করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দূরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ করেছে সরকার। তবে রাজধানীর গাবতলী থেকে ঢাকা-পাটুরিয়া মহাসড়কে মাইক্রোবাস, ছোট পিকআপ ভ্যান ও ট্রাকে যাত্রীদের গ্রামের বাড়িতে যেতে দেখা গেছে।
সোমবার (১০ মে) রাতে গাবতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বেশ কয়েকটি পিকআপ ভ্যান ও ট্রাকে করে যাত্রীদের যাত্রা করতে দেখা যায়।
রাতে সরেজমিনে গাবতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ট্রাকে অভিনব কায়দায় নেওয়া হচ্ছে যাত্রী।
পুরো ট্রাক ত্রিপল দিয়ে ঢাকা। বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই ভেতরে পণ্য নয়, বরং মানুষ রয়েছে।
ট্রাকের সামনের দিক থেকে একজন একজন করে যাত্রী তুলে তাদের নিয়ে নেওয়া হচ্ছে ত্রিপলের ভেতর। এভাবে গাবতলী থেকে পাটুরিয়া ফেরিঘাট পর্যন্ত যাত্রীভেদে দরকষাকষি করে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩০০-৫০০ টাকা।
এছাড়া গাবতলী বাসস্ট্যান্ডের সামনে যাত্রীরূপে গিয়ে দাঁড়ালেই আসছেন অনেকেই। তারা জিজ্ঞাসা করছেন- কোথায় যাবেন? বিশেষত বাসের পরিবর্তক হিসেবে মাইক্রোবাস এবং প্রাইভেটকারের মাধ্যমেই নেওয়া হচ্ছে এসব যাত্রী। পাটুরিয়া পর্যন্ত ভাড়া ৫০০-৬০০ টাকা।
ট্রাক, পিকাপ, মাইক্রোবাস বা প্রাইভেটকার ছাড়াও পরিবহন হিসেবে এই রুটে চলাচল করছে মোটরসাইকেল এবং সিএনজি। গাবতলী বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা যায়, এই এলাকায় ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল এবং সিএনজির সংখ্যাও কম নয়। তবে এই মাধ্যমে ভাড়া একটু বেশি। জনপ্রতি ৮০০-১২০০ টাকা। এছাড়া রাতে লোকাল বাসে করেও এই রুটে যাত্রী পরিবহনের চিত্র দেখা যায়। গাবতলী থেকে পাটুরিয়া পর্যন্ত লোকাল বাসে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা।
কয়েকজন চায়ের দোকানদার বাংলানিউজকে জানান, দূরপাল্লার বাস বন্ধ। তবে কয়েকটি লোকাল পরিবহনে পাটুরিয়া পর্যন্ত যাওয়ার ব্যবস্থা আছে। এই গাড়িগুলো সবসময় ছাড়ে না। রাতে যাত্রী হলে তখন যায়।
জাহাঙ্গীর আলম নামের এক যাত্রী বাংলানিউজকে বলেন, কারখানা বন্ধ। ঢাকাতে থাকলে অনেক খরচ। এই খরচ কে দেবে? এমনিতেই লকডাউনের কারণে উপার্জন নেই। উপায় না থাকায় বাড়ি যাচ্ছি।
গাবতলীতে একাধিক পরিবহন শ্রমিক জানান, দূরপাল্লার বাস চলছে না। তবে যাত্রীদের চাপ অনেক। যে যেভাবে পারছে, একটা ব্যবস্থা করে রওনা দিচ্ছেন গ্রামের উদ্দেশে। আর এখন মূলত মাইক্রোবাস আর প্রাইভেটকারই বেশি চলছে।
গাবতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কর্তব্যরত বিভিন্ন ট্রাফিক পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পারাপার নিষেধ। এ কারণে বেশ কয়েকটি পিকআপ ভ্যান ও ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া দূরপাল্লায় যাত্রী চলাচল বন্ধ করা ছাড়াও ট্রাফিক পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মীরা করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বলেও জানান তারা।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।