টেকনাফ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের দূধর্ষ সন্ত্রাসী জাহেদ হোছনকে বিদেশী রিভলবার ও ম্যাগজিন ভর্তি গুলিসহ আটক করেছে। সে দীর্ঘদিন যাবত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ডাকাতি, অস্ত্র বাণিজ্য, ছিনতাই এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে জন-জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে।
সুত্র জানায়,২১এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টারদিকে হ্নীলা মৌলভী বাজারের জনৈক শামসুল আলমের পানের দোকানের সামনে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নয়াবাজারের মৃত জলিল আহমদের পুত্র জাহেদ হোছন (৩৮) অবস্থান করছিল। পুলিশের এএসআই আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তার গতিবিধি সন্দেজনক হওয়ায় তার দেহ তল্লাশী করা হলে কোমরে লুকিয়ে রাখা একটি বিদেশী রিভলবার,১০রাউন্ড তাজা গুলিসহ ২টি ম্যাগজিনসহ তাকে আটক করা হয়। টেকনাফ মডেল থানার অফির্সাস ইনচার্জ আতাউর রহমান খোন্দকার জানান,অস্ত্রসহ আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এলাকার ভূক্তভোগীরা অস্ত্রসহ আটক দূর্ধষ সন্ত্রাসী জাহেদ রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ইয়াবা বাণিজ্যের নেটওয়ার্কসহ বিবিধ চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য গত ৯ জানুয়ারী রাত সাড়ে ৮টারদিকে হোয়াইক্যং নয়াবাজারের মৃত জলিল আহমদের পুত্র বক্তার আহমদ, জাহেদ হোছন,হোছন আহমদ, দেলোয়ার হোছন ও তাদের ১০/১৫জন সহযোগী এবং মিয়ানমারের নাগাকুরা কুয়ারবিলের কুখ্যাত ডাকাত সর্দার নুর হাশিমের নেতৃত্বে একটি ভারী অস্ত্র উদ্ধারের জন্য পূর্ব মহেশখালী পাড়ার কালা চানেঁর পুত্র মোঃ রফিকের বসত-বাড়িতে ভাংচুর ও হামলা চালিয়ে মোঃ রফিকের স্ত্রী নুর নাহার (২৭), জামাল হোছনের স্ত্রী রমিদা (২৫) এবং মোঃ শফিকের স্ত্রী ছেনুয়ারাকে আহত করে। হামলা চালিয়ে ফিরে যাওয়ার সময় লোকজন জড়ো হলে প্রায় ২০/২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে এলাকায় চরম আতংক সৃষ্টি করে। এসবের প্রতিবাদ করায় স্থানীয় মুদি দোকানদার মৃত মোঃ হোছনের পুত্র সোলতান আহমদ (৪৫) কি জানতে চাওয়ায় তার পুত্র আলমগীর (২২) কে ধরে প্রহার করে। এক পর্যায়ে জবাই করার চেষ্টা করলে পিতা বাঁধা দেওয়ায় পিতা-পুত্র ২জনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে। পরে দোকান ভাংচুর করে। পরে খবর পেয়ে তৎকালীন হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির আইসি ওমর ফারুক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তখন গোপন একটি সুত্র দাবী করে বিগত ৭ জানুয়ারী রাতে কালা চানেঁর পুত্র মোঃ রফিক জলদস্যু চক্রের সঙ্গে নাফনদীতে লুটপাট করতে যায়। এই সুযোগে তাদের একটি ভারী অস্ত্র রফিক জমা না দিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে। বার বার অস্ত্রটি ফেরত না দেওয়ায় এই ধরনের ন্যাক্কানজনক ঘটনা ঘটায়। তৎকালীন স্থানীয় মেম্বার জাহেদ হোছন হামলার সময় ১৭ রাউন্ড গুলি বর্ষণের বিকট শব্দে লোকজন আতংকিত হয়ে পড়ে বলে স্বীকার করেন। স্থানীয় মহিলা মেম্বারের স্বামী আব্দুর রহিম লালু প্রকাশ্যে অস্ত্রবাজির ঘটনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। স্থানীয় চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন গত বারও প্রকাশ্যে অস্ত্রবাজির ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে বিষয়টি জানানোর পরও অবৈধ অস্ত্রধারী একটি রোহিঙ্গা এবং দেশীয় লোকজন মিলে গঠিত সিন্ডিকেট এই অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে। তারা লুটপাটের পাশাপাশি মানুষ ধরে এনে মুক্তিপণ আদায় করে।
ভাগ-বাটোয়ারায় মত-পার্থক্য হলে গুলাগুলির ঘটনা জন-জীবনকে বিষিয়ে তুলছে। দীর্ঘদিন যাবত নয়াবাজার-সাতঘরিয়া পাড়ার কতিপয় চিহ্নিত অপরাধীদের ছত্র-ছায়ায় মিয়ানমারের অপরাধীরা নাফনদীতে লুটপাট চালানোর পাশাপাশি অস্ত্র বাণিজ্য চালিয়ে আসছে। এলাকায় বার বার অস্ত্রের ঝনঝনানি দেখালেও প্রশাসন তাদের দমনে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে ভূক্তভোগীরা জানান।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।