কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার প্রায় আড়াই শতাধিক স্কুল, কলেজ মাদ্রাসা, কিল্ডার গার্ডেন, নুরানী মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টারের সাথে লাইব্রেরীর মালিক ও বই বিক্রেতাদের সাথে চুক্তিতে গাইড (নোট বই) বইয়ের রমরমা বাণিজ্য চলছে। সরকারীভাবে গাইড বই নিষিদ্ধ হলেও চকরিয়ায় প্রায় অর্ধ শতাধিক ছোট-বড় লাইব্রেরী ও ষ্টেশনারী দোকানে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বিভিন্ন শ্রেণীর গাইড বই, বাংলা ও ইংরেজী ব্যাকরণ বইয়ের ছড়াছড়ি হয়ে গেছে। এসব গাইড বইয়ের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা জরুরী হয়ে পড়েছে।
শিক্ষার্থী , অভিবাবকদের দাবি লাইব্রেরী এবং প্রকাশনা সংস্থার সাথে স্কুলের শিক্ষকদের চুক্তি থাকে। তাই তাদের পছন্দমত গাইড বই কিনতে হচ্ছে। এতে একদিকে লেখাপড়ার খরচ বাড়ছে অন্যদিকে গাইড বই বিক্রি করে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এক শ্রেনীর মধ্যসত্বভোগি। সচেতন মহলের দাবি সরকার নামে গাইড বই নিষিদ্ধ করলেও কাজে তার বাস্তবায়ন নেই। এর ফলে গাইড বইয়ের অবাধ ব্যবহার বেড়েছে। এটা শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের অন্তরায়।
দেশের বিভিন্ন প্রকাশনার নামে নি¤œমানের উচ্চ মুল্যের এসব গাইট ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠেছে। চলছে জোর প্রতিযোগিতা। প্রাথমিক পর্যায়ের মাদ্রাসা ও স্কুল পর্যায়ের প্লে থেকে থেকে ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত বিভিন্ন বইয়ের পাশা পাশি গাইড বইয়ের মূল্য নি¤েœ ২শত টাকা সর্বোচ্ছ সাড়ে ৮শত টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে।
আবার ৬ষ্ট শ্রেনীর স্কুল ও মাদ্রাসা পর্যায়ের প্রতিটি গাইট বইয়ের মূল্য নিচ্ছে ৫শত টাকা থেকে ১২শত টাকা পর্যন্ত। চকরিয়া উপজেলা সদরের কয়েকটি লাইব্রেরী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা যায়, পাঞ্জেরী, পপি, অবিটার, পুথিঘর, নব পুথিঘর, কাজল, দিগন্ত, কম্পিউটার, লেকচার, নিউ লেকচার, জুপিটার, সাইমুম, আল ফাতাহ, আল বারাকা, আল আরাফা, ওয়ান, অনুপম ও নেপচুনসহ বিভিন্ন প্রকাশনার গাইড বই থরে থরে সাজিয়ে রেখেছে। সুচতুর প্রকাশনা কোম্পানী গুলো তাদের বই পাঠ্য করার জন্য বিভিন্ন শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্টানের সাথে ছাত্র-ছাত্রীদের পরিসংখ্যান নিয়ে মোটা অংকের টাকা লেনদেন করছে। এছাড়াও প্রতিটি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদ্রাসার শিক্ষকেরা প্রকাশনা কোম্পানী গুলো থেকে বই পাঠ্য করার জন্য ব্যাপকহারে টাকা বিতরণ করছে।
চকরিয়া পৌর সদরের এক শ্রেণীর অসাধু বই ব্যবসায়ীরা শিকদের সাথে আতাঁত করে এসব গাইড বই অস্বাভাবিক মূল্যে ক্রয় করতে ছাত্র ছাত্রীদেরকে বাধ্য করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এক স্কুল অভিভাবক জানায়, শুধু লাইব্রেরী নয়, প্রতিটি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসারা ও কিল্ডার গার্ডেন, নূরানী মাদ্রাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্টানেও অভিযান পরিচালনা করা জরুরী হয়ে পড়েছে। কচি কাঁচা শিক্ষার্থীরা অচিরে রসাতলে যাবে।
চকরিয়া পৌরসদরের আজাদ লাইব্রেরী, সাহিত্য নিকেতন, আজাদ, আজাদ প্লাস, সৌদিয়া লাইব্রেরী, নিউ সৌদিয়া লাইব্রেরী, ইসলামীয়া লাইব্রেরী, নিউ ইসলামীয়া লাইব্রেরী, বইঘর ও হক লাইব্রেরীসহ ডজন খানেক বই বিক্রয়কারী প্রতিষ্টান এসব অবৈধ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত গাইড বই এজেন্ট হিসেবে বই বাজারজাত করা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকরা জানান, গ্রামার ও গাইড বই কোমলমতি ছাত্র ছাত্রীদের জন্য অভিশাপ হয়ে দাড়ালেও সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা গাইড বই ক্রয় করতে শিক্ষার্থীদের বাদ্য করা হচ্ছে। কতিপয় শিকদের আতাঁত বাণিজ্যে বিদ্যালয়ের ছেলে-মেয়েরা গাইড ক্রয় করা থেকে রেহাই পাচ্ছেনা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক ছাত্রদের জন্য সহায়ক হলেও এখন নিষিদ্ধ গাইড বই আমাদের জন্য সহায়ক মনে হচ্ছে। কারণ কাসের শিক্ষকেরা কোন প্রকাশনার গাইড বইটি ক্রয় করবে তাও নির্দিষ্ট করে দিচ্ছে। তাছাড়া পরীার খাতায় ওই গাইড বইয়ের মত হুবহু লিখলে বেশী নাম্বার দেয় সংশ্লিষ্ট কাসের শিক্ষকেরা। একাধিক অভিভাবকের অভিযোগ, লাইব্রেরীর বই বিক্রেতারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যে যার মতন করে চড়া মূল্যে গাইড ও গ্রামার বই বিক্রি করছে। সরকার সৃজনশীল পদ্ধিতিতে প্রকৃত শিার আলো ছড়িয়ে দিতে ব্যাপক উদ্যোগ নিলেও তা অমান্য করে বাজারে বই ব্যবসায়ীরা চড়া মূল্যে গ্রামার ও গাইড বইয়ের রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে বিভিন্ন স্কুলের কোমলমতি শিার্থীদের সরকার ঘোষিত নিষিদ্ধ নোট বই কিনতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত নোট ও গাইড বই সহায়ক বলে অর্থলোভী কোচিং ব্যবসায়ী অসাধু আয়ের কতিপয় শিকরা ছাত্র-ছাত্রীদের গাইড কিনতে প্রতিনিয়ত চাপ প্রয়োগ করে আসছেন। এতে করে শিক ও বই ব্যবসায়ীদের মধ্যে রমরমা ব্যবসা হলেও মেধাশূন্য তথা সৃজনশীল শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশু কিশোররা।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।