নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজার সদরের জালালাবাদ ইউনিয়নে জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে শামশুল আলম খুনের ঘটনায় কক্সবাজার সদর থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় নাম উল্লেখ করে ৮ জন এবং আরো অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনকে আসামী করা হয়েছে। গত শনিবার মামলাটি কক্সবাজার সদর থানায় নথি ভূক্ত করা হয়েছে (নম্বর-১৯/২০১৭)।
এদিকে মামলায় নিরহ ও ঘটনার সময় এলাকায় ছিলেন না এমন লোকদেরও আসামী করায় পুরো এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে এলাকার লোকজন মানববন্ধন করার উদ্যোগ নিচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ১৫ সেপ্টেম্বর জালালাবাদ ইউনিয়নের বাহারছড়া জহির আহমদের দোকানের সামনে সন্ধ্যা ৭টার দিকে একই এলাকার¥ৃত আবদুর রহমানের ছেলে আবছারের ছুরিকাঘাতে নিহত হন শামশুল আলম ওরফে পাকিস্তান (৩৫)। তিনি বাহারছড়া এলাকার মৃত মুহাম্মদ ইলিয়াছের ছেলে। একই ঘটনায় ছুরিকাহত হন নিহতের চাচা নুরুল হক (৩৭)। তাদের মাঝে স্থানীয় ‘অঁর খাল’ এলাকায় কিছু জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ হত্যার ঘটনায় নিহতের ভাতিজা আশকর আলী বাদী হয়ে ছুরিকাঘাত করা আবছারকে এক নাম্বার করে আট জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করে। এতে ফরাজীপাড়ার মাস্টার দিল মোহাম্মদের ছেলে ব্যবসায়ী ও সমাজকর্মী কামরুল হাসান বায়জীদকে ৫ নাম্বার আসামী করা হয়েছে। এ তথ্য জানাজানি হবার পর এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অথচ তিনি ঘটনার দিন রোহিঙ্গাদের ত্রাণ বিতরণ উপলক্ষ্যে উখিয়া-টেকনাফস্থ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছিলেন। শনিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনা তদন্ত করতে গেলে মামলায় তার আসামী হওয়ার তথ্যটি প্রচার পায়।
এ ব্যাপারে ফরাজীপাড়ার বাসিন্দা সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি সাইখুল ইসলাম ফরাজী বলেন, এলাকার সমাজকর্মী বায়জীদের নেতৃত্বে প্রবাসী রায়হান ফরাজী, ছালেম মেম্বার, জসিম উদ্দিন, হাজি সেলিম, মোহাম্মদ রশিদ, কাউসার, রাশেদুল হক, হারুণ, সাজ্জাদ, আজিজুল হক, ডেকোরেশন লেদুসহ অর্ধশতাধিক ব্যাক্তি মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের জন্য এলাকা থেকে ৭০০ শিবা বাঁশ, ২০০ তেরপল নিয়ে ট্রাকযোগে টেকনাফ যায় ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে। সেখানে গিয়ে রোহিঙ্গাদের মাঝে তা বিতরণ করে মেরিন ড্রাইভ হয়ে কক্সবাজার পৌছি রাত সাড়ে ১০ টায়। আর শামশু হত্যা হলো সাড়ে ৭টায়। সেখানে টেকনাফে অবস্থান করা একজন লোককে আসামী করা মানে হয়রানি ছাড়া আর কিছু নয়। এর কারণে হত্যার সঠিক বিচারটিও বাধাগ্রস্থ হবে।
এলাকাবাসি জানান, বায়জিদ নিরহ ব্যবসায়ী ও সমাজকর্মী হিসেবে পরিচিত। তার ব্যাপারে সবাই এক বাক্যে সাক্ষ্য দেবে। তার মতো এলাকায় না থাকা আরো কয়েকজনের নাম দেয়া হয়েছে বলে প্রচার পাচ্ছে। তাই প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ সুষ্ট তদন্ত ও স্বাক্ষ্য প্রমাণ নিয়ে আসল খুনিকে সাজার আওতায় এনে নিরহদের নিস্তার দেয়া হউক। না হলে এলাকার সাধারণ মানুষ এ ব্যাপারে মাঠে নামবে।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি রণজিত বড়–য়া বলেন, নিহতের পরিবারের দাবি মতে আসামী করা হলেও অধিকতর তদন্ত ও স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ফাইনাল প্রতিবেদন দেয়া হবে। নিরহ কাউকে হয়রানি করা হবে না।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।