারে অবস্থানকারী জিয়াবুল হকের। সে কুতুপালং বাজারে দ্ধিতল একটি বিল্ডিংয়ের উপর তলায় ভাড়ায় বসবাস থাকে।  তার স্ত্রী হালিমা রেজিস্টার্ড শিবেরের হলেও কুতুপালংয়ে ভাড়া বাসায়ও থাকে।স্ত্রী হালিমা রেজিস্টার্ড হলেও জিয়াবুল রেজিস্টার বুকে তালিকাভুক্ত হয় মোটা টাকার বিনিময়ে। ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতাদের বশে এনে রেজিস্টার্ড তালিকাভুক্ত হয়। তাতে জিয়াবুলের বাবার নাম পাল্টে হয়ে যায় দিল মোহাম্মদ। মাতার নাম নুর আয়েশা। এমআরসিপি নং -২০৩৫২,ব্লক -ডি,শেড নং -১৯,কক্ষ নং -৪ /৫। তার আসল পিতা -মাতা ও ঠিকানা রয়েছে একাধিক। বিভিন্ন স্থানে বহু ধরণের ছন্দ নাম ব্যবহার করে থাকে। ওই জিয়াবুল মিয়ানমার থেকে পাড়ি দিয়ে এক সময় মালয়েশিয়া সহ মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশে সফর করে রোহিঙ্গাদের নামে অর্থ সংগ্রহ করতো। বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করে এদেশে চলে এসে ঢাকা, চট্রগ্রাম, কক্সবাজার, উখিয়ার কুতুপালং ও টেকনাফের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে মরণ ঘাতক ইয়াবা ব্যবসা করে আসছিল। পাশাপাশি মালয়েশিয়া,সৌদি আরব সহ বহু দেশে রোহিঙ্গা মানব পাচার করতো। ঢাকার ফকিরাপুল, নয়া পল্টন -পুরানা পল্টন, চট্রগ্রামের আন্দরকিল্লা ,চকবাজার, আগ্রাবাদ ও কক্সবাজারে বহু জনশক্তি রপ্তানি কারক প্রতিষ্ঠান (এজেন্সি)র সাথে রয়েছে দহরম মহরম সম্পর্ক। বিদেশে মানবব পাঠাতে রোহিঙ্গাদের নামীয় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরী করত নাইক্ষ্যংছড়ির সদর ইউপির চেয়ারম্যান প্রয়াত হাজী ছৈয়দ আলম এর নিকট থেকে। যেহেতু ওই ছৈয়দ আলম চেয়ারম্যান নাকি জিয়াবুলের দুরতম সম্পর্কের ভগ্নিপতি হয়। এভাবে নানা স্থানে বলে বেড়াত। একেকটি জন্ম সনদ তৈরিতে রোহিঙ্গাদের নিকট থেকে আদায় করত ৩০ -৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। উক্ত জিয়াবুল যেখানে যে সময় অবস্থান করে,সেখানকার প্রভাবশালী লোকজনের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে অবৈধ ব্যবসা নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতো। ব্যবহার করতো ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী লোকজন। স্থানীয়দের ছত্রছায়ায় থেকে দাপিয়ে বেড়ায় রোহিঙ্গা জিয়াবুল। রাত গভীরেও ব্যবহার করে মোটর সাইকেল। ইতিপূর্বে তার বৃহৎ ইয়াবার চালান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হলেও একটি প্রভাবশালী চক্রের তদবিরে মোটা টাকার বিনিময়ে ইয়াবা বাহী নোহা গাড়িটি কৌশলে ছাড়িয়ে আনে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। ধারাবাহিকতায় কুতুপালং বাজারে অবস্থান নিয়ে ইয়াবা ব্যবসা চালাচ্ছিল। গত সোমবারে জিয়াবুলের ইয়াবার বৃহৎ চালান আসার খবর পেয়ে পুলিশ আগে থেকে জংগলে উৎপেতে থাকে। ভাগ্যিস ছোট চালান পুলিশের হাতে ধরা পড়লেও বৃহৎ চালান পিছন দিক থেকে কৌশলে সটকে পড়ে। জিয়াবুলের ইয়াবার চালান কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে যে সময় ঢুকবে, তখনই ঘুমধুম, তুমব্রু ও কুতুপালং এলাকার বহু ইয়াবা সিন্ডিকেটের সদস্য মোটর সাইকেল মহড়া দিয়ে প্রশাসনের টহল দলের গতিবিধি ও নজরদারি লক্ষ্য করতো। ঠিক সোমবারের ঘটনা একই হলেও ফেঁসে যায় পুলিশের জালে। ইয়াবার চালানসহ জিয়াবুল এবং তার সিন্ডিকেটের লোকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও আটক করা হয় জিয়াবুলের ইয়াবার চালান বহনকারী মিয়ানমার নাগরিক নুরুল ইসলাম কে। পরদিন মংগলবার আটক ইয়াবার বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় মামলা রুজু করা হয়। মামলা নং -০৫ /১৭ ,তারিখ -২৫ /০৪ /২০১৭ ইংরেজী। ধারা ১৯৯০ইং সনের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯ (১)এর ৯ (খ) তৎসহ বৈদেশিক নাগরিক আইনের ১৪ ধারা। এতে ইয়াবাসহ আটক মিয়ানমারের তুমব্রুর আনু মিয়ার ছেলে নুরুল ইসলাম ও মিয়ানমারের তুমব্রুর রাইম্যাখালী খাল কাটার মুখ সংলগ্ন মোঃ হাকিম ওরফে শামসুল আলম ,দিল মোহাম্মদ  প্রকাশ বলা “র ছেলে কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবির বাজারে ভাড়া বাসায় অবস্থানরত জিয়াবুল হক কে আসামী (পলাতক) করা হয়। আটক আসামী নুরুল ইসলাম কে মংগলবার ১হাজার পিচ ইয়াবা সহ নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় সোপর্দ করা হয় বলে অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া ঘুমধুম তদন্ত কেন্দ্র পুলিশের ইনচার্জ মোঃ এরশাদ উল্লাহ জানান।