উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আটক রোহিঙ্গা ডাকাত নুর আলমকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে আরও ৬টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে র্যাব-৭ এর সদস্যরা। ১ মার্চ বুধবার ভোরে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু ইউনিয়নের পশ্চিমকুল পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪টি চায়না রাইফেল, ১টি এসএমজি, ১টি এম-২ ম্যাগজিন, ৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
এদিকে অভিযান শেষে বুধবার বিকালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাবকে ধন্যবাদ জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড়ে দ্বিতীয়বারের মত র্যাব সদস্যরা দুঃসাহসিক অভিযানের চালিয়ে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপাড়ার মুচনী এলাকার আনসার ক্যাম্পে সশস্ত্র হামলায় লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করেছে। মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গারা নানান অপরাধ কর্ম করে বেড়াচ্ছে। মিয়ানমারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানো হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুষ্ঠু রাখতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে সরকার। এসময় টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপাড়ার মুচনী এলাকার আনসার ক্যাম্পে সশস্ত্র হামলায় লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার অভিযান আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত ঘোষণা ও করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রেস ব্রিফিংকালে অনান্যদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমদ, আনসারের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাত ৭টায় টেকনাফের নয়াপাড়া আনসার ক্যাম্পের কমান্ডার হত্যা ও অস্ত্র লুটের ঘটনার মূল হোতা নয়াপাড়া ক্যাম্পের এইচ ব্লকের মো: হোসেনের ছেলে আরএসও নেতা নুরুল আলমকে মঙ্গলবার রাত ৭টায় উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্প থেকে আটক করে র্যাব। পরে তাকে নিয়ে ঘুমধুমের তু¤্রব্রুতে অভিযান শুরু করে র্যাবের কক্সবাজার ক্যাম্পের লে.কমান্ডার আশেকুর রহমানের নেতৃত্বে অভিযানিক দল। এসময় টেকনাফের আনসার ক্যাম্প থেকে লুট হওয়া ৬টি অস্ত্র উদ্ধার করে র্যাব।
এদিকে আটক আসাামী নুরুল আলমকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে বিগত ৫/৬ বছর যাবৎ টেকনাফের শাপলাপুর, বাহারছড়া, লেদা, উখিয়া, কুতুপালং এলাকায় ডাকাতি এবং অপহরণ করে আসছিল। ঘটনার দিন নুরুল আলম ও বড় খায়রুল আমিন দা দিয়ে আনসার ক্যাম্পের বেষ্টনি কেটে আনসার ক্যাম্পে প্রবেশ করে। আনসার ক্যাম্পের ডিউটিরত এবং ঘুমন্ত অন্যান্য আনসার সদস্যদেরকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে। আনসার ক্যাম্প কমান্ডার পিসি আলী হোসেন অস্ত্রাগারের চাবি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে দৌড়ে পালাতে চাইলে নুরুল আলম তাকে গুলি করে। অতঃপর তারা অস্ত্র ও গুলি লুট করে ক্যাম্প ত্যাগ করে। অস্ত্র ও গুলি লুটের পর পাহাড়ের বিভিন্ন গহিন জঙ্গলে লুকিয়ে রেখে আত্মগোপনে চলে যায়। পরবর্তীতে তারা উক্ত অস্ত্রগুলো বিভিন্ন জায়গায় স্থানান্তর করে। আটক নুরুল আলম আরো জানান, নুরুল আলম জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, মূলত অস্ত্র লুট করার উদ্দ্যেশে তারা আনসার ক্যাম্পে হামলা করেছিল। তাদের পরিকল্পনা ছিল লুট করা অস্ত্রের মাধ্যমে তাদের অস্ত্র ভান্ডার বৃদ্ধি করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করা এবং অন্যান্য সন্ত্রাসী দলের কাছে অস্ত্র ও গুলি সরবরাহ করা।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৩ মে ভোররাতে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপাড়ার মুচনী এলাকার নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার ক্যাম্পে সশস্ত্র হামলা চালায় এক দল দুর্বৃত্ত। এতে নিহত হন আনসার ক্যাম্পের কমান্ডার মো. আলী হোসেন। এ সময় ১১টি বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র ও ৬৭০টি গুলি লুট করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অজ্ঞাত পরিচয় ৩০-৩৫ জনের বিরুদ্ধে আনসার ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার মো. আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব ও পুলিশ। এসময় আরো লুট হওয়া ৯টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১১৫টি গুলি উদ্ধার করা হয়।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।