জেলা পরিষদ নির্বাচনে যাচ্ছে না ২০ দলীয় জোট
আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট নেতারা।জোট নেতারা বলছেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার চেয়ে না নেয়া অনেক ভালো। যে
পদ্ধতিতে নির্বাচন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাতে অংশ নিলে লাভ তো হবেই না বরং ক্ষতির পাল্লা ভারি হবে। এজন্য তৃণমূল নেতাকর্মীরা এতে অংশ নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছেন না। সব দিক বিবেচনা করে আপাতত নির্বাচনে না যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিষয়টি জোটের অন্য মহাসচিবরা বিএনপি মহাসচিবকে জানিয়েছেন। জোটনেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকেও তারা বিষয়টি তুলে ধরবেন। এরপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। তবে না যাওয়ার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে বলে মনে করেন তারা।
ইতোমধ্যে ২০ দলীয় জোটের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠকে নির্বাচনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
সেই বৈঠক সূত্রে জানা যায়, দুটি দলের মহাসচিব বাদে সবাই জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিরুদ্ধে মত দেন। বিএনপি মহাসচিবও তেমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এদিকে, নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি জেলায় স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের ভোটে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য নির্বাচিত হবেন। প্রতিটি জেলায় ১৫ জন সাধারণ ও পাঁচজন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য থাকবেন।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটার হন সংসদ সদস্যরা এবং তাদের প্রস্তাব ও সমর্থন ছাড়া কেউ প্রার্থী হতে পারেন না। একই নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে জেলা পরিষদ নির্বাচনেও। ২৫ বছর বয়সী বাংলাদেশের যেকোনো ভোটার জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারলেও ভোট দিতে পারবেন না। আর জনপ্রতিনিধিরা ভোটার হলেও প্রার্থী হতে পারবেন না।
এ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন রেখে জোট নেতারা বলেন, কী কারণে এই জেলা পরিষদ নির্বাচনে ২০ দলীয় জোট অংশ নেবে? এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রস্তাবক-সমর্থক ৮০ ভাগ। বাকিরা বিএনপি-জামায়াত এবং ২০ দলের। এদের মধ্যে জামায়াত একেবারে হিসাবের বাইরে। এ অবস্থায় প্রস্তাবক-সমর্থক হলে নিজেদের চেয়ারম্যানশিপ নিয়ে টানাটানি লাগবে।
নেতারা আরো জানান, ভোটের যে প্রক্রিয়া হয়েছে তাতে ২০ দলের প্রার্থীদের ফেল করার সম্ভবনা শতভাগ। শতভাগ ফেল করার সম্ভবনা জেনেও কোন পাগল নির্বাচনে অংশ নিয়ে টাকা খরচ করে সরকারের রোষানলে পড়তে চাইবে? নির্বাচনে না যাওয়া সম্ভবনা ৯৯.৯৯ ভাগ বলে দাবি করেন এক নেতা।
এ বিষয়ে জাগপা চেয়ারম্যান শফিউল আলম প্রধান বলেন, এ জেলা পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে সরকারের জন্য। এ নির্বাচনের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নাই। আইয়ুব খান এ নির্বাচনী ব্যবস্থা চালু করে কেয়ামত পর্যন্ত থাকতে চাইছিল। কিন্তু পারেন নাই। এই নির্বাচনে গণতন্ত্রের ‘গ’ও নাই। জাগপা যাচ্ছে না, ইনশাল্লাহ জোটও যাবে না।
অপরদিকে, এ প্রসঙ্গে জেবেল রহমান গাণী বলেন, সরকার কাউকে পাস করতে দিবে না। অতীতে নির্বাচনগুলোতে তা প্রমাণ হয়েছে। বিয়ে হবে না জেনেও বরযাত্রী হতে চায় কে?
তিনি বলেন, ২০ দলের মূল টার্গেট জাতীয় নির্বাচন। তাই জেলা পরিষদ নির্বাচনে নামকাওয়াস্তে গিয়ে লোকবল ও অর্থ খরচ করার চাইতে জাতীয় নির্বাচন আদায়ের দিকে মনোনিবেশ করাই উত্তম।
বিএনপির একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির তৃণমূল নেতারা আগ্রহী নন। তারা কেন্দ্রের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করছেন না। নির্বাচনে যাওয়ার সম্ভবনা নেই বলেই চলে।
বিডিঅলনিউজ
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।