মুরগিকে অনেকে বাকশক্তিহীন বলে মনে করেন। তাদের ধারণা, সুস্বাদু ডিম পাড়ার প্রতিভা ও মাংস দেওয়ার চেয়েও কম বুদ্ধি এবং অন্য পাখিদের চেয়ে সামান্য বাকশক্তি রয়েছে এদের।
মুরগিকে অনেকে বাকশক্তিহীন বলে মনে করেন। তাদের ধারণা, সুস্বাদু ডিম পাড়ার প্রতিভা ও মাংস দেওয়ার চেয়েও কম বুদ্ধি এবং অন্য পাখিদের চেয়ে সামান্য বাকশক্তি রয়েছে এদের।
বিশ্বের সবচেয়ে সাধারণ এ পাখিটি আসলে বুদ্ধিমান ও সংবেদনশীল। মুরগি এমনকি গণনা, আত্মনিয়ন্ত্রণসহ আত্মসচেতনতার কিছু স্তর প্রদর্শন এবং পরস্পরের সঙ্গে নিপূণভাবে কৌশলী আচরণ করতে সক্ষম।
বিশ্বজুড়ে তাদের সংখ্যা ১৯ বিলিয়নেরও বেশি, যা সর্বোচ্চ সংখ্যক মেরুদণ্ডী প্রজাতির একটি। এখনো অনেক মানুষের পাখিটির সঙ্গে সামান্য যোগাযোগ আছে অথবা কোনো যোগাযোগ নেই, অন্তত যখন তারা জীবিত। বস্তুত, মুরগি এতোটাই বুদ্ধিমান যে, জীবন্ত অবস্থায় তারা একটি সীমিত সংখ্যায় মারা যায়।
মুরগি সম্পর্কে এতোদিন কিছু অদ্ভুত অনুমান ছিল মানুষের। সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা দীর্ঘদিনের সেসব ধারণা দূর করতে বাধ্য।
অংক কষে গণনায় ব্যস্ত মোরগ! (সংগৃহীত ছবি)
অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেইড বিশ্ববিদ্যালয়ের সুসান হ্যাজেল ২০১৫ সালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলেন, ‘আমি কখনোই ভাবিনি যে, মুরগি যথেষ্ট বুদ্ধিমান ও বেশ দ্রুত শিখতে পারবে। মাত্র দুই ঘণ্টার প্রশিক্ষণের পর দেখেছি, মুরগি আমাদের চিন্তার তুলনায় অনেক স্মার্ট’।
ইতালির প্যাডোভা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোজা রুগানি ও তার সহকর্মীরা গবেষণা শেষে দেখিয়েছেন যে, মুরগি গণনা, যোগ-বিয়োগ ও মৌলিক পাটীগণিত সম্পাদন করতে পারে। তরুণ বয়স থেকেই মুরগির সংখ্যাসূচক এ কাজগুলোর শক্তিশালী উপলব্ধি তৈরি হয়, এমনকি যদি তাদের অভিজ্ঞতা সীমিতও থাকে’- বলেন রুগানি।
২০০৫ সালে যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিওভান অ্যাবেয়েনিঘির নেতৃত্বে পরিচালিত সমীক্ষা অনুসারে, মুরগিরা কল্পনা করতে সক্ষম, ভবিষ্যতে কি ঘটবে। খাদ্যের একটি বড় অংশ নিরাপদ করতে তাদের ‘মানসিক সময় ভ্রমণ’ সম্পাদনের কিছু ক্ষমতা থাকতে পারে।
মুরগিও গণনা করতে জানে, অংক কষে! (সংগৃহীত ছবি)
‘মুরগির জটিল সামাজিক জীবন আছে। মোরগরা খাবারের জন্য বিশেষ করে সুস্বাদু লোকমা খুঁজে বের করে মুরগিকে খাওয়ায়। সে প্রায়ই নাচ দিয়ে কাছাকাছি থাকা নারী প্রজাতিকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে’- বলেন অ্যাবেয়েনিঘি।
গত ছয় বছর ধরে এ গবেষণা অব্যাহত রয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়েরই জোয়ান এডগার তার সহকর্মীদের নিয়ে গবেষণা করছেন। তারা বলছেন, মানুষের খাদ্য হওয়ার ব্যক্তিগত অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা থেকে মুরগিরা অনেক কিছু শিখেছে।
চলতি জানুয়ারি মাসে প্রাণী গবেষক লোরি মেরিনো মুরগির চেতনা নিয়ে বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনা শেষে বলেন, তারা একে অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল। মুরগি খুব যোগাযোগমূলকও হতে পারে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।