জনতার কাতারে বসা লোকটি একজন বহুমূখী গুণের অধিকারী জননেতা, সত্যিকারের রাজনৈতিক আদর্শ লালনকারী একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। যিনি নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের পরিচিতির সীমানা ছাড়িয়ে নিজের গ্রহণযোগ্যতার পরিধি ছড়িয়ে দিয়েছেন সর্বদলীয় মানুষের মন-মন্দিরে। ফলে সরকারের রোষানলে পড়ে নির্বাচিত হওয়ার স্বল্প সময়ের মধ্যে ক্ষমতার মসনদ হারালেও জনগনের মনের মসনদে এখনো উজ্জ্বল ধ্রুবতারা। তিনি কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত উখিয়া উপজেলা পরিষদের স্মরণকালের সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যান জনাব সরওয়ার জাহান চৌধুরী।
তাঁকে নিয়ে লিখাটা এই জন্যে যে, বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে আমরা যেখানে দেখি কোন অনুষ্ঠানে অতিথিকে দাওয়াত দেওয়া না দেওয়া, দাওয়াত পত্রে নিজের নাম উল্লেখ করা না করা এবং মঞ্চে আসন বন্ঠন নিয়ে চেয়ার ছুঁড়াছুঁড়ি কিংবা দাঙ্গা হাঙ্গামা হয় সেখানে অতিথির আসন ছেড়ে জনগনের কাতারে বসা সত্যিই এক বিরল দৃষ্টান্ত এবং উদার ও মহৎ মন মানসিকতার পরিচায়ক। উচ্চ শিক্ষিত, নিরহংকারী এবং পরোপকারী এই নেতার একটা প্রশংসনীয় দিক হল গরীব দুঃখী মানুষকে সহজেই আপন করে নেওয়া এবং তাদের সাথে মিশতে পারা। যা আমাদের দেশের বেশির ভাগ রাজনৈতিক নেতার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে আশা করাটা নেহাতই বোকামী। তাঁর জন্ম উখিয়া উপজেলার এক স্বনামধন্য এবং জনপ্রিয়তায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক পরিবারে হলেও চলনে বলনে অতি সাধারন একজন মানুষ। মানুষের বিপদে ছুটে যাওয়া, নিঃস্বার্থ মনে অসহায় মানুষের পাশে থেকে সহযোগিতা করা তাঁর বহুমূখী গুণের একটি অন্যতম দিক।
পারিবারিক ঐতিহ্যের সুনিপুন সিঁড়িপথ বেয়ে পূর্ব পুরুষ এবং সহোদরদের হাত ধরে রাজনীতিতে তাঁর আগমন ঘটলেও নেতা হিসেবে নিজের জাত চিনিয়ে জনগনের মনে ভালবাসার স্থায়ী আসন গড়ে নিয়েছেন নিজস্ব স্বকীয়তায়, নিজ কর্ম গুণে। যাকে যেখানে পেয়েছেন ভালবাসার হাত বাড়িয়ে বুকে টেনে নিয়ে দুদন্ড কথা বলেছেন, ভাল মন্দ জানতে চেয়েছেন। জনগন তাই ভালবাসার প্রতিদানে ভালবাসাই দিয়েছেন। সরকারের বিপরীত স্রোত থেকে জনগন তাঁকে টেনে তুলেছেন ভালবাসার অসীম ক্ষমতায়, নির্বাচিত করেছেন ইতিহাস সৃষ্টি করে। তথাপি শুধু মাত্র সরকারী দলের বিপরীত রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী বলে এমন একজন মহান মানুষের সাথে করা হয়েছে অনৈতিক এবং বিমাতাসূলভ আচরণ।
যা নাগরিক হিসেবে আমাদের কাছে সত্যিই অগ্রহণযোগ্য এবং লজ্জাস্কর বিষয়। সঙ্গত কারনে তাই কখনো কখনো আইনের প্রতি অবিশ্বাস জন্ম নেয়। বলি, আইন কি আসলেই সবার জন্য সমান? জিজ্ঞাসীত মন সন্দেহের তীরে ক্ষত-বিক্ষত হলেও আমরা আইন আদালতের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধাশীল। সময়ের মারপ্যাচে নিভৃতে সব হজম করলেও অতীতের ইতিহাস আমাদের উজ্জীবিত করে। আমাদের বিশ্বাস এবং আস্থার প্রাচীরটাও তাই ইস্পাত কঠিন। আমরা রোম সাম্রাজ্য পতনের কথা শুনেছি। মিডিয়ার বদৌলতে মিশরের হোসনি মোবারক, লিবিয়ার লৌহ মানব খ্যাত মোয়াম্মার গাদ্দাফি, ইরাকের সেনা শাসক সাদ্দাম হোসেনের নির্লজ্জ বিদায় এবং করুন পরিনতি যেমন দেখেছি, তেমনি স্বদেশের স্বৈরশাসক এরশাদের অসহায় আত্মসমর্পণও দেখেছি। বুঝতে শিখেছি, ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। অন্যায়-অবৈধ ক্ষমতার প্রারম্ভিকতা থেকে যবনিকার সময়কাল যতই দীর্ঘ হউক না কেন এর করুন পরিসমাপ্তিও একদিন আছে। ইতিহাস সেদিন ওনার মত সত্যিকারের জনদরদী নেতাদের অলংকৃত করবে। কারণ, ক্ষমতার মসনদে চরণ না থাকলেও জনগনের কাতারে চরণধূলি ঠিকই দিয়ে থাকেন। ওনার মত নেতারাই বুঝিয়ে দেন জননেতা হতে ক্ষমতা লাগে না, প্রয়োজন জনগনের পাশে থাকা, জনগনের ভালবাসা।
‘জয় হউক আমার দেখা এই আদর্শিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের।’
লেখকঃ মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, বিশিষ্ট ব্যাংকার, উখিয়া, কক্সবাজার।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।