২৭ নভেম্বর, ২০২৪ | ১২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীর বাঘগুজারা পয়েন্টের রাবার ড্যাম ফের ছিঁড়ে গেছে

Chakaria  Pic 22-03-2015

চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরী নদীর মিঠা পানি আঁটকিয়ে বোরো চাষের জন্য প্রায় ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাঘগুজারা রাবার ড্যামের রাবার শনিবার রাতে চারমাসের ব্যবধানে আবারও ছিঁড়ে গেছে। এ অবস্থায় সামুদ্রিক লবনাক্ত পানি নদীর উজানের দিকে ঢুকে পড়ায় চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার প্রায় ৬০হাজার একর জমির বোরো ধানের চাষ হুমকির সম্মূখীন হয়ে পড়েছে। ওইদিন রাতে সামুদ্রিক অস্বাভাবিক জোয়ারের পানির চাপে এটি ভেঙ্গে গেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে চকরিয়া উপজেলার বাঘগুজারা ও পালাকাটার রাবার ড্যামের মাধ্যমে নদীর মিঠা পানি আঁটকিয়ে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার প্রায় ৬০ হাজার একর জমিতে বোরোর চাষ করা হয়ে থাকে।
জানা যায়,  নিরাপদ সেব সুবিধা নিশ্চিত করতে বিগত ২০০৫-০৬অর্থবছর কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের অথার্য়নে প্রায় ৩২কোটি টাকা ব্যয়ে ওয়েস্টান ইঞ্জিনিয়ারিং নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্টান মাতামুহুরী নদীর বাঘগুজারা পয়েন্টে রাবার ড্যামটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ড্যামটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০১২-১৩ অর্থবছরে
অভিযোগ উঠেছে, বাঘগুজারা রাবার ড্যামটি নির্মান কালে ড্যামে রাবার লাগানোর সময় যেনতেন ভাবে জোড়া দিয়ে কাজটি সম্পন্ন করা হয়। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে লাগানো রাবার গুলো টেকশই না হওয়ায় কাজ শেষ হওয়ার দুই বছর না পেরুতেই ২০০১৪ সালের ১১ নভেম্বর হঠাৎ করে পানির প্রভাবে খুলে যায় ড্যামের একাধিক পয়েন্টের রাবার।
জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তড়িৎ হস্তক্ষেপে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের মাধ্যমে প্রায় ৮লাখ টাকা খরচ করে যান্ত্রিক প্রকৌশল বিভাগের প্রকৌশলীদের তদারকির মাধ্যমে খুলে যাওয়ার প্রায় একমাস পর (গতবছরের ৪ ডিসেম্বর) ড্যামের মেরামত কাজ সম্পন্ন করেন।
তবে অভিযোগ অস্কীকার করে রাবার ড্যাম নির্মাণকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, ২০১৩ সালের জুন মাসে কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজটি শেষ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে হস্তানান্তর করা হয়। মুলত এরপর থেকে ড্যামের ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের আর কোন ধরণের দায়বদ্ধতা নেই। তিনি বলেন, প্রথমবার ড্যামের রাবার ছিঁেড় যায় জমে থাকা পলি অপসারণ না করে ফুলানোর কারনে। আর দ্বিতীয়বার ড্যামের রাবার খুলে গেছে সামুদ্রিক জোয়ারের প্রচন্ড প্রভাবে। এতে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান বা পাউবোর কোন গাফেলতি নেই। মুলত এটি হয়েছে প্রাকৃতিক কারনে।
কোণাখালী ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার বলেন, চার মাস আগে মেরামত করা ড্যামের রাবার ফের কিভাবে খুলে যায় তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। শনিবার রাতে সামুদ্রিক জোয়ারের প্রভাবে ড্যামের রাবার খুলে যাওয়ায় বর্তমানে মাতামুহুরী নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে লবণ পানি। এতে কৃষকদের রোপন করা বোরো চাষের মিঠাপানির সেচ সুবিধার উৎস বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে ড্যামের রাবার খুলে যাওয়ার খবর পেয়ে গতকাল রোববার সকালে ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজার সার্কেলের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আজিজ মোহাম্মদ চৌধুরী, কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পদক সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম, কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোফাজ্জল হোসেন, চকরিয়া শাখা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী, বরইতলী ইউপি চেয়ারম্যান এটিএম জিয়াউদ্দিন চৌধুরী ও কোণাখালী ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার।
জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজার সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আজিজ মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, সামুদ্রিক অস্বাভাবিক জোয়ারে লবণাক্ত পানির চাপে বাঘগুজারার রাবার ড্যামের ৪টি ব্যাগের মধ্যে একটি ব্যাগ ছিঁড়ে গেছে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধ্বতন মহলে অবহিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, মোরামতের জন্য সোমবার যান্ত্রিক বিভাগের প্রকৌশলীরা ঢাকা থেকে এসে পৌঁছাবেন। এরপর মেরামত কাজ শুরু করলে ৩/৪দিনের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।