বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত বাণিজ্যকে আরো এগিয়ে নিতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ঘুমধুমে স্থল বন্দর এবং সদর ইউনিয়নের চাকঢালায় শীঘ্রই সীমান্ত হাট নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। আর তা সম্ভব হলে সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি, উখিয়া ও টেকনাফের প্রায় চার লাখ মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি দু’দেশের প্রয়োজন মাফিক আমদানী-রপ্তানির নতুন এক দীগন্ত উম্মোচিত হবে। নাইক্ষ্যংছড়িতে স্থল বন্দর ও সীমান্ত হাট নির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং। সম্প্রতি নৌ মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান তিন পার্বত্য জেলায় তিনটি স্থল বন্দর নির্মাণ করা হবে বলে ঘোষণা দেন। বান্দরবানে স্থল বন্দর নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে গুরুত্ব পায় নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও চাকঢালা সীমান্ত। ঘুমধুমে স্থল বন্দর নির্মাণের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। তবে আওয়ামী লীগ নেতা, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ ঘুমধুমের পরিবর্তে চাকঢালায় স্থল বন্দর নির্মাণের দাবি তোলে বীর বাহাদুরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। আর তিনিও তাদের একেবারে নিরাস করেননি। এরই প্রেক্ষিতে ৭ ফেব্রুয়ারি সকালে চাকঢালা সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল। জানতে চাইলে এস.এম সরওয়ার কামাল বলেন-প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে চাকঢালা পয়েন্ট পরিদর্শন করেছি। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। ঘুমধুমের পাশাপাশি চাকঢালাতেও স্থল বন্দর নির্মাণের সম্ভাবনা রয়েছে! তবে চাকঢালাতে স্থল বন্দর নির্মিত না হলেও সীমান্ত হাট হবে। স্থান দুটি নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান নিজেই পরিদর্শনে আসবেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশের চাকঢালা ও মিয়ানমারের ওয়ালিডং এলাকার উপর দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার সহজ হওয়ার কারণে বিভিন্ন সময়ে সীমান্তের লোকজন প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দু’দেশের স্থানীয় গরীব জনসাধারণের নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানী রপ্তানি করে থাকে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক তসলিম ইকবাল চৌধুরী বলেন-চাকঢালা সড়ক দিয়ে বাণিজ্যিক ট্রানজিট অথবা সীমান্ত হাট চালু হলে অবৈধভাবে আমদানী-রপ্তানী বন্ধসহ সহজ যাতায়তের মাধ্যমে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হবে। এতে করে সীমান্ত এলাকার উন্নয়ন বঞ্চিত জনসাধারণের কর্মসংস্থানসহ দু’দেশের বন্ধুত্ব ও অর্থনৈতিক লেনদেনে অগ্রগতি সাধিত হবে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন- পরিবেশ, পরিস্থিতি ও সীমান্তের নিকটবর্তী হওয়ায় স্থল বন্দর নির্মাণের জন্য ঘুমধুম’ই উপযুক্ত স্থান। এটি স্থাপিত হলে পাশ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়িসহ উখিয়া এবং টেকনাফ উপজেলার প্রায় চার লাখ মানুষ উপকৃত হবে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।