২২ এপ্রিল, ২০২৫ | ৯ বৈশাখ, ১৪৩২ | ২৩ শাওয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  টেকনাফে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ডাকাতদলের গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১   ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার   ●  পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি’১৮ ব্যাচের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন   ●  উখিয়া সমাজসেবা কর্মচারীর নামে বিধবা ভাতা’র টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

চট্টগ্রামে দুই পরিবারের কেউ বেঁচে নেই

দিনমজুর নজরুল ইসলামের একার আয়ে চলত চার সদস্যের পরিবার। বাসা ভাড়া নিয়ে নিরাপদে থাকার মতো আয়-রোজগার তার ছিল না। তাই আরেক বন্ধু ইসমাইলকে নিয়ে বসতি গড়েন রাঙ্গুনিয়ার রাজানগরের বগাবিল গ্রামের পাহাড়ের পাদদেশে। তাদের দু’জনেরই বয়স ৪০-এর ঘরে। বিয়ে করেছিলেন দুই দশক আগে। নজরুল ও ইসমাইল উভয়েরই সন্তান ছিল দু’জন করে। দিনমজুর এ দুই বন্ধুর পরিবারের আট সদস্যের সবাই সোমবার রাতে ঘুমের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন। নজরুল, তার স্ত্রী ও দুই সন্তানের লাশ তাদের ঘরে পাওয়া গেছে। পাশের ঘরে মিলেছে ইসমাইল, তার স্ত্রীসহ দুই সন্তানের লাশ। এ দুই পরিবারের আট সদস্য একসঙ্গে হারিয়ে যাওয়ায় গতকাল কাঁদার জন্যও ছিল না তাদের কোনো স্বজন। এদিকে রাঙ্গুনিয়ার সেলিম নিজে বেঁচে থাকলেও এক রাতেই হারিয়েছেন পরিবারের ছয় সদস্যকে। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, রাজানগরের বগাবিল গ্রামে যে আটজন নিহত হয়েছেন, তারা মাত্র দুটি পরিবারের সদস্য। দিনমজুর ইসমাইল ও নজরুল তাদের পরিবারের সব লোকজনসহ মাটিচাপা পড়ে নিহত হয়েছেন। স্থানীয় চেয়ারম্যান সেকান্দর বলেন, দাফনের জন্য নিহত প্রতি পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। এ দুই পরিবারের সবাই মারা যাওয়ায় টাকা দেওয়ার মানুষও পাচ্ছি না।

স্থানীয়রা জানায়, ঘুমের মধ্যেই নজরুলসহ তার স্ত্রী আসমা আক্তার বাচু, ১৫ বছরের ছেলে নানাইয়া ও ৯ বছরের মেয়ে সাফিয়া আক্তার মাটিচাপা পড়ে। একইভাবে দিনমজুর ইসমাইলসহ তার স্ত্রী মনিরা আক্তার, আট বছরের মেয়ে ইভা ও চার বছরের মেয়ে ইছা নিহত হয়েছে। শুধু নজরুল ও ইসমাইল নন, রাঙ্গুনিয়াবাসীকে শোকে ভাসিয়েছে ইসলামপুরের মইন্যারটেক এলাকার বাসিন্দা সেলিমও। তিনি নিজে বেঁচে থাকলেও তার ছেলে সুজন, পুত্রবধূ মুনি্ন, নাতনি জোছনা, শাহানু ও ফালুমা নিহত হয়েছেন। সুজনের এক বছরের মেয়ে মিম এখনও নিখোঁজ। পরিবারের সবাইকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গেছেন সেলিম। ঘরের ভেতর থেকে একেক করে যখন স্বজনের লাশ বের করে আনা হচ্ছিল, তখন আনমনে কী যেন বলছিলেন সেলিম। নির্বাক সেলিমের চোখেও কোনো অশ্রু নেই।

বান্দরবানে এক দিনেই তিন শিশুসন্তানকে হারিয়েছেন লালমোহন বড়ুয়া। তিনি বলেন, ভারি বৃষ্টিতে বেশি পানি জমে যাওয়ায় বাড়ির পাশের নালা পরিষ্কার করতে তারা স্বামী-স্ত্রী বের হয়েছিলেন। সন্তানরা সবাই ঘুমিয়ে ছিল। এ সময় পাহাড় ধসে চোখের সামনে সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। এখন পরিবারে আমরা স্বামী-স্ত্রী ছাড়া আর কেউ নেই।’

চট্টগ্রামের চন্দনাইশেও এক রাতে হারিয়ে গেছে একই পরিবারের তিন সদস্য। তারা হচ্ছেন_ ম্যোকাইং ক্যায়াং (৫০), ম্যে ম্যাও ক্যায়াং (১৩) ও ক্যাওস্যা ক্যায়াং (৮)। আহত হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন একই পরিবারের ছ্যান্যুও ক্যায়াং ও ত্যেলাও ক্যাও ক্যায়াং।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।