উক্ত জিয়াবুল দীর্ঘদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোঁখ ফাঁকি দিয়ে অস্ত্র ব্যবসা,মানব পাচার, জংগী কানেকশন ও ইয়াবা পাচারে তৎপর ছিল।রোহিঙ্গা জিয়াবুল হক ইয়াবা আটকের মামলায় আসামী হলেও থেমে নেই তার অপকর্ম। জিয়াবুল কিশোর বয়সে এপার বাংলায় পাড়ি দেয়। উখিয়ার কুতুপালং ও টেকনাফের লেদা -মুুছনী রোহিঙ্গা শিবিরে রয়েছে তার আত্মীয়। জিয়াবুল ইয়াবা ব্যবসা ছাড়াও এদেশে বসবাস করা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে না ফেরার পক্ষে জংগী তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ে। বহিঃবিশ্বে বসবাস করা রোহিঙ্গা ও সাবেক আরএসওর সমর্থিত এনজিওদের নিকট থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে মাঝ পথে মালয়েশিয়া সহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমায়। বাংলাদেশী পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশ পাড়ি দেওয়া যুবক এক সময় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন এনজিও সংস্থা থেকে  রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করে বাংলাদেশে পাঠাতো সে। তার পাঠানো অর্থ ব্যয় করা হতো জংগী রোহিঙ্গাদের রসদ সামগ্রী প্রদান, রোহিঙ্গাদের জংগী প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহ করার কাজে। এভাবে আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করে জিয়াবুল হয়ে যায় দুর্ধর্ষ রোহিঙ্গা নেতা। নাইক্ষ্যংছড়ির এক জংগী সম্পৃক্ত আওয়ামীলীগ নেতা ও কক্সবাজারের শীর্ষ জংগী নেতা হাফেজ ছালাউল এর সাথে নিয়মিত বৈঠকে বসতো। গত কয়দিন আগেও কক্সবাজারের অভিজাত এক হোটেলে রুদ্ধতার বৈঠক করে নাইক্ষ্যংছড়ির ওই জংগী আওয়ামীলীগ নেতার সাথে। আন্তর্জাতিক ভাবে কোটি -কোটি টাকা রোহিঙ্গাদের জন্য সংগ্রহ করে এদেশে চলে আসে সে। জংগী তৎপরতা থেকে শুরু করে রোহিঙ্গা জংগীদের বেতন -ভাতা ও অস্ত্রের যোগানদাতা বনে যান। মিয়ানমার সরকার বিরোধী বলয় সৃষ্টি করতে কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবির কেন্দ্রিক গড়ে তুলেন অনন্ত ২ শতাধিক রোহিঙ্গার সমন্বয়ে ইয়াবা সিন্ডিকেট। মিয়ানমার ও কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবির কেন্দ্রিক ইয়াবার বিশাল চালান মজুদ করে এদেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করতে থাকে জিয়াবুল।একাজে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ সহযোগি রয়েছে কুতুপালংয়ে। খুব অল্প সময়েই কুতুপালংয়ের প্রভাবশালী চক্রের আশ্রয় -প্রশয়ে থেকে চালাতে থাকে হরদম ইয়াবা ব্যবসা।ইয়াবা ব্যবসার আয় থেকে লাখ -লাখ টাকা ব্যয় করা হয় জংগী রোহিঙ্গাদের জন্য। এখানকার প্রভাবশালী লোকজনের সাথে চলাফেরা করতে ব্যয় করা হয় লাখ -লাখ টাকা। এই জিয়াবুল হক সম্পর্কে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গোপন এবং প্রকাশ্যে নিরপেক্ষ তদন্ত করলে আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে। জানা যাবে বহু অজানা তথ্য।এবিষয়ে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের জানান, জিয়াবুল বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে। কুতুপালং রেজিস্টার্ড শরনার্থী শিবির ইনচার্জ শামসুদৌজ্জা জানান,দেশদ্রোহী কর্মকাণ্ডে জড়িত কেউ ছাড় পাবেনা।তার বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে। রোহিঙ্গা জিয়াবুল কে গ্রেফতার করলে তার বহু অপকর্মের অজানা তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে সচেতন মহলের দাবী।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।