উখিয়ার ব্যস্ততম ও বাণিজ্যিক ষ্টেশন কোটবাজারে চৌরাস্তার মোড়ের যানজট যেন নিত্য দিনের নিয়মে পরিণত হয়েছে। উক্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্ব পালনে না থাকায় তীব্র যানজটে কবলে পড়ে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে জন-জীবন। প্রতিদিন বিশেষ করে সন্ধার পর থেকে পর্যটক ও টেকনাফ স্থলবন্দরের মালবাহী বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়ে থাকে। পর্যটক ও মালবাহী গাড়ির বহর অনেক সময় উভয় দিকে ২ থেকে ৩ কিলোমিটার পর্যন্ত দেখা যায়।
যানজট নিরসনে লক্ষ্যে কোটবাজারের জন্য একজন ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগ দিলেও উক্ত ট্রাফিক পুলিশ তার কর্মস্থলে দেখামেলেনা। মাঝে মধ্যে দেখা গেলেও তা হয় ক্ষণস্থায়ী বিজলী চঁমকানোর মত এই আছে এই নেই। অভিযোগ উঠেছে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন না করে বৈধ-অবৈধ বিভিন্ন গাড়ী থেকে গণহারে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত থাকায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
উখিয়া উপজেলার বণিজ্যিক ও জনবহুল কোটবাজার স্টেশনটি উপজেলার ৫ ইউনিয়নের মধ্যে ৪ ইউনিয়ন কেন্দ্রীক এবং চৌরাস্তার মোড় হওয়াতে উক্ত স্টেশনে যানজট লেগে থাকে সারাক্ষন, যার কারনে প্রয়োজন হয়ে পড়েছে একজন সু-দক্ষ ট্রাফিকের। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ট্রাফিক চন্দঁন কুমার নামে কোটবাজারের যানজট নিরসনের দায়িত্ব দেওয়া হলেও তীব্র যানজটের সময় তাকে খুঁজে পাওয়া দুস্কর হয়ে পড়ে। যার কারনে স্থানীয় অনেক সচেতন ব্যক্তিদের লাটি হাতে যানজট নিরসনের চেষ্টা করতে দেখা যায় অনেক সময়। অভিযোগ উঠেছে বিগত সময়ের সকল ট্রাফিক কে পেছনে ফেলে ট্রাফিক পুলিশ চন্দঁন কুমার চাঁদাবাজির শীর্ষ আসন দখল করে কোটবাজারকে যানজটের নগরীতে পরিনত করেছে। ট্রাফিক পুলিশ চন্দঁন চট্টগ্রাম সাতকানিয়া উপজেলার বাসিন্ধা হওয়ায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আজম নাছির সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার দাপটের ভয় দেখিয়ে প্রভাববিস্তার করে চলছে। গত কয়েক মাস পূর্বে ট্রাফিক পুলিশ চন্দঁন তীব্র যানজটকে উপেক্ষা করে এক হোটেলের পেছনে দান্দাবাজীতে ব্যাস্ত থাকায় স্থানীয় এক যুবক যানজট মুক্ত করার পর যানজটের ব্যাপারে সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালনের অনুরোধ করায় তাকে হেনস্তা করে ছাড়ে। এ ছাড়াও অনেক সময় দেখা যায় তার অনুপস্তিতিতে ট্রাফিক সার্জেন শেখ আবু সাঈদ লাটি হাতে কোটবাজারের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে দৌড়া দৌড়ি করছে যানজট নিরসনের জন্য। এক প্রকার অতিষ্ট হয়ে নিজ উদ্যোগে একজন কমিনিউটি পুলিশ কোটবাজার স্টেশন যানজট নিরসনে দিলেও যথাযত পারিশ্রমিক না পাওয়ায় সেও চলে গেছে। এদিকে প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১ টা এবং বিকাল ৪ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন করার নিয়ম থাকলেও ঐ ট্রাফিক পুলিশ কোটবাজারে দায়িত্ব পালন না করে উখিয়া সদর স্টেশন, মরিচ্যা বাজার, সোনার পাড়ার বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে টমটম ও সিএনজি চালকদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে আসছে বলে একাধিক গাড়ি চালক ও মালিকগণ গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। এ নিয়ে সার্জেন (টিএসআই) শেখ আবু সাঈদের সাথে মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। ট্রাফিক পুলিশের জনবল সংকট তাকায় নিরুপায় হয়ে তাকে এখনো এখানে রাখা হয়েছে। হবে শীঘ্রই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উচ্চ মহলে অবহিত করা হয়েছে।
উখিয়া থানা বহুমুখী মটর চালক সমবায় সমিতির সভাপতি মোঃ শাহজাহান বলেন, কোটবাজারে যানজটের মূল কারণ গাড়ি চলাচলের অনুপাতে স্টেশনের উভয় পার্শে গড়ি পার্কিংয়ের কোন সু-ব্যবস্থা না থাকা। এ ছাড়াও কিছু অদক্ষ আনাড়ি চালক যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করার পাশা-পাশি নিয়োগকৃত ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্ব পালন না করে ব্যাপক চাঁদাবাজীতে লিপ্ত থাকায় ভয়াবহ যানজটের অন্যতম কারন।
কোটবাজারে ট্রাফিক পুলিশ যথাযত দায়িত্ব পালন না করে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত থাকা ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে সচেতন মহল।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।