২৬ নভেম্বর, ২০২৪ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

কৃষক বাবার ছেলে সানি এখন জজ

 

 

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের প্রত্যান্ত অঞ্চলের অকৃত্রিম মাটির মানুষ,সজ্জন প্রিয়
কৃষক বাবার ছেলে মাহমুদুল হক সানী। সানী সহপাঠীদের
দেওয়া আদরের বহিঃপ্রকাশ নাম। সহকারী জজ পদে মেধা তালিকায় ৯ম স্থান অর্জন করেছে। ফলে
উৎফুল্ল ঘুমধুম বাসী। উদ্বেলিত আপামর জনতা। খুশিতে আত্মাহারা প্রিয় বাবা -মা ,ভাই -বোন আর আত্মীয় পড়ঁসীরাও।গর্বিত ঘুমধুম ইউনিয়ন পেরিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি
উপজেলা বাসী। জানা গেছে ঘুমধুম ইউনিয়নের সেকালের ঐতিহ্যবাহী শিকদার বংশের কৃষক আবদুল আলী প্রকাশ হলুর পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থা অন্যদের তুলনায় দুর্বল ছিল। এরপরও ছেলে -মেয়েদের সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে অদম্য ইচ্ছাশক্তি ছিল প্রবল। যেমন প্রতিজ্ঞার তেমনি প্রতিফলন।৪ র্থ সন্তান মাহমুদুল হক সানী ইসলাম শিক্ষার সমন্বয় রেখে পাঠশালায় হাতেখড়ি প্রথম ঘুমধুম মিশকাতুন্নবী (সাঃ) দাখিল মাদ্রাসায় ভর্তি। এবতেদায়ী শিশু শ্রেণী থেকে শুরু শিক্ষা জীবন। অদম্য মেধাবী মাহমুদুল হক সানী ২০০৭ সালে দাখিল পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাক্ষর রাখেন। পেয়ে যান জিপিএ:৫ (এ+) পান। উচ্চ শিক্ষার লক্ষ্য পাড়ি দেন গ্রাম ছেড়ে চট্রগ্রাম শহরে। ভর্তিযুদ্ধে একটি চট্রগ্রাম সরকারী কলেজে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে একাদশে পাঠক্রম। ২০০৯ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় ফলাফলে প্রমাণ করলেন নিজের মেধা। সাফল্যের মুখে জিপিএ:৫(এ+) পাওয়ার গৌরব অর্জন করেন। পরবর্তী চট্রগ্রাম বিশবিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় অবস্থান। চবির আইন -প্রশাসন বিভাগে পাঠ অর্জনের যাত্রা। অনার্স -মাস্টার্স কৃতিত্বের সহিত ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে বাবা -মায়ের প্রিয় স্নেহাস্পর্শে চলে যান তারুণ্যের
মেধাবী মুখ মাহমুদুল হক সানী। জীবন যুদ্ধের কিংবা পেশাগত জীবনে পদার্পনের অদম্য ইচ্ছা শক্তির অভিপ্রায়ে খুজঁতে থাকেন কাংখিত কর্ম। যেমনি প্রতিজ্ঞা তেমনি প্রত্যাশার আলো। গত ২০১৬ সালে দেশের ১০ সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন। সামপ্রতিক সময়ে প্রকাশ করা হয় ফলাফল। এতে সহকারী জজ পদে শুধু উত্তীর্ণ হন তা নয়,মেধা তালিকায় ১০ এর মধ্যে স্থান পান ৯বম -এ। এবার নিজেকে আবিষ্কার করলেন” মহামান্য,অনার,মাই লর্ড “হিসেবে।দেশের ১০ম সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফলে মিয়ানমার সীমান্ত লাগোয়া অজঁ পাড়াগাঁর কৃষক আবদুল আলী -রত্নাগর্ভা মাতা ভেলুয়া খাতুন দম্পতির ৪ র্থ সন্তান মাহমুদুল হক সানী। সে তার শৈশব পেরিয়ে শিক্ষার পাঠ না চুকাতেই আলো আর প্রত্যাশর ঝলকানী। সহকারী জজ হিসেবে মেধা তালিকায় স্থান পেয়ে পার্বত্য বীর বান্দরবান সংসদীয় আসন থেকে ৫ বারের নির্বাচিত পার্লামেন্ট মেম্বার মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বাবু বীর বাহাদুর উশৈচিং এর সানিধ্যে চলে যান। সৌজন্য সাক্ষাতে নিজের ইচ্ছা শক্তি প্রকাশ করে মন্ত্রী মহোদয়ের নিকট তুলে ধরেন। এসময় সানীকে পেশাগত বিষয়ে সততা, নিষ্ঠা,দেশপ্রেম আর মাতৃবোধের কথা তুলে ধরে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেওয়ায় মন্ত্রী মহোদয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন সানী।তার জজ হওয়ার খবরে পুরো ঘুমধুম বাসী ছিল উৎফুল্ল। উৎসবে -মাতোয়ারায়, ফুলেল শুভেচ্ছায় মাহমুদুল হক সানী কে বরণ করে বিশিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সহপাঠী শুভাকাংখী, সুহৃদ সজনরা। স্যালুট পার্বত্য অঞ্চলের আলোকিত মুখ মাহমুদুল হক সানী। এক প্রতিক্রিয়ায় সানীর বাবা আবদুল আলী হলু বলেন আমি আজ বিষম খুশী। আমার বাবার উজ্জ্বল মুখখানি দেখেছি,তাতেই খুশী। আমার আর কোন চাওয়া -পাওয়া নেই। মাতা ভেলুয়া খাতুন জজ কি? তেমন একটা মানে বুঝেন না! ছেলের খুশীতে সেও খুশী। সানীর আপন সহোদর বড় ভাই স্কুল শিক্ষক ছৈয়দুর রহমান হীরা শুকরিয়া আদায় করে বলেন,ছোট ভাইয়ের আলোকুজ্জল. মুখখানি দেখেই আনন্দিত। ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন মাহমুদুল হক সানী শুধু ঘুমধুম নয় জেলাবাসীর সম্পদ। তার মাধ্যমে আমরা ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করবো ইনশাআল্লাহ। ঘুমধুম পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ এরশাদ উল্লাহ বলেন সানী ঘুমধুম বাসীর আলোকবর্তিকা। তার প্রতি শুভকামনা রইল।এক প্রতিক্রিয়ায় মাহমুদুল হক সানী বলেন, ঘুমধুম বাসী যেভাবে ভালবাসা,আন্তরিকতা দেখিয়েছে,তাতেই আমি সফল। আমি আজীবন ঘুমধুম বাসীর কল্যাণে যথাসম্ভব ইতিবাচক ভুমিকা রাখার সদয় সচেষ্ট থাকবো। প্রিয় বাবা -মা,আমার প্রানপ্রিয় শিক্ষক মাও.সেলিম উল্লাহ হুজুর সহ অপরাপর সকল পর্যায়ের শিক্ষক গণ, বড় ভাই – বোন,আত্মীয়সজন, পড়ঁসী সকলের অবদান কৃতজ্ঞতা ও পরম শ্রদ্ধার সাথে স্নরণ করছি, স্নরণ করবো আমৃত্যু।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।