চলতি বছরের ছয় মাসে (জুন-নভেম্বর ২০১৬) সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি ও আশেপাশের এলাকা থেকে প্রায় ৯ কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রজাতির অবৈধ চোরাই কাঠ আটক করেছে ৩১ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। এর মধ্যে জুন মাসে জব্দ করা হয় ১৪২০ ঘনফুট, জুলাই মাসে ৭১১৭ ঘনফুট, আগস্ট মাসে ২০৭৫ ঘনফুট, সেপ্টেম্বর মাসে ৩৯২০ ঘনফুট, অক্টোবর মাসে ৭৭২৪ ঘনফুট ও নভেম্বর মাসে ৩৬৬৭ ঘনফুট কাঠ। আটককৃত এসব কাঠ সংশ্লিষ্ট বন বিভাগে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে ছয় মাসে বিজিবির অভিযানের বিপরীতে নাইক্ষ্যংছড়ি বন বিভাগের সফলতা নেই বললেই চলে। স্থানীয়দের মতে, বন বিভাগ চোরাই কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে যেসব কাঠ পাচারের অপেক্ষায় ছিল, বিজিবি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তা আটক করতে সক্ষম হয়ছে। বিশেষ করে বর্তমান জোন কমান্ডার লে. কের্ণল আনোয়ারুল আযীম যোগদানের পর থেকে অবৈধ চোরাই কাঠ আটক অভিযান জোরদার হয়েছে।
তথ্যনুসন্ধানে জানা গেছে, মিয়ানমার সীমান্তবর্তী উপজেলা নাইক্ষ্যংছড়ি এক সময় সবুজ বনায়নে ঢাকা থাকলেও কয়েক বছর যাবত সবুজ বনায়নগুলো নেড়া পাহাড়ে পরিণত করেছে বনদস্যুর দল। যার কারণে লোকালয়ে বন্য হাতির আক্রমণসহ পরিবেশ ধ্বংসের কারণ হিসেবে দেখছে অভিজ্ঞ মহল।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি হাজী এমএ কালাম ডিগ্রী কলেজের এক প্রভাষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেন, বর্তমানে বনায়ন ধ্বংসে ক্ষমতাসীন দলের নাম অপব্যবহার করা হচ্ছে। যার কারণে অল্প সংখ্যক জনবল নিয়ে প্রভাবশালী বনদস্যুদের মোকাবেলা করা অসম্ভব। এ ক্ষেত্রে অবৈধ চোরাই কাঠের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযানের মাধ্যমে নাইক্ষ্যংছড়িতে বিজিবি সীমান্ত রক্ষার পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় অবদান রাখছে বলে তিনি মনে করেন।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি ৩১ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ অধিনায়ক লে.কর্ণেল আনোয়ারুল আযীম বলেন, মানুষ বেঁচে থাকার চালিকা শক্তি গাছ। গাছ কাটার কিছু নিয়ম কানুন আছে, কিন্তু নাইক্ষ্যংছড়ির বিভিন্ন স্থানে অবাধে গাছ কাটার কারণে সবুজ বনাঞ্চল উজাড় হয়ে যাচ্ছে। তাই, অবৈধ ভাবে গাছ কাটা থেকে বিরত থেকে গাছের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণ গাছ লাগানো প্রয়োজন বলে তিনি মত দেন। ছয় মাসে ৮ কোটি ৯৯ লক্ষ ৭৫ হাজার ৮৪৩ টাকা মূল্যের অবৈধ চোরাই কাঠ আটক করা হয়েছে। আগামীতে অবৈধ কাঠ আটকে বিজিবির অভিযান অব্যাহত রাখা হবে বলে জানান তিনি।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।