২৬ নভেম্বর, ২০২৪ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

চকরিয়ায় মালিক সেজে প্রতারক চক্রের চুরি মামলা, আসামি হলো গাড়ি মালিক!

চকরিয়ায় আদালতে মামলা হয়েছে একটির, পুলিশের অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে অপর মাহিন্দ্র মিনিবাস গাড়ি।

চকরিয়ায় ভুঁয়া মালিক সেজে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে আদালতে উল্টো গাড়ির মালিক সাইফু উদ্দিনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সাজানো চুরির ঘটনায় মামলা দায়ের করার অভিযোগ উঠেছে। ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মাহিন্দ্র মিনিবাস গাড়ি (কক্সবাজার ছ- ১১-০০৬২) চুরির অভিযোগে এ মামলাটি দায়ের করেন বাদি পরিচয়ধারী চকরিয়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের নিজপানখালী এলাকার সামসুল আলমের ছেলে হেলাল উদ্দিন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত পুর্বক প্রতিবেদন দেয়ার জন্য চকরিয়া থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
তদন্তের শুরুতে থানা পুলিশের এসআই মো. কাওছার উদ্দিন চৌধুরী অভিযান চালিয়ে গত ১৪ মে বিকালে চকরিয়া শহরের ছিদ্দিক ফিলিং ষ্টেশনের পেছনে সিএনজি গ্যাস স্টেশন এলাকা থেকে একই মডেলের অপর একটি গাড়ি (চট্টমেট্টো-১১-১৯৯৮) উদ্ধার করেছেন। এরপর বেরিয়ে আসতে শুরু করে বাদি পরিচয়ে আদালতে গাড়ি চুরির মামলা দায়েরকারী হেলাল উদ্দিনের আসল থলের বিড়াল।
মাহিন্দ্র মিনিবাস গাড়ির (কক্সবাজার ছ- ১১-০০৬২) বর্তমান মালিক চকরিয়া উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নের বহদ্দারকাটা এলাকার মৃত আবদুল গফ্ফারের ছেলে সাইফ উদ্দিন জানান, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের লিংকরোড এলাকার ফজল করিমের ছেলে নুরুল ইসলাম ক্রয়সুত্রে দুটি মাহিন্দ্র মিনিবাস গাড়ির মালিক। আর্থিক সমস্যার কারনে তিনি ২০১৬ সালের ৫ এপ্রিল নোটারীমুলে গাড়ি ২টি (কক্সবাজার ছ- ১১-০০৬২) ও (কক্সবাজার ছ- ১১-০০৫৯) চকরিয়া উপজেলার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের ছাইরাখালী গ্রামের মৃত আবদুল গফুরের ছেলে আকতারকে বিক্রি করেন। এরপর গাড়ি মালিক আকতার নানাভাবে অর্থ সংকট ও পারিবারিক সমস্যার কারনে ওই দুটি গাড়ি আমাকে (বর্তমান মালিক সাইফ উদ্দিন) ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী নোটারীমুলে বিক্রি করেন।
গাড়ি দুটির মালিক সাইফ উদ্দিন দাবি করেন, আকতারের কাছ থেকে তিনি গাড়ি দুটি (কক্সবাজার ছ- ১১-০০৬২) ও (কক্সবাজার ছ- ১১-০০৫৯) ক্রয় করার পর বৈধভাবে ব্যবসা করে আসছে। তারমধ্যে (কক্সবাজার ছ- ১১-০০৬২) নম্বর গাড়িটি সচল থাকলেও অপর গাড়িটি (কক্সবাজার ছ- ১১-০০৫৯) ডুলাহাজারা এলাকায় রাজীব মেস্ত্রীর গ্যারেজে আছে।
ভুক্তভোগী সাইফ উদ্দিন অভিযোগ করেছেন, ক্রয়সুত্রে তিনি (কক্সবাজার ছ- ১১-০০৬২) গাড়িটির মালিক হলেও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে চকরিয়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের নিজপানখালী এলাকার সামসুল আলমের ছেলে হেলাল উদ্দিন মালিক সেজে ওই গাড়িটি চুরির অভিযোগ তুলে আদালতে উল্টো তাকেসহ তিনজনকে আসামি করে সাজানো মামলা করেছেন। হেলাল উদ্দিন গাড়িটির মালিক দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে তিনি মালিক নন। এ ধরণের কোন কাগজপত্র তাঁর কাছে নেই।
অপরদিকে থানা পুলিশের অভিযানে উদ্ধার করা মাহিন্দ্র মিনিবাস গাড়িটির (চট্টমেট্টো-১১-১৯৯৮) মুল মালিক চকরিয়া পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের হালকাকারা গ্রামের মৃত হাজি আহমদ হোসেনের ছেলে রফিকুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রাম মহানগরের পাহাড়তলী এলাকার ফিরোজ শাহ কলোনীর বাসিন্দা সিরাজুল হক মাস্টারের মেয়ে রহিমা কাজল গাড়িটির আগের মালিক। তার কাছ থেকে গাড়িটি ২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল চকরিয়া পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ ইব্রাহিমের ছেলে মুজিবুল হক নোটারীমুলে ক্রয় করেন। পরে আর্থিক সমস্যার কারনে মুজিবুল গাড়িটি চলতি মে মাসের ২ তারিখ নোটারীমুলে আমাকে (রফিকুল ইসলাম) বিক্রি করেন।
গাড়ি মালিক রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, বৈধ কাগজপত্রে খরিদামুলে (চট্টমেট্টো-১১-১৯৯৮) গাড়িটির মুল মালিক তিনি। কিন্তু চকরিয়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের নিজপানখালী এলাকার সামসুল আলমের ছেলে হেলাল উদ্দিনের দেয়া ভুল তথ্যের কারনে চকরিয়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে গত ১৪ মে বিকালে চকরিয়া শহরের ছিদ্দিক ফিলিং ষ্টেশনের পেছনে সিএনজি গ্যাস স্টেশন এলাকা থেকে তার গাড়িটি আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ অবস্থায় তিনি তাঁর গাড়িটি ফেরত পেতে চকরিয়া থানার ওসির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
একটি নম্বরের গাড়ি চুরির অভিযোগে আদালতে মামলা ও পুলিশের অভিযানে অন্য নম্বরের গাড়ি আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, গাড়ি চুরির মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে ইতোমধ্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে চুরি হওয়া গাড়ির মুল মালিক এবং উদ্ধার করা গাড়ির মালিককেক থানায় আসতে। উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে গাড়ি মালিক পক্ষের অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই উদ্ধার করা গাড়িটি মুল মালিককে ফেরত দেওয়া হবে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।