বিশেষ প্রতিবেদক:
জনবান্ধব পুলিশিং আরো নিভিড় করার লক্ষ্য মাথায় নিয়েই নিরন্তর কাজ করতে চান পেশাগত দক্ষতার স্বীকৃতি স্বরূপ একাধিক বার বিভিন্ন মেডেল পাওয়া পুলিশ পরিদর্শক (পিআই) মো. জসিম উদ্দিন। নব্বই দশকের শুরুতে পুলিশ বাহিনীতে উপ-পরিদর্শক হিসেবে যোগ দেয়ার পর পেশাগত দক্ষতা, সততা ও সাহসিকতার জন্য ১৯৯৭ সালে আইজি ব্যাজ, ২০০৯ সালে আইজিপি পদক ও সম্প্রতি ২০১৭ সালে পিপিএম পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা জানাতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। ওসি জসিম বলেন, জনগণের জন্যই সরকার আর সরকারি সেবা নিশ্চিত করণে নানা বাহিনীর সৃষ্টি। সেখানে আইনশৃংখলার সেবা নিশ্চিতে জনগণের সবচেয়ে কাছে যাওয়া বাহিনী হলো পুলিশ। কিন্তু পুলিশ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ভীতি অনেক। পুলিশ মানে জনগণকে হয়রানি করা, বিপদে ফেলা- এ ভীতি কাটিয়ে পুলিশকে জনগণের কাছাকাছি এনে সম্পর্ক নিভিড় করা দরকার। জনগণের অসুবিধাটা খোঁজে বের করে সেবা নিশ্চিত করা গেলে পুলিশ আরো জনবান্ধব বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে। দীর্ঘ আড়াই যুগের চাকরির অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে গণমুখী পুলিশিং ব্যবস্থাটা অব্যাহত রাখা-ই আমার লক্ষ্য।
ওসি জসিম উদ্দিনের মতে, তৃণমুলে দায়িত্বপালন করতে গেলে অনেক তীক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখী হতে হয়। অনেক সময় দায়িত্বে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ আসে। যারা জনকল্যাণে রাজনীতি করে তারা জনতার কাছাকাছি যায়। তাই জনকল্যাণে কোনো হস্তক্ষেপ এলে আইনের ভেতর থেকে তা সমাধান করা হয়। কারো ব্যক্তি স্বার্থে পুলিশ ব্যবহৃত হয়না। এভাবে জনতার পুলিশিং বাস্তবায়নে আমরা আমাদের কাজ করি। ভুক্তভোগীর শেষ আশ্রয়স্থল পুলিশ এবং পুলিশ জনগণের বন্ধু- এ ধারনার সেতুবন্ধন কয়েক বছর আগে চালু হওয়া কমিউনিটি পুলিশিং। জনবান্ধব ও জবাবদিহিতামূলক পুলিশিংয়ের এ ব্যবস্থায় সমাজের ভাল স্বভাবের মানুষের অন্তর্ভূক্তি রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন কোতয়ালী থানা এলাকায় বিট পুলিশিং কার্যক্রমেও নানা পেশা-শ্রেণীর পরিচ্ছন্ন মানুষকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। তাদের মাধ্যমে সমাজের সবস্তরে পুলিশের ভাল উদ্যোগ গুলো পৌছে দেয়ার কাজ অব্যাহত রেখেছেন বলে দাবি করেছেন চট্টগ্রামের কোতয়ালী থানায় দায়িত্বপালন করা একাধিকবার পুরস্কৃত ওসি জসিম। ওসি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, যেখানেই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সেখানেই সবটুকু ঢেলে দিয়ে দায়িত্বপালনের চেষ্টা করেছি। এখনো চেষ্টা অব্যাহত রেখে নিজ স্টেশনের সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কল্যাণে। সবার সম্মিলিত সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতে বাহিনীর জন্য আরো অনেক কিছু করা সম্ভব হবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম জেলার রাউজানের দেওয়ানপুর এলাকার সরকারি চাকুরে মৃত আবদুল জব্বার ও আলমাছ খাতুনের সংসারে ১৯৬৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর মো. জসিম উদ্দিনের জন্ম। ১৯৮২ সালে তিনি রাউজান গর্শ্চি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৮৪ সালে চট্টগ্রাম হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ১৯৮৭ সনে রাঙ্গুনীয়া সরকারি কলেজ থেকে ডিগ্রী পাশ করে তিনি। এরপর ১৯৮৯ সনে আউট সাইড ক্যাডেট (বহিরাহত ক্যাডেট এসআই) হিসেবে পুলিশে যোগ দেন। প্রশিক্ষণ শেষে খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, বি-বাড়িয়া, যশোর জেলায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) হিসেবে দক্ষতার সাথে দায়িত্বপালন করেন। সে সময় প্রশংসনীয় কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৯৭ সনে আইজি ব্যাজে ভূষিত হন। ২০০৭ সালে পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে ঢাকার সিআইডি, টেকনাফ, কক্সবাজার, চকরিয়া, কুমিল্লা থানা ও নোয়াখালী পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে সুনামের সাথে দায়িত্বপালনের পর বর্তমানে চট্টগ্রাম কোতয়ালী থানায় দায়িত্বরত। পেশাগত ভালকাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০০৯ সালে আইজিপি পদক ও ২০১২,২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে সন্ত্রাস দমন, চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই রোধ, মাদক বিরোধী অভিযানসহ নানা ভালকাজ ও সাহসিকতার স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৭ সালের প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদকে (পিপিএম-সাহসিকতা) ভূষিত হন। আইনজীবি স্ত্রী, এক ছেলে এক মেয়েকে নিয়ে সুখের সংসার মো. জসিম উদ্দিনের।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।