টেকনাফের নাফনদীতে গভীর রাতে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা ডুবিতে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ২৯জন নিখোঁজ রয়েছে। ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছে ৩ নারী উদ্ধার হলেও স্বজনদের লাশের সন্ধানে নাফনদীর পাড়ে স্বজনদের ভিড় বেড়েছে।
জানা যায়-গত ৪ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টারদিকে রইগ্যাদং হতে জাদিমোরা পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশ করানোর জন্য ইসমাঈল,আরফাত.মোঃ সালাম প্রকাশ বলী গুইজ্যাসহ ৪জন নৌকা নিয়ে ৫/৬ পরিবার রোহিঙ্গাদের আনতে যায়। প্রতিজন বাংলা ৫হাজার টাকা করে ৩৫জন রোহিঙ্গা নৌকায় উঠার সময় যাত্রী রেহানা ইসমাঈলকে এত বেশী যাত্রী উঠালে ডুবে যাওয়ার কথা জানালে ইসমাঈল ভয় দেখিয়ে আরো লোক নিতে পারবে বলে সাহস দেয়। নৌকাটি যাত্রা করার আধঘন্টা পর নাফনদীর মাঝপথে আসলে দূঘর্টনার কবলে পড়ে। এতে কে কোথায় গেছে তা জানা যায়নি। তবে জেলেদের সহায়তায় ৫ডিসেম্বর ভোরে এপারে উদ্ধার হওয়া রেহানা,ওপারে রেহেনার ছোট বোন ও অপর এক মহিলা প্রাণে রক্ষা পেলেও অপর ২৯জন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। উদ্ধার হওয়া রেহানা নাফনদীর ওপারে ভাসমান দু‘টি লাশ উদ্ধার হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে বেঁচে যাওয়া মিয়ানমারের বড় গৌজিবিলের মৌলভী মোহাম্মদ আমিনের স্ত্রী রেহানা বেগমের (২৩) জবানবন্দিতে জানায় নৌকা ডুবির পর রাতের অন্ধকারে প্রাণ রক্ষার্থে কিছুক্ষণ সাতরিয়ে একটি গাছের সন্ধান পায়। তা ধরে রাত পার করে ভোর হলে নদী সাতরিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশের সাহস করে কিন্তু ভয়ে পারেনি। কিছু দূরে জেলেদের নৌকা দেখে চিৎকার করে ডাকলে জেলের নৌকা নিকটে আসে। তাকে ভেজা অবস্থায় দেখে জেলেরা কি অবস্থা জানতে চাইলে সে কান্নাকাটি করে নৌদূঘর্টনার কথা খুলে বলেন। মানবিক কারণে হ্নীলা জালিয়াপাড়ার জেলে আশিষ,মন্ত্র ও সুমন রেহেনাকে বাংলাদেশ সীমান্তে নামিয়ে দিলে সে জাদিমোরা নয়াপাড়ার বোন জামাই কবির হোসেনের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এই সংবাদ পেয়ে স্থানীয় নয়াপাড়া বিওপির বিজিবি জওয়ান এবং গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন উদ্ধারকৃত রেহেনার ঘটনাস্থলে ছিল।এই ঘটনার পর সকালে নিখোঁজদের স্বজনেরা লাশের সন্ধানে নাফনদীর পাড়ে ভিড় করছিল। এই ব্যাপারে টেকনাফ টেকনাফ মডেল থানার ওসি আব্দুল মজিদ জানান-কোন সংস্থা বা ব্যক্তি নৌকা ডুবিতে নিহত ও আহতের বিষয়টি জানায়নি। তবে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় মোহাম্মদ আলী মেম্বার লোকজন থেকে নৌকা ডুবিতে উদ্ধার ও মৃত্যুর খবর শুনছেন বলে জানান। স্থানীয় সরকারী একাধিক সুত্র নৌকা ডুবির ঘটনার সত্যতা অবগত হলেও নিখোঁজদের প্রকৃত সংখ্যা কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি।
স্থানীয় সাংবাদিকেরা তার নিকট জানতে চাইলে সে নৌকা ডুবির হৃদয় বিদারক ঘটনার বর্ণনা করে আরো বলেন তার পরিবারে ৬জনের মধ্যে এপার আর ওপারে দুইবোন প্রাণে বাঁচলেও মা বলকিছ,ভাবী মনিরা বেগম,ভাইপো মোঃ সোয়াইব (৮) ও নুর আয়েশা (৬)নিখোঁজ ছিল। সকালে স্বজনদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে মা বলকিছ,সোয়াইব ও নুর আয়েশার লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রাণে বেঁচে যাওয়া রেহেনা।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।